চোখের বালাই কিছু সবে নাই,— ঘুচে যায় দুরে কাছে, নিশার মশারি-তলে ভাবি প্রিয়া মোরই পাশে শুয়ে আছে । পায়ের তলায় দোল দিয়ে ষায় চিরপরিচিত ঢেউ, থমৃথমে রাত, লুকায়ে কোথাও দেখিবার নাহি কেউ ; ফিসফিস ক’রে সেই ফঁাকে তারে ব’লে নিই যত কথা, দিনে বড় বাধা—রাতের অাধারে জানাই প্রাণের ব্যথা । মাছের আওয়াজে মোহ ভেঙে যায়, চোখ মেলে দেখি চেয়ে,— কোলের নদীটি কালেরই মতন চুপি চুপি চলে বেয়ে ; গাঙ-চিলেদের কলরব উঠে ওপারের ঝাউ বনে, বাশের মাচায় রাত কেটে যায় তজায়-জাগরণে । উষা-বধু আসি সোনার ঝাটায় করে সংমার্জনা গগনাঙ্গনে জমে-উঠা কালো— রাতের আবর্জনা ; ফুটে উঠে যত পরিচিত রূপ— নদী, নদীপরপার, তারি সাথে সেই চিরমোহময়ী মুক্টিটি কামনার ! তরীখানি মোর নদী কোলে-কোলে বৃথায় ঘুরিয়া মরে, ছোট বুকে তার ঠাই হওরা ভার, ছজন নাহিক ধরে ; চির-নিরুপায় এক বাহি তাই একক প্রাণের বোঝা— লবণসাগরে এ যেন হয়েছে তৃষ্ণার বারি খোজা ! তাই যদি হয়, মনে ভাবি, আরও উজানে বাধিব খঞ্জ, নদীমুখে তারে তৰু ত জানাতে পারিব এ অন্তর ; যতদিন এই খরবেগখানি বহিবে নদীর জলে, ভাটিয়ালী স্বর ধ্বনিৰে বিধুর পারের অতলতলে ।
পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।