পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মলন্তন ফুলের আলোচন। আর পাত্র ভরিয়৷ ফুল সঞ্চয়,—এই কাজ । বলেন-নন্দনকানন সম্বন্ধে যা শোনা যায়, তা কতকটা এই রকম হবে ; কি বলেন ইয়েবাবু ?--- তাহার জন্য একটি সাজি কিনিয়াছি; সেইটিই পূর্ণ করিয়া ফুল দি ৷ সাজি ভরিয়া ফুল দিয়া মনে হয়—এ পুজা—উ{হার অন্তরের মন্দিরে যে সৌন্দর্ঘ্যের দেবতা আছেন তাহাকে অর্ঘ্য দিতেছি। দেবতার সংস্পর্শে আমার বাগানের শ্ৰীবৃদ্ধিও হইয়াছে। কোথায় ইঞ্জিনিয়ারের বাগান, কোথায় কমিশনার সাহেবের গ্রীনহাউস-এইসব দুষ্প্রবিগু স্থান হইতে কতকগুলি নিডাস্ত দুষ্প্রাপ্য আর দামী ফুল আমার বাগানে আসিয়া পন্থছিয়াছে ; বেশীর ভাগই গৌরীকান্তবাবুর চেষ্টায় । সে-সবের মধ্যে একটি আছে নীলপদ্ম । কাশ্মীর ষ্টেটুগার্ডনস্ থেকে আমদানি করা,—ভূস্বর্গের পারিজাত। বাগানের মাঝখানে ওরই জন্ত একটি ইউজ হইবে স্থির হুইয়াছে—মাঝখানে থাকিবে একটি ঝরণা। বলি,—এত কষ্ট ক’রে জোগাড় ক’রে সব আমায়ই দিয়ে দিচ্ছেন ; কিছু তো আপনিও রাখলে পারেন। বিমৰ্ষভাবে কপাল স্পর্শ করিয়া বলেন,—সে অদৃষ্ট করিনি ইয়েবাবু, তাহলে আর ভাবনা কি। হাজির হ’তে দেরি হবে না, গিল্পী সঙ্গে সঙ্গে টান মেবে ফেলে দেবেন। কী ষে আক্রোশ, দেখেন নি ডে1!--•সে পক্ষের সঙ্গে কিছুই মেলে না, মেলে শুধু এইখানটায় । রহস্ত এইখানেই শেষ নয়। আরও আছে। অাজকাল আমাদের দুটি বাড়ির স্ত্রীমহলেও ঘনিষ্ঠত হইয়াছে, আমার স্ত্রী প্রায়ই যান। ফিরিয়া আসিয়া রোজই বলেন, —আচ্ছা, এই ষে ঠাকুরপুজার ভাগ থেকে কেটে কেটে নিত্যি সাজি-ভরা ফুল পাঠাও, কই, বাড়িতে তো কোথাও এবটা পাপড়িও দেখতে পাই না। বলি,—তুমি বোধ হয় খোজ কর না। উত্তর হয়,-ওম, অবাক করলে যে ! বলে গোয়েন্দাগিরি করতেই আজকাল আমার যাওয়া। আর ফুল কি শুধু দেখতে হবে । যা ফুল যায় তাতে সারা বাড়িট গম্‌ গম্‌ করবে না ? কি ষে বল । বলি–ছ-বেলা টাটকা ফুল যাচ্চে, তাই বালী হবা মাত্রই মধুলিড়, \ყ8© নিশ্চয় ফেলে দেন। তুমি যাও তো সেই তিনটে-চারটের সময়, তখন বোধ হয় তাই আর দেখতে পাও না। তাহাও নয় ; কেন-না, আমার গোয়েন্দাটি দু-দিন পরে আসিয়া খবর দিলেন,—আজ ওৎ পেতে ছিলাম, কৰ্ত্তা আপিলে বেরিয়ে ধেতেই হাজির হয়েছি—ঠিক এগারটা দশ। ফুলের বিন্দুবিসর্গ নেই। সাভটা আটটার সময় তোলা ফুল দশটা এগারটার সময় বাসী মনে করে এমন পুপ-বিলাসও আছে না-কি ? বলিলাম,—ওঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞাপ! ক’রে দেখলে তো পার । —সেও হয়ে গেছে। জিজ্ঞাসা করলেই কথা উন্টে নেয়, মুখটা একটু গম্ভীর হয়ে পড়ে, তার ওপর খুঁচিয়ে জিজ্ঞাসা করা চলে না।--•এমনি তো বেশ আমুদ্ধে মামুষটি। একটু হতবুদ্ধি হইয়া রহিলাম। তাহার পর একটা 'কথা মনে উদয় হইল, বলিলাম,—হয়েচে গো, নিশ্চয় পূজোটুজো করেন ; কথাটা আমাদের কাছ থেকে গোপন••• স্ত্রী গম্ভীর হইয়া বলিলেন,—স্বামী পুণ্ডে আ ক্ষা করলে নিষ্ঠাবান হ’লে হিন্দুর মেয়ের লজ্জিত হবার তো কথাই। বরং নাস্তিক, অনাচারী হ’লে - 4-> মাথা চুলকাইতে চুলকাইতে কথাটা পাণ্টাইয়া লইতে যাইতেছিলাম, স্ত্রী বলিলেন—আমি যা ভেবে ঠিক করেচি শুনবে ? আমি আগ্রহভরে বলিয়া উঠিলাম,—“বল না।” মনে ঠিক আছে যভই সম্ভবপর আন্দাজ হোকু না কেন একটা খুৎ বাহির করিয়া আক্রোশ মিটাইবই,–টাটুক-টাটুকি । স্ত্রী বলিলেন,—আমার মনে হচ্চে সাহেব-টাহেবের বাড়ি ভেট পাঠায় । অসম্ভব নয়। আমি কিন্তু তাচ্ছিল্যের সহিত হাসিয়া বলিলাম,—আরে দ্বং, রোজ রোজ-•• তিনি সহজ দৃঢ়তার সহিত বলিয়া চলিলেন—ন। হ’লে সাহেবের কাছে অত খাতির আছে শোনা যায়—সে কি ক'রে হয় ; মাইনেও বেড়েচে এর মধ্যে বলছিলে । ফুল দিয়ে খোসামোদ করবার ফল নিশ্চয়।