পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুন্দরবন কি কখন জনপদ ছিল ? ঐশৈলেন্দ্রনাথ ঘোষ "আদিগঙ্গা’ নামে কালীঘাটে প্রবাহিত ক্ষীণ জলধারাই প্রাচীন ভাগীরথীর প্রধান শাখা ও প্রবাহ। কালীঘাটের পশ্চিম দিক দিয়ে ক্রমশ দক্ষিণে বৈষ্ণবঘাট রাজপুর কোদালিয়া মালঞ্চ মাইনগর বারুইপুর স্বৰ্য্যপুর মুলট হাসগেড়িয়া জলঘাট ছত্রভোগ খাড়ী প্রভৃতি গ্রামের পাশ দিয়ে গঙ্গার গতি ছিল । ধনপতি শ্রমস্ত চাদসাগরের বাণিজ্যযাত্র-প্রসঙ্গে ভাগীরথী-তীরের দুই পাশে জনপদের উল্লেখ আছে। খ্ৰীষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দীতে চৈতন্যদেব জাহ্নবীর তীরে তীরে অাটিসারা গ্রাম থেকে নীলাচল যাবার জন্ত ছত্রভোগে এসেছিলেন । গঙ্গা তীরে ভীরে চারিঞ্জন সাথে নীলাজি চলিল প্ৰভু ছত্রভোগ পথে । --মধ্যপ্লীলা, ৩য় পরিচ্ছেদ । রায়মঙ্গল কাব্যে দক্ষিণ দিক থেকে প্রবাহের উল্লেখ আছে । মারি সারি জুড়ি জুড়ি কাকদ্বীপ গঞ্জঘড়ি _ ছাড়াইল বণিকেপ্ল লোক ! টায়াখোল পাছু আন গঙ্গ। ধারায় করি স্নান উপনীত হুইল ছত্রভোগ । বাদ্য বাক্তে স্বমধুর বাহির রাজা বিষ্ণুপুর জয়নগর করিল পশ্চাৎ । সঘনে দামামা পণি গুণি রায় গুণমণি বহড় ক্ষেত্র বহিল আনন্দে ॥ বারাসাতে উপনীত হইয়৷ সাধু হরধিত পুজিল ঠাকুর সদানন্দে। বাছিল মুলটি ছাড়ি চালাইল সপ্ততরী থলটি করিল পাছু আন ॥ সাধুঘাট পিছে করি স্বৰ্য্যপুর বাছি তরী চাপাইলা বারুইপুরে জাসি। মালঞ্চ রহিল দূত্র বাহির কল্যাণপুর কল্যাণ-মাধবে প্ৰণামিল । বহিলেক যতগ্রাম কি কাজ করিয়া নাম বড়দহ বাটে উপ্তরিল। এই বড়দহ কোদালিয়া গ্রামের ঈষৎ পশ্চিমে, বর্তমানে বড়দা নামে পরিচিত । এখানকার মজা গঙ্গার গর্তে বহুদিন থেকে চাষ-আবাদের কাজ চলে আসছে । শোনা যায়, এই বড়দায় লাঙলের ফলায় বহুবার নৌকার কাঠ নোঙ্গর প্রভৃতি পাওয়া গিয়েছে । ভারতের সার্ভেয়ার-জেনারেল কত্ত্বক প্রকাশিত ১৯২৫ সালের 79so Ro Niafson Old Steeplechase Course বা আদি গঙ্গানালা নামে থ’ল ধারুইপুর পূখ্যম্ভ পাওয়া যায়, এবং দক্ষিণে খাড়ীর কাছে বকুলতলা নামক মানচিত্র-চিহ্নিত স্থানে ‘চোরা গঙ্গাধারা খাল’ নামে জলরেখা দেখা ধায় । গঙ্গা 'শতমুখী নামে এইখানেই বহুভাগে বিভক্ত হয়ে পরে সাগরে মিলিত হয়েছেন । পুরাতন গঙ্গার এই দুটিমাত্র জলরেখা ছাড়া আর কোন চিহ্ন বর্তমান নেই, মধ্যে মধ্যে কতকগুলি লম্বী আকারের পুকুর দেখা যায়। এই পুকুরগুলি একটা রেখায় যোগ করলে মানচিত্রে উক্ত "আদিগঙ্গা নালা’ ‘চোরা গঙ্গাধারা খালে’র সঙ্গে এক হয়ে যায় । পুকুরগুলি অধিকারীদের উপাধি অনুযায়ী ঘোষের গঙ্গা, বোসের গঙ্গা, চক্ৰবৰ্ত্তীর গঙ্গা প্রভৃতি নামে প্রচলিত। চব্বিশ-পরগণার এই গঙ্গাকূলবৰ্ত্তী গ্রামে গ্রামে প্রচলিত আছে যে, এখনও এই-সব গঙ্গায় স্বান করলে গঙ্গাস্বানের পুণ্য লাভ হয় । মহাভারতে পাওয়া যায় গঙ্গাসাগরসঙ্গম তীর্থ ভারতের সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ ও প্রাচীনতম হিন্দুতীর্থ ছিল। কথিত আছে, পৃথিবীর সর্বজাতি-সম্মেলন এই সঙ্গমতীর্থ উপলক্ষ্যে অঙ্গুষ্ঠিত হ’ত । গঙ্গাই তখন সমগ্র ভারতের এই তীর্থে আসার একমাত্র পথ ছিল । এই সাগরদ্বীপ স্বন্দরবনেরই ংশ । শোনা যায়, সাগরের মেলায় এসে রাজা ও সন্ন্যাসীরা সাধ্যমত মন্দির স্তম্ভ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠা করতেন। থাড়ীর সন্নিকটবর্তী প্রাণকৃষ্ণপুর গ্রামে তিন দিন ব্যাপী এক বিরাট মেলা হয়। সেখানে গঙ্গাচক্রঘাটা