পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফান্তন খেলাঘর وت و اوقا করিতে পারে নাই, নহিলে ৰোধ করি সকলেই একটি করিয়া লঠন সঙ্গে করিয়া আনিত । পৰে নামিয়া রামাই ফিস-ফিস করিয়া কহিল, "বুড়োর কথাগুলি কি বিশ্বেস করলে না কি বাবাজি,—সব ডাহা মিখ্যে কথা ! ওই মাছলি বেচেই খায় কি না—আর ওই ওর ভাইঝিটার কথাও বলতে যাচ্ছিল বাবাজি, আমি খামিফুে দিলাম। বলি, দশটা দিনও পেরুতে দে, নইলে যে তেীকও এসে ধরবে রে বুড়ে । ম্বের অসংলগ্ন কথায় বীরেন এই দুঃসহ দুঃখের মধ্যেও অজ্ঞাতসারে হাসিয়া ফেলিল। কহিল, “কিন্তু তুমিc-যেন বেশ বিশ্বেস করেছ বলে মনে হচ্চে ।” রামাই কাষ্ঠহাসি হাসিয়া কথাটাকে চাপা দিবার জন্য বলিয়া উঠিল, “তা নয়, তা নয়, বাবাজি, তুমিও আমাকে তাই মনে করো নাকি ?” —তোমার বাড়ি এসে পড়লো রামাই-দ, তুমি যাও। কাল সকালে পার ত একবার যেও । আমার সঙ্গে অতটা গিয়ে এই শীতের রাতে আবার ফিরতে তোমার কষ্ট হবে। রামাই তা-না-না করিয়া বাড়িতে ঢুকিয়া কহিল, ‘হ্যা, তুমি নিশ্চিত হয়ে থেকে বাবাজি, ফর্ব-টর্থ আমি গিয়েই ঠিক করবো”খন।’ আলপথের পাশেই ছোট একটি বাক পায়ে-চলা পথ। বীরেন আপন মনেই চলিতে লাগিল। দিগন্তবিস্তারী ঐ বন্ধুর প্রান্তরটিকে একট ঘন অন্ধকার যেন সাপিনীর মত বেষ্টন করিয়া ধরিয়াছে । অগণিত নক্ষত্রমালার সামান্ত আলোকে রবিশস্যের ছোট ছোট চারাগুলি কঁাপিতেছে, দূরের ষ্টেশন হইতে এইমাত্র একটি ট্রেনের বঁাশীর আওয়াজ শোনা গেল । বীরেনের মনে তখন প্রশ্নের সমুদ্র ছুটিয়া চলিয়াছে। মানুষের জীবন লইয়া এত ছিনিমিনি মানুষ ছাড়া আর কে করিয়াছে ? মাজুষের দেহের জীর্ণ মন্দিরে অস্তরের দেবতা ষে কথন পাষাণে পরিণত হইয়াছে, তাহা সে কি নিজেই জানে ? বীরেনের মনে পড়িল-“চুড়ি বেচিয় চন্দনকাঠের ইতিহাস, সেই নিষ্ঠুর বর্বরতা,—আঙল ছিড়িয়া আংটি-••আর ভয় দেখাইবার প্রচেষ্টা করিয়া মাছুলির দাম, কন্যাদায়,--ভোজনের বীভৎস লোলুপতা ! সারাজীবন ধরিয়া শিক্ষা ইহারা পায় নাই, কিন্তু শুধু কি তাহারই জন্ত ? কিন্তু বীরেন ভাবিতে লাগিল, সভ্যতাহীন সেই আদিমতম বন্ধতম যুগেও কি এতটা অন্যায়ের কথা কেহ কল্পনাও করিতে পারিভ ! অপরাধের সম্বন্ধে কোনো চেতন-বোধও ইহাদের নাই । ইহাদের खछ प्राप्लौ cक ? বীরেনের সাড়া পাইয়া পিসিম আসিয় দাড়াইলেন— ‘ভেবে ভেবে সারা হচ্চি বাবা, এডট দেরি করতে হয় ? —আমার স্কটকেশটাতে জামা কাপড় আর থানকতক বই—ওই টেবিলের ওপর ধী আছে—তা-ই দিয়ে গুছিয়ে দাও ত পিসিমা ! -সে কিরে, কোথায় চললি হঠাৎ -এসময়— —এখানে আর ভাল লাগছে না পিসিমা ! আধ ঘণ্টার মধ্যেই বীরেন প্রস্তুত হইয়া নীচে নামিয়া জাগিল। পিসিম আচলে অশ্র মুছিয়া এইবার শেষ চেষ্টা করিলেন । নিজের পিসিমা হ’লে তাকে কি এ রকমভাবে ফেলে যেতে পারতিস রে ? উদগত অশ্রু গোপন করিয়া বীরেন কহিল, তোমার ঋণ পরিশোধ করবার কথা যেন ভুলেও কোনদিন মনে না করি, আজ তুমি জামায় সেই আশীৰ্ব্বাদই করে। পিসিমা । যদি কোনো দিন ফিরি ত সে তোমার কথা মনে করেই ফিরবে। । পিসিমা একটি মহিমান্বিতা বেদনাময়ীর মত দুয়ার ধরিয়৷ দাড়াইয়া রহিলেন । স্কটকেশটি হাতে লইয়। বীরেন তাহাকে একটি প্রণাম করিল। তারপর ধীরে ধীরে পথে নামিয়া সোজাপথে বহুদূর পর্য্যন্ত জোরে জোরে চলিতে আরম্ভ করিল। মোড় ফিরিবার সময় একবার পিছনে চাহিয়া দেখিল, শাদ কাপড়ে ঢাকা সেই নিম্পঞ্জ মর্শ্বর-ছবি তখন প্রায় অস্পষ্ট হইয়া আসিয়াছে !