পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফাতিন বাংলায় কাপাস উৎপাদানের প্রয়োজনীয়ভ। JNుస్తా পতিত জমির অৰ্দ্ধেক পরিমাণ অর্থাৎ ২৯,৫৬,৬১৯ একর জমি কাপাস উৎপাদনে লগাই তাহা হইলে ঐ তুলার দ্বারা আমরা বাংলার পাচ কোট নর-নারীর বস্ত্র-সমস্তার মীমাংসা করিতে পারিব । কারণ পচিশ বৎসরের গড় হিসাব পরীক্ষা করিলে দেখা যায় যে, লোকপ্রতি ৮.৮১ গজ হইতে ১৬.৮ গজ কাপড় ব্যবহৃত হইয়াছে। গড়ে ধরিলে বলা যাইতে পারে এ-দেশে প্রত্যেক লোক বৎসরে ১২re গজ কাপড় ব্যবহার করে। পাচ কোটী লোক প্রত্যেকে ১২৫ গজ কাপড় কিনিলে বাংলায় প্রতি বৎসর ৬২৫ কোটা গজ কাপড় দরকার হইবে । একর-প্রতি এখন গড়ে ৮২ পাউণ্ড ভূগা পাওয়া ধায় অর্থাৎ এক মণেরই কাছাকাছি। যদিও প্রতি একরে ৮২ পাউণ্ড তুলার ফলন নিকৃষ্ট ফলন তথাপি আমরা খুব কম পক্ষেই হিসাব করিয়৷ দেখাইভেছি যে, আমরা ঐ পরিমাণ পতিত জমি হইতে ২৯,৫৬,৬১৯ মণ তুলা বৎসরে পাইতে পারি। প্রতি মণ তুলায় খুব কম পক্ষে ৩০০ গজ কাপড় হইবে ধরিলে বৎসরে আমরা ঐ তুলা হইতে ৮৮,৬৯,৮৫,৭০০ গজ কাপড় উৎপন্ন করিতে পারি। তুলার ফলনের বেলায় আমরা তাহার নিকৃষ্ট ফলন ধরিলাম এবং কাপড়ের বেলায় আমরা বেশীর দিকটাই ধরিয়া দেখাইতেছি যে, বাংলার জমিতে বাংলার আবঙ্গকের বেশী ভূলা জন্মাইবার পক্ষে কোন বাধা নাই। এখন দেখা যাউক তুলার ফলন আমরা কিরূপ আশা করিতে পারি, এবং কোন জাতীয় ভুল লইয়া এখনই কাৰ্য্যারম্ভ করিতে পারি। বাংলার নিজস্ব তুলার অভাব নাই। yনৃত্যগোপাল মুখোপাধ্যায় তাহার Hand-book of Indian Agriculture atos o osota on সম্বন্ধে লিখিয়াছেন – “On the whole, Burhi seeins to be the best to grow in Bengal the cotton though persistent attempt should be made to grow the superior tree cotton” বুড়ী কার্পাসের ফলন সম্বন্ধে লিখিয়াছেন, 'Buthi and Nausari variety often yield as much as 400 lbs. of lint per acre.” কাজেই বাংলার বুড়ী কাপাস হইতে আমরা খুব কমপক্ষে বিধ-প্রতি এক মণ তুলা আশা করিতে পারি। এক মণ তুলার দাম কুড়ি-পচিশ টাকা ও দুই মণ বীজের দাম চার-পাচ টাকা একুনে পচিশ-ত্রিশ টাকা বিঘা প্রতি আয় দাড়াইতে পারে । এ ছাড়া তুলার নীচে চীনাবাদামের চাষ করিয়া আমরা তুলার সারের খরচ উঠাইয়া লইতে পারি। বাংলার উচ্চ জমিতে বর্ষাকালে পাট, আউস ধান প্রধান ফসল। বাংলার জমিতে বিঘা-পিছু পাট পাচ-ছয় ম৭ ফলে, উহার দাম বিশ-পচিশ টাক, আউল ধানও ঐরূপ ফলে, কাজেই তুলা জন্মাইয় আমরা লোকসান দিব না। তাহ-ছাড়া বুড়ী কাপাসের দর ক্যাম্বোডিয়ান কটনের অপেক্ষা কম হুইবে না, কারণ বুড়ী কাপাস উৎকৃষ্ট কাপাস। ক্যাম্বোডিয়ান কাপাসের দর পচিশ-ত্রিশ টাকা। পাটের বাজার এত মন্দা যে পাঠ চাষ আমাদের কমাইতেই হইবে। কাজেই পাটের বদলে ইক্ষু, চীনাবাদাম, ধান্ত, তুলা জন্মাইতে আমাদের কোন বাধা নাই। তাহা ছাড়া বদ্ধমান, বীরভূম, মানভূম, বাকুড়া মেদিনীপুর জেলায় এমন সব পতিত জমি আছে যাহাতে জলাভাবে এ ধ্যস্ত কোন ফসলই জন্মে না। এই-সব পতিত জমির পরিমাণ হাজার হাজার বিধা: এ জমি-T গুলিতে তুলা, চীনাবাদাম জন্মাইয়। সকপেষ্ট লাভবান হইতে পারেন । ৮মৃত্যগোপাল মুখোপাধ্যায়ের স্বপিরিয়র টি কটনের সম্বন্ধে আমি নিজের অভিজ্ঞতা হইতে কিছু বলিতে পারি। এই টি, কটনের মধ্যে দেবকাপাস, ঢাকাই কাপাস ও বুড়ী কাপাস প্রসিদ্ধ। এই গাছগুলি খুব বড় হুইয়। দশপনর বৎসর বাচিয়া থাকে । ইহার মধ্যে বুড়া কাপাস সকলের অপেক্ষা ভাল। এই কাপাস যেন বাংলার অধঃসস্তুত সম্পদ। এই বুড়া কাপাসই বিনা জল-সেচনে দশপনর বৎসর পর্য্যস্ত অপৰ্য্যাপ্ত পরিমাণে ভুল প্রদান করে। বুড়ী কার্পাসের (বৃক্ষজাতীয় ও গুল্মজাতীয় ) চাৰ্যই সৰ্ব্বপ্রথমে বাংলায় প্রবর্তন করা বিধেয় । বৃক্ষজাতীয় বুড়ী কাপাস সম্বন্ধে অনেকের আপত্তি এই যে, এই কাপাস গাছ প্রথম দুই-তিন বৎসর কোনরূপ ফল প্রদান করে না।