পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

♥ጓ● {s & কিন্তু প্রথম বৎসরে ক্ষেত্রে গুল্মজাতীয় বুড়ী অথবা শ্রেষ্ঠ জাতীয় কোন কার্পাসের চাষ করিয়া সেই জমিতেই ছয় ফুট অস্তুর বৃক্ষজাতীয় বুড়ী কার্পাসের বীজ বপন করিলে উপরি উক্ত অস্থবিধা দূর হইতে পারে। কারণ গুল্মজাতীয় কাপাস (যেমন—আমেরিকান, ধারওয়ার বা ঈজিপসীয়ান) তিন বৎসর বাচিয়া থাকে। কাজেক্ট প্রথম তিন বৎসরে গুল্মজাতীয় কার্পাস হইতে লাভবান হইতে পারি। ইতিমধ্যে বুড়ী কাপাস ক্ষেত্রে স্থায়িভাবে রহিয়া গেল। তিন বৎসর পরে গুল্মজাতীয় কার্পাস উঠাইয়া ফেলিলে আমি স্থায়িভাবে বুড়ী কার্পাসের ক্ষেত্র প্রস্তুত করিতে পারিলাম, অথচ প্রথম তিন বৎসর আমাকে বসিয়া থাকিতে হইল না। জলাভাবে উক্ত জেলাস্থ যে প্রান্তরগুলি আজ পর্য্যস্ত বন্ধাবস্থায় পডিয়া আছে সেগুলিতে আমরা এইরূপ বুড়ী কাপাস জন্মাইয়া লাভবান হইতে পারি। বুড়ী কার্পাসের সঙ্গে যদি চীনাবাদামের চাষ করা যায় তাহা হক্টলে জমিতে সারও দিতে হুইবে না, উপরন্তু আর একটি ফসলও পাইতে পারি। চীনাবাদামের চাষ করিলে প্রতি বৎসর বুড়ী কার্পাসের একবার ডাল ছাটিয় দেওয়া ছাড়া আর কোন পাইটের আবশ্যক করিবে না। চীনাবাদাম চাষের জন্ত মাটি ওলটপালট হইলেই বুড়ী কার্পাসের পাইট হইয়। গেল। ইহা ছাড়া শ্রেষ্ঠ গুল্মজাতীয় (যেমন—ঈজিপসীয়ান, আমেরিকান বা সি-আইল্যাণ্ড) কার্পাসের গুণ যদি বুড়ী কার্পাসে সংক্রামিত করিতে পারা যায় তাহা হইলে অতি অল্পপরিশ্রম ও অল্প পরচে আমরা শ্রেষ্ঠজাতীয় কাপাস উৎপন্ন করিতে পারিব । কারণ বিদেশীয় উক্ত প্রকারের কপিাসের আঁশ বুড়ী কাপাসের অপেক্ষা দীর্ঘতর। বিদেশীয় কাপাস এখানকার জলহাওয়ায় খারাপ হইয়া যায়, সেই হেতু উহাদের লইয়া শঙ্কর জাতি উৎপন্ন করাই আমাদের একমাত্র পন্থা। এই উপায়ে আমরা পৃথিবীর নী ; S99శు শ্ৰেষ্ঠ জাতীয় কার্পাসের সমকক্ষ কার্পাস উৎপন্ন করিয়া প্রতিযোগিতায় টিকিতে পারি । মোট কথা বঙ্গীয় কাপাস সমিতি প্রথমে গুটকতক আদর্শ কাপাস কৃষিক্ষেত্র স্থাপন করুন, এবং ঐ সব প্রতিষ্ঠানে স্থানীয় বেকার যুবকদিগকে কাপাস-চাষ শিক্ষা দিন। এই সব যুবকই পরে গ্রামে সমবায় সমিতি গঠন করিয়া কাপাস উৎপন্ন করিতে থাকুন। এই সব যুবকদিগকে লইয়া গ্রামে গ্রামে প্রচার চলুক। বঙ্গীয় কাপাস সমিতি তুলা চাষ প্রবর্তন করিবার জন্য এই-সব যুবকদিগকে লইয়া গ্রামে গ্রামে সভা-সমিতির দ্বারা আদর্শ কৃষিক্ষেত্রের ফলাফল প্রচার করুন, উত্তমজাতীয় বীজ নামমাত্র মূল্যে বিতরণ করুন, চাষ-পদ্ধতি কাগজে প্রকাশ করুন। সঙ্গে সঙ্গে বেকার যুবকদিগের দ্বারা সমবায় কাপাস কৃষিক্ষেত্র দেশের মধ্যে গড়িয়া উঠুক, তাহা হইলেই সাধারণ লোক এই চাষে ভরসা পাইবে । সমিতির যদি অর্থ সংকুলান হয় তাহা হইলে সাধারণ কৃষকদের মধ্যেও সমবায় সমিতির প্রতিষ্ঠা করিতে পারেন । উপসংহারে লেখকের বক্তব্য এইটুকু যে, বাংল দেশে বাঙালীর কাপড়ের মিল যখন হইতেছে তখন কাপাস বা না-হইবে কেন ? আমাদের দেশে অসংখা পতিত জমি থাকা সত্ত্বেও এবং ভূল চাষে লোকসান না থাকা সত্বেও কেন আমরা আমাদের দেশের অর্থসম্পদ অন্য দেশে মিছামিছি চালান দিব । আমর! যদি বাংলার সমস্ত কাপড়ের চাহিদা মিটাইতে চাই, তাহ। হইলে বাংলা হইতে শুধু তুলার জন্য সাত-আট কোট টাকা প্রতি বৎসরে বাহির হইয়া যাইবে । ইহা সামান্য কথা নহে। তাই বাঙালীকে আমার একান্ত অনুরোধ র্তাহার কাপাস উৎপাদনে তৎপর হউন । বাংলার অর্থ-সম্পদ বাড়ান। অল্পহীনের অল্পের সংস্থান করুন।