পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মলন্তন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসেন wmvዊ করিত, এখন পড়া-লেখা করে। পাঠশালার গুরুমহাশয়ের শিয্যের হাতের লেখায় অমনোযোগী হইয়াছেন। মেটিক-পাশ দূরে থাক, বি-এ পাশের কার্ধ লেখা দেখিলে আশ্চর্ষ হইতে হয়। অনেকে কতকগুলি যুক্তাক্ষরের রূপও জানে না। হয়ত টাইপার চায়। রেমিংটন কোম্পানী বাঙ্গালা টাইপার করিয়াছেন, কিন্তু দাম ৪০০ টাকা ! আমার জানায়, তিন জন উৎসাহী ভদ্রলোক টাইপার উদভাবনা করিতেছিলেন। শেষফল শুনি নাই। ক অক্ষরে দুইটি সঙ্কেত আছে। ইহাতে অ-স্বর নিত্য বর্তমান। কিন্তু অন্ত স্বর যোগের কালে অকার লুপ্ত হয়। এই সঙ্কেত দ্বারা শ্রমলাখব যে কত হইয়াছে, তাহ বলিবার নয়। কিন্তু ভাঙ্গা লেখায় হস্-চিহ্ন-অনিবাধ । নিপুণ শিল্পী কিছু অর্থ পাইলে বাঙ্গালা টাইপার করিয়া দিতে পারেন । বেগম রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসেন বেগম শামসুন নাহার মাহমুদ, বি-এ বেগম রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসেন সম্পর্কে দু-কথা বলতে হবে, কিন্তু বলবার কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। বলতে গেলে বহু কথা আছে,—কতদিনের কত তুচ্ছ কথা, कडू খুঁটিনাটি স্মৃতি আজ মনের মধ্যে ভিড় করে আসছে, কিন্তু গুছিয়ে বলবার আঙ্গ সামর্থ্য নাই। শুধু আমাদের কেন, বাংলার গোট মুসলীম নারীসমাজের হৃদয়ের স্পন্দন আজ থেমে গেছে—বাংলার মুসলমান পুরুষ নারী সকলেই वांछ वल्लांश्ङ । রক্তের বন্ধন যে সবচেয়ে বড় কথা নয়, হৃদয়ের যোগ যে তার চেয়ে কত বড় জিনিষ এ-কথা আজ প্রথম ভাল ক’রে উপলব্ধি করলাম। রক্তের সম্পর্ক, দেহের সম্পর্ক তার সঙ্গে আমার ছিল না, কিন্তু তার অমৃত-সরস, স্নেহস্বকুমার হৃদয়খানির উত্তপ্ত স্পর্শ আমাদের চেয়ে আর কে বেশী অনুভব করেছিল । তিনি ছিলেন গোটা সমাজের —অথচ তিনি ছিলেন আমাদের প্রত্যেকের। তার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় চিঠিপত্রে এবং মাসিক পত্রিকার ভিতর দিয়ে। দশ বছর বয়সেই যখন স্কুল ছেড়ে পর্দানশীন হই, তখন থেকে উচ্চশিক্ষার জন্য মনে একটা আগ্রহ জেগেছিল,—আর তাই ছিল বেগম রোকেয়ার কাছে সবচেয়ে বড় জিনিষ। বাংলাদেশের কোন নিভৃত পল্লীতে কোন অবরোধরুদ্ধা বন্দিনী মেয়ে লেখাপড়া শিখবার জন্তে বিন্দুমাত্র আগ্রহ দেখিয়েছে—সে-ই ছিল তার সবচেয়ে আপন ; তারই সঙ্গে ছিল তারই প্রাণের যোগ সবচেয়ে বেশী । সবাই জানেন বেগম রোকেয়া একটি স্কুল করেছেন । সবাই জানেন সপাওয়াং মেমোরিয়াল গার্লস হাই-স্কুলের তিনি প্রতিষ্ঠাত্রী । কিন্তু কেমন করে ঐশ্বধ্য-লালিতা এই অবরোধবাসিনী—এই সৰ্ব্বভোগত্যাগিনী বিধবা স্বামীর স্মৃতি বুকে নিয়ে ঘরের বাইরে এসে দাড়ান, কেমন ক’রে পাঁচটি মেয়ে নিয়ে স্কুল আরম্ভ করেন, আর কেমন করে পচিশ বৎসর পরে সেক্ট স্কুলচক একটি হাই স্কুলে পরিণত করেন—সে-কথা অনেকেই জানেন না । প্রথম যখন স্কুল সুরু করেন, তখন লেখাপড় তিনি জানতেন না বেশী । সম্রাস্ত মুসলমান ঘরের মেয়ে ছিলেন তিনি— যাদের পক্ষে ইংরাজী বা বাংলা লেখা ত্রিশ বছর আগে একেবারেই হারাম ছিল। আজ আমরা মনে করি লেখাপড় শিখবার জন্তে আমাদের অনেক কষ্ট ক’রতে হয়েছে, সমাজের অনেক কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই ক'রে তবে আমরা লেখাপড়া শিখেছি। কিন্তু তুচ্ছ মনে হয় আমাদের কষ্ট, আমাদের বাধাবিঘ্ন, যখন তুলনা করি সেই চল্লিশ-পঞ্চাশ বছর আগে বেগম রোকেয়ার যখন শিক্ষা শুরু হয় তখনকার যুগের কুসংস্কারের সঙ্গে। আজ আমরা হয়ত পুরুষের সামনে