বাঙ্গালা টাইপ ও কেস শ্ৰীঅজরচন্দ্র সরকার כא আমার আগের দুইটি প্রবন্ধে ৪৭৪-টি স্বর ও ব্যঞ্জন প্রভৃতি অযুক্ত ও যুক্ত টাইপকে ৪১ দফায় ভাগ করিয়াছি। এই ৪১ দফার মধ্যে প্রথম ৫ দফার আলোচনা দ্বিতীয় প্রবন্ধে করিয়াছি। ৬ দফা হইতে এই প্রবন্ধ আরম্ভ করিতেছি । দক্ষ—গ গ,গী গু গৃ গৃ দ স্ক গ্ল থ গ্র গ্র 家) · -\s) || গ-কেসে থাকা চাই ; কেননা সন্ধিস্থত্রাসারে স্বরবর্ণ, বর্গের তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ণ, কিংবা য র ল ব এবং হ, পরে থাকিলে পদের অম্বস্থিত কৃ-র স্থানে গ হয়। এমন অনেক খাটি সংস্কৃত শব্দ বাঙ্গালায় ব্যবহৃত হয় যেগুলির শেষে ক থাকে এবং এই স্বরানুসারে সন্ধি হইয়া গ হইয়া বায়, যেমন—দিগগজ, বাগজাল, বাগ রোধ, সমগ রূপে প্রভৃতি। আর এই ক-কে গ, করিয়া যুক্তাক্ষরে ব্যবহার করিবার জন্যই গণ, গু, থ এবং প্ল-য়ের স্থষ্টি হইয়াছে, যেমন— দিগদর্শন, বাদেবী প্রভৃতি এবং বহুতর সংস্কৃত শব্দ যাহাদের বাঙ্গালায় প্রয়োগ নাই, যেমন—ধিন্ধনম্, সমান্থপতি, ধিগ্লোভিনম্ন ইত্যাদি । এখন অনায়াসে প্রশ্ন করা যাইতে পারে যে, বাঙ্গালায় যে সকল ব্যঞ্জনাস্ত থাটি সংস্কৃত শব্দের বহুল প্রয়োগ আছে এবং সাধারণতঃ যে শব্দগুলির প্রথমার একবচন বাঙ্গালায় মূল শব্দরূপে প্রচলিত আছে, সেই সকল শব্দ কি হসন্ত চিহ্ন দিয়া লেখা ও ছাপা হইবে, না হসন্ত বাদ দিয়া অকারাস্তুরূপে ব্যবহৃত হইযে? ব্যঞ্জনাস্ত কয়েকটি শব্দের উদাহরণ দিতেছি —উদকু, ঋক, ত্বঞ্চ, দিক, প্রাক, বণিক, বাক্, ভিষকৃ, সম্রাটু, উপনিষদ, আপদ, বিপদ, সম্পদ, স্বহৃদ, ভগবান, বিশ্বান প্রভৃতি। প্রথমেই বলিয়া রাখি, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ এই সকল শৰে হসন্ত চিহ্ন দেন না,-আকারাস্ত করিয়াই লেখেন এবং তাহার পুস্তকে সেইরূপ ভাবেই মুদ্রিত করান। কিন্তু র্তাহারই লিখিত প্রবন্ধ ও কবিতাটি যখন পাঠ্যপুস্তক মধ্যে সংকলিত হইয়া মুদ্রিত হয়, তখন ঐ শব্দগুলি হসন্তযুক্ত হইয়াই ছাপা হয়। শুনিয়াfছ, টেক্সট বুক কমিটির সভ্যগণ এই বিষয়ে শ্যেনদৃষ্টি । ভাষা ও ভাব যেমন-তেমন ও যা-তা হউক না কেন, তাহাতে কিছুই আসিয়া যায় না, কিন্তু ভাষায় ব্যবহৃত শব্দগুলি, বিশেষত: সমস্ত’ পদগুলি, সংস্কৃত ব্যাকরণ-অনুযায়ী না হইলেই ঠাচার বই বাতিল করিয়া দেন —তখন বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পুত্তলিকার মত র্তাহার বোধোদয়’ও ইষ্টয় পড়ে অচল । বিদ্যাসাগর মহাশয় স্বয়ং এ বিষয়ে অত্যন্ত সাবধানী ছিলেন । লিখিলাম ‘সাবধানী। কিন্তু এই শব্দটি কোন টেক্সট বুক কমিটির সভোর দৃষ্টিগোচর হইলে এই প্রবন্ধ তিনি টুকরা-টুকরা করিয়া ছিড়িয়া ফেলিতেন নিশ্চয়ই, কেন-ন, সংস্কৃত ব্যাকরণ-অগুসারে লেখা উচিত ছিল ‘সাবধান’—অবধান বা সতর্কভার সহিত, বিশেষণ। সাবধান ऋ* विtशष१, डाशद्र छेनद्र हेन्-थङाग्न कब्रिग्ना श्रेकांब्र জুড়িয়া দিয়া পুনরায় বিশেষণ করায় মুখত প্রকাশ পাষ্টয়াছে এবং সংস্কৃত ব্যাকরণের প্রতি অবহেল প্রদর্শন করা হইয়াছে। কিন্তু ভাবিয়া দেখুন, আমরা অনবরত বলি,'লোকটি খুবই সাবধানী. সাবধানের বিনাশ নেই" ইত্যাদি ; অর্থাং "সাবধান' শব্দটকে বিশেষ্যরূপে এবং ‘সাবধানী শকটিকে বিশেষণরূপে আমরা কথোপকথনের ভাষায় খুবই ব্যবহার করি এবং অনেক দিন হইতে লিখিত ভাষার মধ্যে ইহার। চলিয়া আসিতেছে। এইরুপ তথাকথিত ব্যাকংণ-দুষ্ট শব্দ পাঠ্যপুস্তক-মধ্যে স্থানলাভ করিলেই গ্রন্থ ক’রের মহাবিপদ,- উচ্চার বই ত অচল হইবেষ্ট, সঙ্গে সঙ্গে তাহাকেও অন্নাভাবে অচল হইয়৷ স্বাণুবং জীবনযাত্র। নিৰ্বাহ করিতে হইবে। বাঙ্গালার সাহিত্যিকগণের মধ্যে এইসব বিষয় বিচার করিবার কি কোন উপযুক্ত ব্যক্তি নাই ?
পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮১৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।