ব্যাঙ্কিঙের কয়েকটি মূলতত্ব ty*\S করিতে হইলে আমানতের স্বদের হার বাড়াইতে হয়, সেই অনুপাতে ঋণের স্বদও বাড়ে। বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী মন্দার ফলে কেনাবেচা কমিয়া গিয়াছে, তদুপরি প্রতিযোগিতা বাড়িয়া মালের মূল্য অসম্ভব হ্রাস পাইয়াছে। এই অবস্থার যদি আমাদের মাল উৎপল্পের খরচ বৃদ্ধি পায় তাহা হইলে অন্ত দেশের সহিত আমরা প্রতিযোগিতা করিব কি করিয়া ? সরকারের যদি এই উদ্বেগু হয় যে, টাকার বাজারে তাহারা অন্ত প্রতিদ্বন্দ্বীদের দাড়াইতে দিবেন না তাহা হইলে তাহারা নিশ্চয়ই সফল হইবেন। লোকসান করিয়া কেহ ব্যবসায় করে না, করিলেও বেশী দিন টিকিতে পারে না, কিন্তু সরকারের সে চিন্ত নাই, একদিকে স্বদের হার অন্যদিকে করের ভার দুইটিই এক সঙ্গে বাড়িতে পারে। বাজেট করিবার সময় আয়-বায়ের যে অনুমান ( estimate) করা হইয়াছিল, প্রকৃত আয়ের পরিমাণ তদপেক্ষা অনেক কম হুইয়াছে। আমদানী পণ্য হ্রাস হওয়ায় আমদানী শুল্ক কমিয়াছে। রেলের আয়ু কমিয়াছে। এইরূপ সবদিকেই আয়ের পরিমাণ হ্রাস পাইয়াছে, অথচ সেই অনুপাতে ব্যয়ের হ্রাস হয় নাই, ব্যয়সঙ্কোচের জন্ত কয়েকটি কমিটি বসিয়াছিল এবং তাহারা ব্যয়সঙ্কোচের জন্ত কিছু কিছু পরামর্শও দিয়াছেন, কিন্তু আসলে যেখানে ব্যয়সংক্ষেপ কৰ্ত্তব্য সেখানে কিছুই করা হয় নাই । বড় চাকুরিয়া এবং ছোট চাকুরিয়া সকলেরই বেতন শতকরা দশ টাকা কমান হইয়াছিল, কেন-না, বড়দের খরচ বেশী, অতিরিক্ত কমাইলে চলিবে কেন ? লি-কমিশন যে গোদের উপর বিষফোড়া বলাইয়া দিয়াছিল, তাহাও থাকিবে, নচেৎ ইংরেজদের উপর ঘোর অবিচার করা হুইবে । সৈন্তবিভাগের ব্যয় আর হ্রাস করা যায় না, তাহা হইলে শাস্তি হপূখলার অন্ধবিধা হইবে, অর্থাৎ ব্যয় যাহছিল তাহ অল্প কাটছাট ৰরিমাণুৰ্ব্বে বাহা ছিল প্রায় তাহাই থাকিবে। এইরূপ হইলে বাজেটে আয় বায়ের সামঞ্জস্ত থাকিবে ক্ল করিষ্ণু :- লাগে টাকা দিবে গৌরী সেন। ভারতে প্রজার উপর আরও কর চাপাও। কর-বৃদ্ধির পদ্ধতিও এইরূপ রাখিতে হইবে যে, তাহাতে বৃটিশ ব্যবসায়ীর হিত যথাসম্ভব বজায় থাকে। আমাদের কিছু বলা সে শুধু অরণ্যে রোদন। যদি আমরা আপত্তি করি কিংবা বিল পাস না করি তাহা হইলে ভাইসরয়ের সার্টিফাইং ক্ষমতারূপ ব্ৰন্ধান্ত্র আছে । সরকারী আর্থিক নীতি,-কর নীতি যাহার একটি অঙ্গ তাছ। আমরা দৈনন্দিন জীবনে প্রত্যেক ঘটনায় উপলব্ধি করি। শুন্ধের হার বৃদ্ধি হইলে বিদেশজাত মালপত্র মহার্ঘ হয় এবং স্বল্প আয়ে জীবনধারণের প্রয়োজনীয় জিনিষ কিনিতে গিয়া আমাদের বেগ পাইতে হয় । ক্রয়-শক্তি হ্রাস হওয়ার ব্যবসা বাণিজ্য আরও মন্দা হয়, ব্যাঙ্কের আমানত কমিয়া যায় এবং অনেকস্থলে দেয় টাকা আদার করা মুস্কিল, হয়। কাজেই দেখা যাইতেছে সরকারী মুদ্র, অর্থ এবং ঋণ-নীতির উপর দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও তৎসঙ্গে ব্যাঙ্কের সফলতা অনেক পরিমাণে নির্ভর করে । এইসব ব্যাপারে আমাদের হাত এখন নামমাত্র। ভবিষ্যৎ শাসনতন্ত্রে আমাদিগকে কতটা অধিকার দেওয়া হইবে গোলটেবিল বৈঠকে যেসিদ্ধান্ত হইয়াছে তাছা দেখিয়া মনে হইতেছে, এ-বিষয়ে বেশী আশা করা দুরাশা মাত্র । সে যাচা হউক, বর্তমানে ব্যাঞ্চের যে-সমস্ত উপস্থিত হইয়াছে সে-বিষয়ে চিস্তা করা প্রয়োজন । বঙ্গদেশে বড় ব্যাঙ্ক বলিতে একটিও নাই। প্রত্যেক প্রদেশে একাধিক বৃহৎ ব্যাঙ্ক স্থাপিত হইয়াছে এবং ইহার শাখা খুলিম নিজেদের শ্ৰীবৃদ্ধি করিতেছে । বড়ই পরিতাপের বিষয়, আমাদের সেরূপ করিবার ইচ্ছা কিংবা চেষ্টা নাই। বিদেশী এবং অন্ত প্রদেশীয় ব্যাঙ্কগুলি বাঙালীর অর্থে পুষ্ট, অথচ বাঙালী উপযুক্ত ধার পায় না। পূর্বেই বলিয়াছি, শিল্পবাণিজ্যের প্রতিষ্ঠা করিতে ব্যাঙ্ক ছাড়া চলে না। আজ যে মধ্যবিত্ত বাঙালী জীবনমরণের সমস্যায় পৌছিয়াছে, ইহার প্রতিবিধান করিতে হইলে ব্যবসারবাণিজ্য আমাদের হস্তগত করিতে হইবে। আমরা আত্মবিশ্বাস হারাইয়াছি, তাই বাঙালী মাত্রই আজ অবিশ্বাসের পাত্র। ষাকাদের সম্বন্ধে এরূপ ধারণ তাহার জীবনসংগ্রামে বাচিবে কিরূপে । আমার বিশ্বাস, ভবিষ্যতে ছোট ব্যাঙ্কের পক্ষে টিকিয়া থাকা মুস্কিল হইবে। ইহাদের কতকগুলি ক্রটি পূর্বেই উল্লেখ করা
পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯০৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।