মাতৃ-ঋণ স্ত্রীসীতা দেবী १ পেন্দ্রবাবুর বাড়িতে চাকরবাকর হইতে মিহির পর্য্যন্ত সকলকেই ভোরে উঠতে হয়। গ্রীষ্মকালে ইহাতে কেহ শ্রপত্তি করে না, তবে শীতকালে মিহিরকে রোদ উঠিবর অ’গে বিছানা হইতে তোলা এক রকম অসম্ভব ব্যাপার গুইয়: দাড়ায় । জ্ঞানদা ভিন্ন কেহ এ কাজে অগ্রসর হইতেও সাহস করে না। যামিনী বলে, “ও বাদরের সঙ্গে ক পারবে ? যত বাজে কথা শুল্বার জন্যে আমি যেতে পারব না।” ঝি চাকর কেহ গিয়া কিছুই করিতে পরিবে না, তাহ জানা কথা, সেইজন্য তাহদের পাঠানও না। একমাত্র জ্ঞানদার কাছেই মিহির হার মানে, স্বতরাং সকালে তিনিই রণক্ষেত্রে অবতীর্ণ হন। আজ কিন্তু সকালের রোদ জানালার ভিতর দিয়া কিয় মিহিরের ঘরের মেঝেতে প্লাবন বাধাইয় দিয়াছে, তৰু জ্ঞানদার দেখা নাই। অভ্যাসমত মিহিরের ঘুম ভাঙি গিয়াছে অনেকক্ষণ, কিন্তু লেপের মায়া ত্যাগ করিয়া উঠিবার সে কোনোই চেষ্টা করে নাই। মা আসিয়া শাণিত বকুনি ঝাড়িবেন, কান ধরিয়া তুলিতে চাহিবেন, তবে সে উঠিবে। আজ এতক্ষণ কেন যে সে নিষ্কৃতি পাইয়াছে, তাহার কোনো কারণই সে খুজিয়া পাইতেছিল না। রবিবার সারাদিন ছুটি উপভোগ করে বলিয়, সোমবারে বরং বেশী কড়াকড়ি হয়, আজ তাহার উণ্ট ব্যবস্থা কেন ? নীচে চায়ের ঘণ্টাও বাজিয়া উঠিল। আর শুইয়া থাক চলে না, তাহা হইলে চা খাওয়াটাই বাদ যাইবে । জ্ঞানদার নিয়ম, সময়মত খাওয়ার ঘরে উপস্থিত হইতে না পারিলে, পরে আর কিছু পাইবার উপায় থাকে না। একমাত্র কৰ্ত্তার সম্বন্ধে এ নিয়মের ব্যতিক্রম হয়। মিহির অত্যন্ত অনিচ্ছা সহকারে লেপটাকে ঠেলিয়া সরাইয়া দিয়া, লইয় তাহাতে পা ঢুকাইয়া খানিকক্ষণ আলস্য উপভোগ করিল। তাহার পর মনস্থির করিয়া, কাপড় এবং জুতা পরা শেষ করিয়া, হাতমুখ ধুইয়া, লাফাইতে লাফাইতে সিড়ি দিয়া নমিতে লাগিল । খাবার ঘরে শুধু বাবা আর দিদি, ম নাই। বাবা খবরের কাগজ পড়িতেছেন, দিদি পাউরুটির টোষ্টে মাখন মাথাইতেছে। মিহির ঘরে ঢুকিয় স্বাভাবিক উচ্চকণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিল, “মায়ের কি হ’ল আবার ?” যামিনী বলিল, “গল। ত নয় যেন কাসর।” মিহির বলিল, “থাক, আমার গল আমারই আছে, তোমায় তার ভাবনা ভাবতে হবে না।” যামিনীর গল। সম্বন্ধেও একটা তীব্র মন্তব্য করিবার তাহার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু পিতা নিকটে বসিয়া থাকায় সুবিধা হইল না। নৃপেন্দ্রবাবু খবরের কাগজ হইতে মুখ তুলিয়া বলিলেন, “তোমার মায়ের মাথা ধরেছে বলে তিনি উঠতে পারছেন না। ভাই বোনে ঝগড়া করে তাকে মোটে বিরক্ত করবে না। আমি ত একঘণ্টার মধ্যে বেরিয়ে যাব।” যামিনীর স্বগঠিত নাসিকাটি একটু কুঞ্চিত হইল, তবে বাপ-মায়ের কোনো কথার উত্তর করা তাহার স্বভাববিরুদ্ধ, সে কোনে কথা বলিল না। নীরবে সকলকে ডিম, রুট, চা পরিবেশন করিতে লাগিল। আয় মাঝে আসিয়া গৃহিণীর প্রাতরাশ উপরে লইয়া গেল। যামিনীও তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করিয়া উঠিয়া গেল। খাবার ঘরে বসিয়া ৰূপেক্সবাবু একমনে কাগজ পড়িতে লাগিলেন এবং মিহির বসিয়া প্লেটের উপর চুরি স্কট বাজাইতে লাগিল। জানা থাকিলে তখনই বকুনি খাইত, নৃপেন্দ্রবাবু এ সব দিকে মোটে খেয়াল করেন কাজেই সে কোনো বাধা পাইল না। ’ ... " গটের উপর উঠা বলি। তার একপাট টানিয়া शनौि शत ঘরে ঢুকি দেখিল ਵਿੱਚੋਂ
পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।