পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

W3 V& S90áు ইতিহাসের সহিত তাহাদের যথেষ্ট অনৈক্য আছে । ইতাদের মধ্যে অন্নদামঙ্গলের কথাই সমস্ত বাঙ্গলায় প্রচারিত হইয়া পড়িয়াছে। ইহার পর উনবিংশ শতাবীর প্রথমেই রামরাম বসু মহাশয় তাহার রাজা প্রতাপাদিত্যচরিত্র প্রণয়ন করিয়া প্রতাপাদিত্যের আন্তপূৰ্ব্বিক বিবরণ প্রদানের চেষ্টা করেন । তিনি পিতৃপিতামহ-মুখশ্রত বিবরণ ও কোন কোন পারসিক ভাষায় লিখিত বিবরণ দেখিয়াই তাহার গ্রন্থ রচনা করেন । র্তাহার কিছু কিছু ইতিহাসের কথা থাকিলেও জনশ্রুতি যে র প্রধান অবলম্বন তাহাতে সন্দেহ নাই। কাজেই তাহাকে প্রতাপের প্রকৃত বিবরণ বলা যায় না। হরিশ্চন্দ্র তর্কালঙ্কার বস্থ-মহাশয়ের ভাষা পরিবর্তন করিয়া তাহার গ্রন্থের যে নুতন সংস্করণ প্রকাশ করিয়াছিলেন, তাহাতে নূতন কোন কথাই নাই । তাহার পর গবরমেন্টের Gazetteer, Statistical Account zRef Erw # Harz. গ্রন্থ ও প্রবাদ অবলম্বন করিয়া প্রতাপাদিত্যের কথা উল্লেখ করা হইয়াছে। বঙ্গাধিপ পরাজয়’ নামক উপন্যাস গ্রন্থেও কিছু কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা হইয়াছে বটে, কিন্তু তাহার ঔপন্যাসিক বিবরণই অধিক। অবশেষে পণ্ডিত সত্যচরণ শাস্ত্রী অনেক অতুসন্ধান করিয়া প্রতাপাদিত্য-সম্বন্ধে যে গ্রন্থ রচনা করেন, দুঃখের বিষয় তাহাতেও অনেক স্থলে প্রবাদই স্থান পাইয়াছে। শাস্ত্রী-মহাশয়ের গ্রন্থ অবলম্বন করিয়া কোন কোন উপন্যাস ও নাটকও রচিত হইয়াছে । ইহার পর আমরা প্রতাপাদিত্য-সম্বন্ধে প্রাপ্ত সমস্ত বিবরণসমূহ হইতে প্রকৃত ঐতিহাসিক তথ্য বাহির করিবার চেষ্টা করিয়া আমাদের ‘প্রতাপাদিতা’ প্রকাশ করি। তাহার পর অধ্যাপক যদুনাথ সরকার প্রবাসী’ পত্রে আবদুল লতীফের ভ্রমণ-কাহিনী ও বাহারিস্তান হইতে প্রতাপাদিত্যের বিবরণ দিয়া নূতন তথা জানাইয়া দেন। সৰ্ব্বশেষে সতীশচন্দ্র মিত্র তাহার যশোহর খুলনার ইতিহাসে বহু অনুসন্ধান ও গবেষণা করিয়া প্রতাপাদিত্যের বিস্তুত বিবরণ দিবার চেষ্টা করিয়াছেন । কিন্তু তাহতে প্রকৃত ঐতিহাসিক তথ্যের সহিত প্রবাদ ও কল্পনা বিজড়িত করিয়াংক্ষেপ করিয়া তুলিয়াছেন যে, কোনটি প্রকৃত ইতিহাস, কোনটি প্রবাদ বা কল্পনা তাহা স্থির করা কঠিন । আমরা এই সকল বিবরণ আলোচনা করিয়া প্রতাপাদিত্য-সম্বন্ধে প্রকৃত কথা কি তাহ দেখাইবার চেষ্টা করিতেছি । সে-সময়ের প্রকৃত ইতিহাসের আলোচনা করিয়া প্রবাদ সকলের মূল কিরূপ তাহাও দেখাইবার চেষ্টা করিব । এ-প্রবন্ধে আমরা সংক্ষেপেই প্রতাপের জীবনী আলোচনা করিব । বার-ভুইয়। মোগল-আমলে বঙ্গদেশে বারজন ভূইয়ার কথা জানা যায়, ইহারাই বাঙ্গলার প্রকৃত মালিক ছিলেন । আকবরনাম, ডুজারিক ও পার্শার গ্রন্থ এবং রামরাম বক্স প্রভৃতির গ্রন্থ হইতে একথা জানা গিয়া থাকে। কাজেই মোগল আমলের এই বার-ভূইয়ার কথা ঐতিহাসিক তথ্য বলি স্বীকার করা যায়। হিন্দু-আমল হইতে এই বার-ভূঁইয়া । প্রথা প্রচলিত ছিল বলিয়া কথিত হইয় থাকে। কোন কোন প্রাচীন বাঙ্গল গ্রন্থে হিন্দু রাজত্বকালে বার-ভূঁইয়ার , উল্লেখ দেখা যায় । প্রবাদ অবলম্বন করিয়া কোন কোন ইংরেজ লেখকও হিন্দু-আমলের বীর-ভূইয়ার কথা উল্লেখ করিয়াছেন । এ-সম্বন্ধে বিশিষ্ট প্রমাণ না থাকিলেও মোগল-আমলের বার-ভুইয়ার বিদ্যমানত দেখিয়া, পূৰ্ব্ব হইতে যে এ প্রথা প্রচলিত ছিল তাহা অকুমান করা যাইতে পারে। মোগল-আমলে যে-বারজন ভুইয়া ছিলেন, তাহীদের সম্বন্ধে অনেক গোলযোগ আছে। ডুজারিক, পার্শ প্রভৃতি উক্ত বারজনের মধ্যে তিনজনকে হিন্দু ও অবশিষ্ট নয়জনকে মুসলমান বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। সেই হিন্দু তিনজন শ্ৰীপুর, বাকলা ও চ্যাণ্ডিকান বা চান্দেকানের রাজা। আমরা জানিতে । পারি, চাদরায়-কেদাররায় শ্রীপুরের, কন্দপরায়-রামচন্দ্র রায় বাকলার ও প্রতাপাদিত্য চ্যাণ্ডিকানের রাজা । কাজেই প্রতাপাদিত্য যে বার-ভূইয়ার অন্যতম তাহাতে সন্দেহ নাই। মুসলমান ভুইয়াদের মধ্যে ইশ থার নামই দেখা যায়, তিনি সকল ভূঁইয়ার প্রধান বলিয়। ঐ সকল গ্রন্থে এবং আকবরনামায়ও উল্লিখিত হইয়াছেন। কেহ কেহ অবশিষ্ট আটজনের মধ্যে কেঞ্জ