\రిం$ করা উচিত । আটকখানা হইতে ডেটেমুদের পলায়ন নিবারণ করিবার নিমিত্ত ভারপ্রাপ্ত কৰ্ম্মচারী ও প্রহরীর তাহাদের উপর বন্দুক আদি অস্ত্র প্রয়োগও করিতে পরিবে, এরূপ নিয়ম আগেই হইয়াছিল। এখন তাহাদিগকে আজ্ঞাধীন করিবার নিমিত্ত “কর্তৃপক্ষকে” সমতুল্য ক্ষমতা দেওয়া হইল। বিভীষিকাবাদ ও বাঙালীর ভীরুত অপবাদ মেকলের সময় হইতে অনেক ইংরেজের দ্বারা বাঙালীর ভীরুতা ও কাপুরুষত ঘোষিত হইয়াছে ; কারণ, বাঙালীর বেতনভোগী সিপাহী হইয়া যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়া মানুষ মারিবার সামর্থ্যের পরিচয় দেয় নাই। এই অপবাদ পরোক্ষ ভাবে কোন কোন বাঙালী যুবককে হিংসার পথে চালিত করিয়াছে, তামাদের কখন কখন এরূপ সন্দেহ হইয়াছে। বোম্বাইয়ের ইণ্ডিয়ান সোশাল রিফৰ্ম্মারের প্রবীণ সম্পাদক শ্রযুক্ত কামাক্ষি নটরাজন এই অপবাদ বঙ্গে আতঙ্কোৎপাদকদের প্রাদুর্ভাবের একটা কারণ বলেন । ইহা সত্য কি-না বিচাৰ্য্য। সত্য হইলে, কাহারও এই অপবাদের পুনরুল্লেখ করা অনুচিত। কিন্তু কোন অবিবেচক লোক তাহা করিলেও, আমরা মনে করি, বাঙালী ছেলেমেয়ে ও অধিকবয়স্ক লোকদের সাহসের যথেষ্ট প্রমাণ থাকায়, সাহসিকতা প্রমাণ করিবার জন্য মানুষ মারা অনাবশ্যক এবং নিবুদ্ধিতার পরিচায়ক। সাত্ত্বিক সাহস প্রদর্শনের যথেষ্ট কার্য্যক্ষেত্র পড়িয়া রহিয়াছে। ডায়ারের পক্ষ সমর্থন বঙ্গসাহিত্যে এবং বিশেষ করিয়া রবীন্দ্র-সাহিত্যে পারদর্শিতার দাবিদার প্রাক্তন-রেভারেণ্ড মিঃ টম্সন জালিয়ানওয়াল বাগের বীর ডায়ারের দোয ক্ষালনার্থ এত বৎসর পরে কলম ধরিয়াছেন। তিনি বলেন, ডায়ার জানিতেন না, যে, ঐ বাগের নির্গমন-পথ নাই। স্বতরাং যখন তাহার হুকুমে সিপাহীর বাগে সমাবিষ্ট জনতার উপরগুলি ছোড়ার পর জনতা পলাইল না, তখন ডায়ার ভাবিয়াছিলেন, তাহারা তাহাকে আক্রমণ করিতে উদ্যত হইয়াছে, স্বতরাং পুনঃপুনঃ গুলিনিক্ষেপ চলিতে থাকে। কিন্তু SOOE) ডায়ার কি অন্ধ ছিলেন ? তিনি কি দেখেন নাই, যে, জনত অস্ত্রহীন, এবং তাহারা আক্রমণের কোন চেষ্টাই করিতেছে না ? গুলি ত একবার নয়, যতক্ষণ পর্য্যন্ত সিপাহীদের পুজি ফুরায় নাই ততক্ষণ চলিয়াছিল। ততক্ষণেও জনতার না পলাইবার কারণ ডায়ার বুঝিতে পারেন নাই ? যোদ্ধার অদ্ভুত পর্যবেক্ষণ-শক্তি বটে! মিঃ টম্সন বলিতেছেন, ডায়ার যখন জানিলেন জালিয়ানওয়ালাবাগের নির্গমন-পথ ছিল না তখন তিনি ভাঙিয়া পড়িয়াছিলেন, এবং তাহার দুই ইংরেজ বন্ধুর কাছে সে কথা বলিয়াছিলেন, বলিয়াছিলেন, যে, তিনি রোজ জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের ছবি ঠিক যেন চোখে দেখেন । এই বন্ধুদের কাছেই মি টমসন এই সব কথা শুনিয়াছেন বলিতেছেন। ভাল কথা । কিন্তু ডায়ার তাহার কাজের তদন্তের জন্য নিযুক্ত হাণ্টার কমিশনের কাছে এ রকম কথা ন। বলিয়া নিজের কাজের সমর্থন করিয়াছিলেন, “বিদ্রোহীদিগকে’ শিক্ষা দিতে চাহিয়াছিলেন বলিয়াছিলেন। কেন এরূপ করিয়াছিলেন ? তাহার বন্ধুরাই বা কমিশনের কাছে কেন সত্য সাক্ষ্য দেন নাই ? তাহার মনস্তত্ত্ব মনোবিজ্ঞানবিদদের ষ্টাডির অর্থাৎ চর্চার বিষয়, মিঃ টমসন ইহ বলিয়াই সকলকে স্তম্ভিত করিতে চাহিয়াছেন। যখন পালেমেণ্টে, কাগজে পত্রে, এই হত্যাকাণ্ডের আলোচনা হয়, তখন ডায়ার ও র্তাহার দুই বন্ধ কেন সত্য গোপন করিয়া রাখিয়াছিলেন ? এত বৎসর পরে ১৯৩২ খ্ৰীষ্টাব্দে মিঃ টমসনের ভারতবর্ষে শুভ পুনরাগমনে বন্ধুদের চৈতন্য হইয়াছে। ডায়ার তাহার দুই বন্ধুকে যাহা বলিয়াছিলেন, তাহারা তাহার যে রকম ভগ্ন দশ লক্ষ্য করিয়াছিলেন এখন বলিতেছেন, সেই সব কথা ও সেই ভগ্ন দশা (সত্য হইলে) ডায়ারের পত্নীর নিশ্চয়ই অজানা থাকিত না । তাহার জানা থাকিলে ডায়ারের জীবনচরিত-গ্রন্থের লেখক তাহ অবশ্যই সংগ্ৰহ করিতে পারিতেন। কিন্তু মিঃ টম্সন সেই গ্রন্থ হইতে এই নূতন আলোক আমদানী করেন নাই। মি: টম্সনের নিজের কথাও কতটা নির্ভরযোগ্য, সে-বিষয়ে আমাদের সন্দেহ আছে। তিনি “An Indian Day” নামক একটি উপন্যাস লিখিয়াছেন।
পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩১৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।