পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ყo8 হাসির শকে শু্যামাচরণের হং কম্প হইল, গায় কাটা দিল । বনবিহারী বলিল,—পুলিসে খবর দেবে ? তাহলে, বুঝলে কি না, তোমাকে লটকাতে বেশী দিন লাগবে না। বনবিহারী নিজের গলা টিপিয়া ধরিয়া, জিব বাহির করিয়া ফাসীর অভিনয় করিল। শু্যামাচরণ ঘামিয়া উঠিল, শুষ্ক মুখে ঢোক গিলিয়া বলিল,—আমি কি এক যাব না কি ? তুমিও আমার পাশে ঝুলবে। বনবিহারী আবার সেই উৎকট হাসি হাসিল । বলিল,—আমি ? আমি ত তোমাকে চিনিও নে, বুঝলে কি-না ? কে তোমার সাক্ষী আছে ? শু্যামাচরণ স্তন্ধ হইয়া গেল । যে-কৰ্ম্মে বনবিহারী তাহাকে নিয়োগ করিয়াছিল তাহার আবার সাক্ষী কে থাকিবে ? সে কি সাক্ষী ডাকিয়া করিবার কাজ ? বনবিহারী বলিল, তুমি যা পেয়েছ তা পেয়েছ, আর কিছুই পাবে না । ওখানকার পথ আমি বন্ধ করে দেব, বুঝলে কি না ? শু্যামাচরণ হস্যে হইয়। উঠিয়াছিল। উন্মত্তের ন্যায় কহিল,—যখন দুটো হয়েছে তার উপর না-হয় আর একটা হ’ল। কোন পথ বন্ধ করবার আগেই তোমাকে সাবাড় করব । গ্যামাচরণের যষ্টির মাথায় পেচ ছিল, ঘুরাইয়। খুলিবার চেষ্টা করিল। বনবিহারী তাহার হাত মুচড়াইয়া লাঠি কাড়িয়া লইল, শ্যামাচরণ বলবান হইলেও বনবিহারীর তুলনায় শিশু। লাঠির ভিতর হইতে বনবিহারীর গুপ্তি টানিয়া বাহির করিয়া শু্যামাচরণকে খোচ মারিবার ভঙ্গী করিল, শু্যামাচরণ ভয়ে লাফাইয়া ঘরের আর এক পাশে গিয়া দাড়াইল । দরজা বন্ধ, তাহার কাছে বনবিহারী । শু্যামাচরণের পলায়নের পথ নাই। বনবিহারী গুপ্তি বর্ষার মত করিয়া ধরিয়া শু্যামাচরণের বক্ষের দিকে লক্ষ্য করিয়া বলিল,— কোন কোন ছেলে প্রজাপতি ধরে তাকে কাঠি দিয়ে বিধে রাখে দেখেছ ? প্রজাপতি তখনই মরে না, অনেকক্ষণ বেঁচে থাকে আর পাখা নাড়ে। তোমাকে সেই রকম বিধে রাখলে হয়, বুঝলে কি না ? 3. খামাচরণ বলল,—তার পর তুমি ধরা পড়বে না? প্রিবাসী ; S99ళేు —তুমি যে এখনি বললে দুটাে হয়েছে তোমার, তুমি ত এখনও ধরা পড়নি। আর তুমি দুটাে সাবাড় করেছ ঠিক জান ? বুঝলে কি না ? —কেন, তুমি কি জান না ? —আমি জানি একটা ফসকে গেছে, বুঝলে কি না ? খামাচরণের বুকের ভিতর ধড়াস করিয়া উঠিল, কিন্তু মুখে বলিল,—মিছামিছি ধাপ্পা দিচ্ছ কেন ? —তামাস নয়, সত্য কথা। একজন বেঁচে আছে আমি ঠিক জানি, তুমিও জানতে পার, বুঝলে কি না ? —তবে এতদিন কিছু হয়নি কেন ? —সেইটে আমি বুঝতে পারছি নে। ওদের বাড়িতেও কিছু জানে না। এর ভিতর একটা কোন কথা আছে, বুঝলে কি-না ? —কে বেঁচে আছে ? —সেটা তোমাকে জানতে হবে, বুঝলে কি-না? —তবে এখন আমি যাই । —অত তাড়াতাড়ি নয়, কিছু নিয়ে যেতে হবে। আর আবার যদি এসেছ তাহ’লে তোমাকে কনাকাটা ভূত ক’রে ছেড়ে দেব । গুপ্তি ফেলিয়া দিয়া লাঠিগাছ তুলিয়া লইয়া বনবিহারী শু্যামাচরণকে ধরিয়া তাহাকে বেদম করিয়া মারিল। তাহার পর দরজা খুলিয়া তাহাকে টানিয়া বাহিরে ফেলিয়া লাঠি ও গুপ্তি তাহার কাছে ফেলিয়া দিয়া দরজা বন্ধ করিল। মার খাইয়া লাঠি ও অস্ত্ৰ তুলিয়া লইয়া খামাচরণ চলিয়া গেল । * . সপ্তদশ পরিচ্ছেদ ত্রিলোচনের সঙ্কট সেই যে শৈলবালার কন্যার সঙ্গে ত্রিলোচন তাহার পুত্রের বিবাহের ইঙ্গিত করিয়াছিলেন সেই হইতে রমাসুন্দরীর মনে আসা ও আনন্দের চঞ্চলতার আবির্ভাব হইয়াছিল। শৈলবালারা তাহাদের স্বজাতি কিন্তু ভিন্ন গোত্র, অতএব এরূপ বিবাহে জাতিহিসাবে কোন বাধা নাই। আপত্তি কেবল সামাজিক অবস্থা লই।।