পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্যস্থষ্টি বৈশাখ চিনি এইরূপ মধুর, মধু-সন্দেশ এইরূপ মধুর। জিজ্ঞাস্থকে ঐ সব নিজে অস্বাদ করিয়৷ ত{হাদের মাধুর্য্যের প্রকার বা তারতম্য বুঝিতে হয়। তৃষ্ণক্ষয়ের সুখ সম্বন্ধেও সেই কথা । নিজের অন্তভব ভিন্ন ইহ। অন্তরূপে জানা যায় না। তবে যুক্তির দ্বারা ইহার দিকে অনেকট অগ্রসর হইতে পারা যায়, একট পরোক্ষ জ্ঞান হইতে পারে। আর কতকট ঐ রূপ জ্ঞান হইতে পারে যাহারা তাই অনুভব করিয়াছেন বা অনেকটা তাহার নিকটে উপস্থিত হইয়াছেন, তাহাদিগকে দেখিয়া-শুনিয় । জগতের সৌভাগ, ভারতবর্যের অতি সৌভাগ্য আর আমাদের আর অতিমহং পরমমহং সৌভাগ্য যে, এমন এক বাক্তি আমাদের এই জীবদ্দশায় এ দেশে আমাদের চক্ষুর সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছেন। তিনি কৌপীন মাত্র ধারণ করিয়া ও বলিতে পারেন “I am তিনি নানা দ্বন্দ্বের মধো ভাল-মন্দ, শুভ-অশুভ, নিন্দ-স্তুতি, মানঅপমান, সুখ-দুঃখ সমস্ত অবস্থার মধ্যে পতিত হইলেও নিৰ্ব্বিকার ও স্থির থাকিয় বলিতে পারেন “I am not the richest man in the world !” capable of being unhappy." তৃষ্ণক্ষেরের কথা শুনির ভয় পাইবার কারণ নাই । বাহীর ভয় পায় তাহার। “অভয়ে ভয়দৰ্শিনঃ”--অর্থাৎ যেখালে বস্তুত ভয় নাই সেপানে ভয় দেখে । তৃষ্ণক্ষেয়ের জন্য যে বিষয়ভোগ ছাড়িয়া দিতে হইবে বা সন্ন্যাসী সাজিয়া বনে যাইতেই হইবে তাহী নহে। বিষয়ভোগ একেবারে ছাড়িয়া দিলে যে জীবনই থাকে না। তার সন্ন্যাসী হইয়া বনে যাওয়া ? কারণাস্তরে কেহ ইহা করিতেও পারেন. তাহা ন হইলে তৃষ্ণক্ষয় হয় না, ইহা ও নহে। গার্হস্থ্য আশ্রমই শ্রেষ্ঠ আশ্রম, এ কথা আমাদের দেশের ভাবুকের এক বাক্যে দেপাইয়। গিয়াছেন, এবং ইহাই যে ঠিক, যুক্তি তাহা প্রতিপাদন করিতে পারে যাহারা গৃহস্থ হইবার অযোগ্য ত যে কোনো কারণেই হউক, তাহারা গৃহস্থ না হইয় একবারে সন্ন্যাসী হন। বীর না হইলে কেহ যথার্থ গৃহস্থ হইতে পারে না। দুৰ্ব্বলের আশ্রম সন্ন্যাস। শ্ৰীমদ্ভাগবদগীতায় ঐকৃষ্ণ অৰ্জ্জুনকে উপদেশ দিয়াছেন । কি উপদেশ দিয়াছেন ? যুদ্ধ করিতে । অৰ্জ্জুন যুদ্ধ হইতে নিবৃত্ত হইতে চাহিয়াছিলেন, শকুষ্ণ তাহাকে তাঙ্গতে প্রবৃত্ত করিয়াছেন। অৰ্জ্জুন শেষে বলিয়াছিলেন, ‘শ্ৰীকৃষ্ণ, আমার মোহ নষ্ট হইয়াছে, সব বুঝিয়াছি, তোমার কথা আমি পালন করিব”— “নষ্ঠে মোহঃ স্মৃতিলন্ধ করিয়ো বচনং তব |" কি ভাবে যুদ্ধ করিতে হইবে, যুদ্ধ হিংসাশিত হইলে ও কিরূপে তাহতে পাপ হইবে না, শ্রীকুস ইহা ও তন্নতম করিয়া অজ্জনকে বুঝাইয়া দিয়াছিলেন । তাহর সার কথাটি এই যে, আসক্তিকে ত্যাগ করিয়া যুদ্ধ করিতে হইবে । আসক্তি-ত্যাগ, তৃষ্ণণক্ষয়, এ সবই এক, কেবল শব্দের ভেদ । অজ্জন ছিলেন গুহস্থ, যুদ্ধ পর্য্যন্ত তিনি করিয়াছিলেন । তিনি সন্ন্যাসী হইয়া বনে গমন করেন নাই—যদি ও আসক্তি ত্যাগ করিয়াছিলেন । শকুষ্ণাৰ্জ্জন-সংবাদের যদি কোন ঐতিহাসিকত না থাকে, ন-ই থাকুক ; উহা বেদবাসের লেপা হউক বা না-ই হউক। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের মধ্যে বলা হইয়াছিল, বা না-ই হইয়াছিল ; কিন্তু ঐ একটা সংবাদ যে আছে, ইহা না মানিয়া উপায় নাই । ইচ্ছা হয়, শ্ৰীকৃষ্ণ-অৰ্জুন শব্দ দুইটি বাদ দিয়া দুইটি অপর কোনো শক সেখানে যোগ করা হউক । উহাতে কিছু ত্যাসিয়া যায় না। এই ংবাদ হইতে যে ভাবটি পাওয়া যাইতেছে, তাহারই সহিত আমাদের সম্বন্ধ। এই ভাবকে জীবনে মোটেই পালন করা যায় না, ইহার বহু নিকটেও যাওয়া যায় না, ইহা কি করিয়া বলিব, যখন ভারতীয় সংস্কৃতির উজ্জল প্রতিমূৰ্ত্তি-স্বরূপ ঐ কেীপীনধারীকে দেখিতেছি, আর বলিতেও শুনিতেছি ‘আমি উনচল্লিশ বৎসর যাবৎ গীতার উপদেশকে নিজের জীবনে পালন করিবার চেষ্ট মাত্র করিতেছি।’ বিষয় ভোগ করিতে হইবে না ইহা কখনও নহে ; ভাল করিয়াই ভোগ করিতে হইবে, এবং আসক্তি ত্যাগ করিলেই তাহ ভাল করিয়াই করিতে পারা যায়। ভারতীয় সংস্কৃতির ইহা একটি বিশেষ কথা । কালিদাস রঘুবংশে একটি খুবই ক্ষুদ্র পঙক্তিতে নিজের পাঠকগণের সম্মুখে ইহা ধরিয়া দিয়াছেন— “অসক্ত: সুখমশ্বভূং" অর্থাৎ তিনি (রাজা দিলীপ) অনাসক্ত হইয়া কুখভোগ কুরিয়াছিলেন। অন্তত