GIECTة বুড়ীর প্রতি একটু মমতা জন্মিয়াছিল, মামীর কথা কানে তুলিলাম না । 喙 গিয়া দেখিলাম দাখিঠাকুরাণী উঠিয়া বসিয়া বেড়ায় ঠেস্ দিয়া ভিজ্ঞান সাগু খাইতেছেন। আশ্চৰ্য্য হইলাম। এ রোগী একদিনে উঠিয়া বসিতে পারে একথা কল্পনাও করি নাই। খুশী হইয়া কহিলাম, “যা হোক | উঠে বসেছেন ।” দাখিঠাকুরাণী হাসিয়া কহিলেন, "তীখে যেতে হবে তো ভাই। শুয়ে থাকলে কে সঙ্গে নেবে, তাই দুটো—” বলিয়াই সাগুর পাথর রাখিয়া হাত ধুইলেন। বুঝিলাম তীর্থ যাইবার আশাই বুড়ীকে এ যাত্র বঁাচাইয়াছে। একখানা মাদুর টানিয়া লইয়। দাখিঠাকুরাণীর কাছে বসিয়া তাহার জীবনের সমস্ত কাহিনী শুনিলাম । শুনিয়৷ বুঝিলাম তীর্থভ্ৰমণ আর গঙ্গাতীরে মৃত্যুর কামনাই বুড়ীকে বিপৰ্য্যস্ত ভাগ্যের অজস্র আঘাতের মধ্যেও আজ পর্যাস্ত অটুট রাখিয়াছে। বিদায় লইবার সময় বুড়ীর পায়ের ধূলা লইলাম, দাথিঠাকুরাণী কহিলেন, “তুই তো ডাক্তার ভাই, দেখিস্ একটু, হাড় ক’খানা যেন গঙ্গায় পড়ে।” বিরাট ভারতবর্ষ, তার অগণ্য তীর্থ, প্রান্ত হইতে প্রাস্তান্তর প্রসারিত গঙ্গা, আমার মত লক্ষ লক্ষ ডাক্তার আর দাথিঠাকুরাণীর মত কোটি কোটি তীর্থকামী । এ সব কথা বলিয়া আর বুড়ীকে ব্যাকুল করিবার ইচ্ছা হইল না । অসঙ্কোচে কহিলাম, “সে অবিশুি দেখব দিদিম, তীর্থে যাবার সময় খবর দেবেন।” “—তা দেব বৈকি ভাই—”বলিয়া দাখিঠাকুরাণী আমার মাথায় হাত দিয়া কহিলেন, “আমার বুকের পাষাণ নেমে গেল দাদা, এমন কথা আর কেউ বলেনি ।" নীরবে প্রণাম করিয়া বিদায় লইলাম। প্রাঙ্গনে লামিয়া শুনিলাম দাখিঠাকুরাণী কহিতেছেন, “মনস্কাম পূর্ণ কর হরিঠাকুর । নারায়ণ । তারকব্রহ্ম !" তারপর নারায়ণের সমস্ত নামগুলিই আবৃত্তি করিতে আরম্ভ করিলেন, আমি শুনিয়া হাসিলাম। আমি নারায়ণ হইলে এতক্ষণে যে দাখিঠাকুরাণীকে নিশ্চয়ই সৰ্ব্বতীর্থ দৰ্শন করাইয়া অনিতাম তাহাতে সন্দেহ ছিল না । yప్రి= SR মনস্কাম لاسماوي R যাহা হোক,নারায়ণও দাথিঠাকুরাণীর প্রার্থনা শুনিলেন, বুড়ীর মনস্কাম পূর্ণ হইল। মামীম লিখিলেন যে, তাহার স্বামীর বসত ভিটাখানি বাদে আর সমস্ত ঘর দরজা তৈজসপত্র লেপকাথা ইত্যাদি সিকি মূল্যে বেচিয় দাখিঠাকুরাণী একদল তীর্থযাত্রীর সঙ্গ লইয়াছেন। শুনিয়া অত্যন্ত স্থপী হইলাম । তখন প্রয়াগের কাছাকাছি একটা জায়গায় বসন্ত ও বিসূচিক রোগের প্রতিকারের উপায় সম্বন্ধে বড় বক্তৃতা করিয়া ফিরিতেছিলাম। প্রয়াগে কুম্ভ মেলা আরম্ভ হইয়াছে, মহামারীর অত্যন্ত প্রাদুর্ভাব ; সরকার বাহাদুর অজ্ঞ জনসাধারণকে সতর্ক করিবার জন্য আমাকে পাঠাইয়াছেন। অবকাশ আদৌ ছিল না । এই সময় দশটি বিভিন্ন পোষ্ট্রপিসের ছাপ খাইয়া একখানি খামের চিঠি আসিয়া পৌছিল । পড়িলাম—- দাখিঠাকুরাণী প্রয়াগে তাহার সঙ্গে দেখা করিতে লিথিয়াছেন । শেষের দিকে কোথাও মরিলে হাড় ক’খানি গঙ্গায় দিবার জন্য সেই পুরাতন অনুরোধ, তাহার পরের ছত্রগুলি ধ্যাবড়াইয়া গিয়াছে—কিছু বোঝা গেল না। প্রয়াগ হাট চৌবাঘ নয়, তাহ সম্ভবত দাথিঠাকুরাণী জানিতেন না । বুঝিলাম, ঠাকুরাণীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়াও সম্ভব নয়। তথাপি পূর্ণমনস্কাম বুদ্ধার উল্লাস দেখিতে বড় আগ্রহ হইল । কোন মতে যদি সন্ধান করিতে পারি ভাবিয়া প্রয়াগে চলিলাম । সমস্ত দিন ঘুরিয়া নিষ্ফল হইয়া ফিরিতেছি এমন সময় চৌবাঘার সাধন মিস্ত্রির সঙ্গে অকস্মাৎ সাক্ষাৎ হইল। আমাকে দেখিয়। সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করিয়া সে কহিল, “ভাল হ’ল ডাক্তার দাদা-কয়ট মাল খালাস ক’রে দিতে হবে।" সে কথায় কান না দিয়া বুড়ীর কথা জিজ্ঞাসা করিলাম । “আঞ্জে তেনারাইতে মাল— তিনি তে ওলাউঠে৷ হয়ে—” ক্ষণিকের মধ্যে দাথিঠাকুরাণী যেন চক্ষের সম্মুখে জীবন্ত হইয়া উঠিলেন, শুনিলাম বেণুরনে প্রচ্ছন্ন একটি কুটীরের ছিন্ন শয্যায় শয়ান এক বৃদ্ধা অশ্রু সজল উৎসুক দৃষ্টিতে আমার দিকে চাহিয়া যেন 萄
পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪০১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।