سيوفاسو নক্স-ই-শপুর। চিত্রাবলীর অবস্থানের প্রাকৃতিক দৃষ্ঠ দিয়ে জলের স্রোত চলেছে, দুটো একট। সুন্দর শান বাধান ছোট পুকুর বা চৌবাচ্চাও আছে, মাঝে মাঝে দু-চার জায়গায় ফুলের টব বা কেয়ারী সাজান, সেগুলির ফুলের রংএ সমস্ত বাগানের সজ্জায় একটা সামঞ্জস্য এনে দেয় . কিন্তু বাগানের ভিতরের শোভা বাইরের থেকে দেখবার উপায় নেই, সবই উচু মাটির দেওয়ালে ঘেরা। শিরাজে শ্ৰীযুক্ত আবদুল্লা খা নায়ক নামে একজন নূতন স্বদেশী বন্ধু পাওয়া গিয়েছিল এবং শিরাজে দেখাশুনা যা কিছু এরই সৌজন্যে হয়। এর বাড়ি গুজরাটে, কিন্তু অনেকদিন কলকাতায় মহারাজ মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দীর কাছে কাজ করেছিলেন, এবং সেই দাতাকর্ণেরই সাহায্যে বিদেশে এসে নিজের ব্যবসা ( মোটরবাহিনী ) প্রতিষ্ঠা করেন। - শিরাজের পথে-ঘাটে স্ত্রী-পুরুষ সমানে চলে বেড়ায় । পর্দার ব্যাপারটা এখানে আছে, কিন্তু ভারতীয় মুসলমানদের তুলনায় ঢের কম। হেঁটে, খোলা গাড়ীতে দলে দলে মেয়ের বেড়ায়, যদিও সকলেরই মাথা থেকে ইটু পর্যস্থ, মুখ বাদে, সেই এক কালে চাদরে ঢাকা। চাদরটা ভ্রর উপরে কাল ফিতে দিয়ে বাধ, সেই ফিতের সঙ্গে একটুকরো লম্ব চতুষ্কোণ ঘোড়ার বালাধী বোন জাল, বেনের লোকানের ঝাপের মত ঝুকিয়ে আঁটা। এই ঝাপের নীচে ভ্ৰ, নাক মুখ ঠোট সবই দেখা যায়, ঢাকা থাকে শুধু কপাল ও চিবুক । রূপসী ও রসিক বলে শিরাজ-ললনার খ্যাতি আছ । নূতন রাজার আমলে দেশের অনেক উন্নতি হয়েছে বটে কিন্তু পোষাক-পরিচ্ছদ বেজায় একঘেয়ে হয়ে গেছে। একে তো স্ত্রীলোকের পোষাক সবই ওই কাল চাদরে ঢাকা, আবার পুরুষ মাত্রেই এক রকম টুপি ( কোল পাহলবী—ফ্রেঞ্চসৈনিকের কেপীর মত ) ও ইয়োরোপীয় কোটপাতলুন পরতে বাধ্য, কাজেই বেশভূষার বাহার দেশ থেকে একেবারে চলে গিয়েছে। বড় রাস্তার ধীরে ধারে দোকানপাটও বিদেশী ছাদ ধরতে আরম্ভ করেছে, কাজেই এদেশের বাইরের আকারপ্রকারের বৈচিত্র্য ক্রমে লোপ পাবে বলে মনে হয় । শিরাজে প্রথমে ইরাণের বুলবুল এবং ইরাণী সঙ্গীতের সঙ্গে আমাদের পরিচয় হ’ল। বুলবুল হার্ট পৰ্ব্বতের
পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।