পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ጭቆ S99āు হয়ত বৃথা, হয়ত কেহ না বলিতেই সহজে সে সব বুঝিয়াছে। বুলিলেন, “তোর জিনিস গোছানো শেষ হয়ে গিয়েছে ইলু ?” “এই হয়ে গেল মা,” বলিয়া ঐন্দ্রিলা পাট করা শাড়ীজামাগুলি ক্ষিপ্ৰহস্তে স্বচ্‌কেসের মধ্যে ঠাসিয়া রাখিতে লাগিল । বাসষ্ঠী-রঙের বেনারসীটি গত পূজায় তাহার বাবা তাহাকে উপহার দিয়াছিলেন। সেটিকে এক মুহূৰ্ত্ত কোলে লইয়৷ রহিল। এই কাশ্মীরী শালটি এবার জন্মদিনে র্তাহার আশীৰ্ব্বাদ স্বরূপ পাওয়া, অন্যমনেই তাহার উপর সস্নেহে সে হাত বুলাইল। এই মুক্তার কষ্ঠ ম্যাট্রিকে বৃত্তি পাওয়ার পর পিতার পাঠানে। পারিতোধিক। এই গোল্ডটিম্বর শাড়ীটি সে যতবার পরে তাহার বাবা তাহাকে রাণী-মা বলিয়া ছাড়া সম্বোধন করেন না। এগুলিকে এতদিন যে স্নেহ-গৰ্ব্বিত আনন্দের চোখে সে দেখিয়াছে অতঃপর আর তাহ দেখিতে পাইবে না । ভাবিতে ভাবিতে আবার ঐন্দ্রিলার চোখ অশ্রুসজল হইয়া আসিল । ঠোঁটের কোণ-দুটা অবাধ্য হইয়৷ কাপিতে লাগিল, গলার কাছটা কিসে যেন চাপিয়া ধরিতেছে। হেমবাল দাড়াইয়াছিলেন, কন্যার অবস্থা বুঝিতে পারিলেন। তাহার জিনিস গোছানোতে সাহায্য করিবার ছলে নিজেও একটা স্থটুকেস টানিয়া লইয়া তাহার পাশে বসিয়া পড়িলেন। যেন কিছুই হয় নাই, এমনইভাবে কথা পাড়িলেন । বলিলেন, “হ্যারে, কলকাতায় কি এখনই শীত প’ড়ে গিয়েছে ?” ঐন্দ্রিলা নিজেকে অনেকখানি সম্বরণ করিয়াছিল, মাথ৷ নাড়িয়া জানাইল, না । “পূজোর পরেও গরম থাকে ?” ঐন্দ্রিলা মাথা দুলাইয়া জানাইল, হ্যা। “কখন থেকে তা হ’লে শীত স্বরু হয় ?” ঐন্দ্রিলা এ কথার কোনও জবাব দিল না। হেমবালা বলিলেন, “কথা বলছিস না কেন ? কি হয়েছে তোর ?” একটা টোক গিলিয়া ঐন্দ্রিলা কষ্টে উচ্চারণ করিল, “কই কিছু ত হয়নি।” “বীণা এখন আর কলেজে যায় না ?” “a p" “মেয়েকে নিয়ে সময় পায় না বুঝি ?” “,ti po “কে মেয়েকে দেখে, ও নিজেই ?” “হু, আয়াও আছে।” “কি ব’লে ডাকে মেয়েটিকে ? কতবার যে তুই বলেছি, কিন্তু কেমন ভুলে যাই ।” “মন্দিরা।" “মন্দির, ঐটেই ওর আসল নাম ত নয় ? ভাল নামটা যেন কি ? অ—” “অপর্ণা ।” “বীণ আবার কেন বিয়ে করে না ? ওদের সমাজে ত বাধ নেই ।” “ঐন্দ্রিল নীরব রহিল । “তোর মামা ওর বিয়ের কথা কিছু বলেন না ?” “কখনও ত শুনিনি কিছু বলতে ” “ ওর শ্বশুরবাড়ীর লোকের কেউ আসে-টাসে ? খোজ-খবর নেয় ?” “ੇਲ੍ਹ " “বীণ। যদি আবার বিয়ে করে, ওর। কেউ আপত্তি করবে না বোধ হয় ?” “ওরা কেন আপত্তি করতে যাবে?” এমনই করিয় ঐন্দ্রিলার সুন্টুকেস গোছানো শেষ হইতে হইতে অনেক কথাই হইল। শেষ অবধি ঐন্দ্রিলার মনের ভারট। অনেকটাই লঘু হইয় গেল। তাহার কথার জড়তা কাটিয়া গেল, স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়াই নিজেও দুএকটা কথা সে বলিয়া ফেলিল। ইহাতে হেমবালা যতটা খুশী হইলেন সে নিজে তাহা হইতে কিছুমাত্র কম খুশী হইল না। কোনো জিনিস লইয়াই বাড়াবাড়ি করাটাকে সে আশৈশব অপছন্দ করে । আজ শেষ-অবধি অবাধ্য অশ্রুকে সে যে শাসন করিতে পারিল ইহাতে মনে মনে আরাম অনুভব না করিয়া পারিল না। হেমবালা কহিলেন, “আমি দেখছি ওদিকে কতদূর হ’ল, তুই চট করে স্নানটা সেরে নে।” ঐন্দ্রিলার স্নান শেষ না-হইতেই বড় বড় দুইটি রূপার