পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ ক্ষেস্তির সঙ্গে ঐন্দ্রিলাও উঠিয়া পড়িয়াছে। নীচে কলঘরে টুরুত্বরং করিয়া সারেঙের ঘণ্টা বাজিতেছে। গম্ভীর সিটির শব্দের স্পন্দনে কাঠের ডেক থকৃথর করিয়া কঁাপিয়া উঠিল । ডেকের রেলিঙের উপর ভর দিয়া ঝু কিয় ঐন্দ্রিল একদৃষ্টি পিতার দিকে চাহিয়া আছে। অন্ধকার কেবিনটার মাঝখানে একাকী দাড়াইয় সহস হেমবালা উপলব্ধি করিলেন, এই শেষ ! এ জীবনেই আর কখনও দেখা হইবে কি-না, কে জানে ? চকিতের মত তাহার বিবাহিত-জীবনের বিগত তেইশট বৎসর ছোটবড় পদ্মাবত কাব্য এবং পদ্মিনীর অনৈতিহাসিকভা br> সহস্র আনন্দবেদন জয়-পরাজয় বিরহমিলনের স্মৃতি লইয়। তাহার মনের চতুদিকে ভিড় করিয়া আসিল । নিজেকে লইয়া পলাইবার পথ একমুহূর্তের জন্য রুদ্ধ হইল। দুইহাতে কেবিনের জানাল মেলিয়া ধরিয়া সাগ্রহ সোৎস্থক দৃষ্টিকে তীরের দিকে প্রেরণ করিলেন, কিন্তু কিছুই দেখিতে পাইলেন না, উদ্বেলিত অশ্রু আসিয়া তাহার দৃষ্টিপথ রুদ্ধ করিল জাহাজ দ্রুতবেগে ঘুরিয়া যাইতেছে। পদ্মাবত কাব্য এবং পদ্মিনীর অনৈতিহাসিকতা শ্ৰীকালিকারঞ্জন কানুনগো, এম-এ বর্তমান শতাব্দীর ঐতিহাসিক গবেষণায় কাব্য-নাটকের নায়িকাগুলির উপর যেন শনির দৃষ্টি পড়িয়াছে। আধুনিকের বলেন—ইহার"কাল্পনিক, ইতিহাসে তাঁহাদের অস্তিত্ব সম্বন্ধে কোন প্রমাণ নাই ; প্রাচীনের বলেন, ইহার - থাটি ঐতিহাসিক—কল্পনাপ্রসূত নহেন। ১৩৩৭ সালের ফাল্গুন সংখ্যায় “পদ্মিনী-উপাখ্যান ও তাহার ঐতিহাসিকতা” শীর্ষক একটি প্রবন্ধে আমি পদ্মিনী-উপাখ্যানের কোন ঐতিহাসিক ভৃিত্তি নাই বলিয়া প্রমাণ করিবার চেষ্ট করিয়াছিলাম। গত চৈত্র সংখ্যায় শ্রযুক্ত নিখিলনাথ রায়ের ‘পদ্মাবতীর ঐতিহাসিকতা” নামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হইয়াছে। ইহাতে রায়-মহাশয় প্রমাণ করিতে চাহিয়াছেন, ‘পদ্মাবতী একখানা ঐতিহাসিক কাব্য ; পদ্মিনী, গোর, বাদল, ডুলী-বেহার, আলাউদ্দীনের কারাগার সবই ঐতিহাসিক। এক্ষেত্রে উভয় পক্ষের যুক্তিগুলির পুনরায় বিচার করা প্রয়োজন। নিখিলবাবু কবি আলাওলের "পদাবতি পুথি” অবলম্বন করিয়া মূল হিন্দী পদ্মাবতের ঐতিহাসিকতা প্রমাণ করিবার চেষ্টা করিয়াছেন ; তিনি “পদ্মাবতের” কোন হিন্দী সংস্করণ পড়িয়াছেন কি-না, প্রবন্ধ পাঠে বুঝা যায় না। তাহার প্রবন্ধে উদ্ধৃত অংশে মূল ও অম্বুবাদে যে ভুলগুলি দেখা যায়, রামচন্দ্র শুকুল সম্পাদিত ও নাগরীপ্রচারিণী সভা হইতে প্রকাশিত ‘পদ্মাবতে'র (জ্যায়সী গ্রন্থাবলী) সাহায্যে তাহা সংশোধন করিতে চেষ্টা করিব। দ্বিতীয়তঃ, নিখিলবাবু বৰ্ত্তমান সময়ে রাজপুত ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা প্রামাণ্য গ্রন্থ মহামহোপাধ্যায় গৌরীশঙ্কর হীরাচাদ ওঝার ‘রাজপুতানেক ইতিহাসের উল্লেখ পৰ্যন্ত করেন নাই। তিনি শুধু টডের রাজস্থান, তারিখ-ই-ফিরিশতা, এবং পাথরে লেখা কল্পিত ঘটনা পূর্ণ রাজপ্রশস্তি’ কাব্যের সাহায্যে “পদ্মাবতের ঐতিহাসিকতা”র কথা লিখিয়াছেন। পদ্মিনীউপাখ্যান-সম্পর্কে এগুলির ঐতিহাসিক মুলা কতটুকু তাহাও আমরা গৌরীশঙ্করঞ্জীর গবেষণামূলক হিন্দী ইতিহাস অবলম্বনে আলোচনা করিব। কোন অৰ্ব্বাচীন লেখকের কলমের এক-খোচায় পন্ধিনীর মত নায়িক ইতিহাস হইতে সুরিয়া পড়িবেন, ইহা কাহারও অভিপ্রেত নহে । এ-সম্বন্ধে যত বিচার হয় ততই ভাল। "পদ্মাবতীর ঐতিহাসিকভা” প্রবন্ধে নিখিলবাবু ভূমিকায় বলিয়াছেন, পাবত ঐতিহাসিক কাৰ্য বট