পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$('R প্রবাসী ১৩৪২ বাঙালীর একান্ত আবশ্যক দ্রব্যাদি মহাত্মা গান্ধী যে সমগ্রভারতীয় গ্রামোন্নতি সমিতি প্রতিষ্ঠিত করিয়াছেন, তাহার বঙ্গীয় শাখার কাজের ভার দেওয়া হইয়াছে ডক্টর প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষকে । বঙ্গের লোকদের– এবং তাহা বলিলে গ্রামপ্রধান বঙ্গে প্রধানত: গায়ের লোকদিগকেই বুঝায়—একান্ত আবশ্বক কি কি, সে বিষয়ে সম্প্রতি তিনি এসোসিয়েটেড প্রেসের মারফং নিজের মত জানাইয়াছেন। খাদ্য সম্বন্ধে তিনি বলেন, আমাদের দুঃখ তিন রকমের । জমীর উর্বরতা কমিয়া যাওয়ায় বঙ্গে যথেষ্ট খাদ্য উৎপন্ন হয় ন, যাহ উৎপন্ন হয় তাঙ্গ ঠিকৃমত ব্যবহৃত হয় না, এবং তাহার কতক অংশ আবার আমরা বাঙ্গির হইতে এইরূপ অনেক জিনিষ কিনিবার জন্য বঙ্গের বহিরে বিক্ৰী করি, যাহা আমরা নিজেরা উৎপন্ন করিতে পারি ও আমাদের করা উচিত । জমীর উর্বরতা বুদ্ধি ও তাহা হইতে যথেষ্ট খাদ্য উৎপাদন কঠিন, বৃহৎ সমস্ত, কিন্তু তাহারও সমাধান ক্রমে ক্রমে করিতে হইবে । কিন্তু উৎপন্ন খাদ্যের যথাযোগ্য ব্যবহার তত বড় ও কঠিন সমস্ত নহে। সমিতির কৰ্ম্মীরা তাহাতে মন দিতেছেন, র্তাহার একবারও পালিশ না-করা চালের ব্যবহার, চিনির পরিবৰ্ত্তে গুড়ের ব্যবহার, এবং ঘানির তেলের ব্যবহার সমর্থন ও প্রচলনের চেষ্টা করিতেছেন । সিদ্ধ এবং এক বা একাধিক বার পালিশ-করা চাল ব্যবহার করিলে তাহার অনেক পুষ্টিকর অংশ নষ্ট হয়। তম্ভিয়, ভাতের ফেন বা মাড় গালিয়া ফেলায় অনেক পুষ্টিকর অংশের অপচয় হয়। ইহা প্রফুল্ল বাবু গণনা দ্বারা দেখাইয়াছেন। পালিশ না-করা আতপ চালের ভাত ফেন না ফেলিয়া দিয়া খাইলে চাল হইতে যতটা পুষ্টির সম্ভাবনা তাহ পাওয়া যায়। - চিনি-বিশেষতঃ খুব শাদা পরিষ্কার দানাদার চিনি— পুষ্টিকর খাদ্য হিসাবে গুড়ের চেয়ে অনেক নিরুষ্ট। অতএব পরিষ্কার ভাল গুড়ই চিনির বদলে ব্যবহার্ষ্য । আকের গুড় ছাড়া খেজুর-গুড় এবং তালের গুড়৪ আরও বেশী করিয়া উৎপাদন ও ব্যবহার করা উচিত। তালের গুড় বঙ্গে উৎপন্ন কম হয়, কিন্তু অনেক জায়গায় হইতে পারে। অনেক জেলায় খেজুরগাছ হয় কিন্তু লোকে তাহা হইতে গুড় প্রস্তুত করে না। রাত্রে ও দিনে উভয় সময়ে সংগৃহীত খেজুর-রস হইতে কি প্রকারে ভাল গুড় হইতে পারে, প্রফুল্ল বাবু তাহারও আভাস দিয়াছেন। সমিতির লোকেরা তসরের কাপড় আরও যাহাতে উৎপন্ন ও চলিত হয়, সেদিকে দৃষ্টি দিয়াছেন। চামড়া কষ করিয়া তাহা হইতে নানাবিধ পাদুকা নিৰ্ম্মাণ দ্বারা মুচিদের আয় বাড়ান এবং স্থানীয় লোকেদের পাদুকা জোগানও তাহাদের উদ্দেশু। রিপুরা ও ফরিদপুর জেলায় ঘানি চালাইবার বিশেষ চেষ্টা করা হইতেছে । ঢাকার একটি গ্রামে ( বোধ হয় আড়িয়লে ) এক জন বিজ্ঞান-গ্র্যাডুয়েট হস্তমিশ্মিত কাগজের উন্নতি সাধনের চেষ্টায় আছেন। রেশম সম্বন্ধেও তথ্য সংগৃহীত হইতেছে। হাতে পাটের স্বতা ও দড়ি কাটিয়া তাহা হইতে হাতের তাতে চট বুনিবার ও থলি সেলাই করিবার পরীক্ষাও হইতেছে । স্থরুলের শ্রীনিকেতন হইতে বীরভূম জেলার অস্তগত নিকটবৰ্ত্তী কয়েকটি গ্রামে গ্রামোন্নতির যে নানা চেষ্ট হইতেছে এবং যাহার আরম্ভ মহাত্মা গান্ধীর সমিতি স্থাপনের বহুপূৰ্ব্বে হইয়াছে, তাহার খবর প্রফুল্ল বাৰু সবিশেষ জানেন কি-না বলিতে পারি না। কিন্তু আশা করা যাইতে পারে, যে, মহাত্মা গান্ধীর সহকৰ্ম্মী ও অমুকৰ্ম্মীরা গ্রামে গ্রামে যে-সব ভাল কাজে হাত দিয়াছেন ও দিবেন, তাহারা এরূপ মনে করিবেন না, যে, তাহারাহ ঐসব কাজের গোড়াপত্তন করিতেছেন। বঙ্গে এরূপ এবং অন্তবিধ গ্রামোন্নতিবিধায়ক কাজ আগে হইতেই চলিয়া আসিতেছে। সকলের মধ্যে পরস্পরের সহযোগিতা ও পরস্পরের নিকট হইতে শিখিবার ইচ্ছা বাঞ্ছনীয়। ভারতে ও বঙ্গে তৈলবীজ ও উদ্ভিজ্জ তৈল লওনের রয়্যাল সোসাইট অব আর্টসের ভারতীয় শাখায় গত ২৭শে জুন ডক্টর শ'এর লেখা ভারতীয় তৈল-বীজ বিষয়ক একটি প্রবন্ধ পঠিত হয় এবং তাহার আলোচনা হয়। তাহাতে অনেক জ্ঞাতব্য কথা আছে। উদ্ভিজ্জ নানাবিধ তৈল হইতে উদ্ভিজ্জ দ্বী, চর্বি প্রভৃতির উৎপাদনে, গবাদি