స్ప్రిఫ్చి প্রবাসী SNరి&ఆ হইয়াছে, সেই শঙ্করাচাৰ্য্যও আবাল্য সন্ন্যাসী ছিলেন। শঙ্কর অবগুই বুদ্ধের দৃষ্টাস্তের দোহাই দেন নাই; তার পক্ষে "যেদিন বৈরাগ্য হইবে সেদিনই সন্ন্যাসী হইতে পারিবে,”—এই জাবাল-শ্রতিই যথেষ্ট ছিল । কিন্তু এই জাবাল-শ্রুতির বিরুদ্ধে এত শাস্ত্রের বচন রহিয়াছে যে, ইহাকে একটা নূতন মতবাদের ক্ষীণ সমর্থন ভিন্ন আর কিছুই বলা চলে না। স্বতরাং এ সিদ্ধান্ত করা বোধ হয় অন্তায় হইবে না যে, যে-কোন বয়সে এবং যে-কোন অবস্থা হইতে ধারা সন্ন্যাসী হইয়াছেন, তার ঠিক শাস্ত্র অনুসরণ করিয়া তাহা হন নাই । শাস্ত্রমতে সন্ন্যাস দ্বিজাতির চতুর্থ আশ্রম, প্রথমও নয়, দ্বিতীয়ও নয় ; আর, এই সন্ন্যাসে তারই অধিকার অাছে যিনি বাকী তিনটি আশ্রম যথাক্রমে অবলম্বন করিয়াছেন । এ কথা অস্বীকার করা চলে না যে, এই নিয়মের ব্যতিক্রম হিন্দুসমাজে অনেক দিন হইল চলিয়া আসিতেছে। এখনও অনেক—বহু লক্ষ—হিন্দু সন্ন্যাসী ভারতে রহিয়াছে যাহারা সন্ন্যাস ছাড়া আর কোন আশ্রমই অবলম্বন করে নাই। অর্থাৎ যাহারা কখনও বিস্তা অর্জন করে নাই, কখনও গৃহীর কর্তব্য যজ্ঞাদি ও অতিথি-সেবা ইত্যাদিও করে নাই, যাহারা বনে বাস করিয়া কঠোর তপস্যা করে নাই—অথচ শুধুই সন্ন্যাসী ! সংসারের বন্ধনে ইহারা পড়ে নাই, কামিনী-কাঞ্চন ত্যাগ করিয়া চলিয়াছে,—ইহাই ইহাদের বড় গৰ্ব্ব ! এবং কোন বিদ্যা অর্জন করে নাই, আর, অর্থের ব্যবহার করিলেও অর্থ উপার্জন করে নাই,--ইহাই ইহাদের একটি বড় গুণ। হিন্দুসমাজে ইহাদের সংখ্যা কম নয়, কিন্তু হিন্দুর শান্ত্র ইহাদের অস্তিত্ব অনুমোদন করে বলিয়া ত মনে হয় না ! আরও একটা কথা। বুদ্ধের পর তাহার ধৰ্ম্ম যাহারা গ্রহণ করিল তাহাঁদের ভিতর বিহার ও চৈত্যের প্রতিষ্ঠা আরম্ভ হইল। এই সব বিহার নিতাস্তই পর্ণকুটীর ছিল না ; যেখানে ইঙ্গুণী-তৈলের প্রদীপ জলিত এবং যেখানে স্নানান্তে আশ্রমবাসীরা গাছের ডালে আর্দ্র বন্ধল শুকাইতে দিত, এ সব বিহার সে-রকম দীনভাবাপন্ন ছিল না। সারনাথ প্রভৃতি যে-সব বিহারের ভয়াবশেষ আবিষ্কৃত হইয়াছে, তাহা হইতে বুঝা যায় যে, অনেক সময় এই সব বিহার স্বাজোচিত অট্টালিকার শোভা বহন করিত। অবশু এই সব বিহারে র্যাহারা বাস করিতেন, তাহারা অ-গৃহী অর্থাৎ সন্ন্যাসী ছিলেন ; কিন্তু তাহারা বাস করিতেন ইষ্টক ও প্রস্তর নিৰ্ম্মিত বিরাট আটালিকায়। সন্ন্যাসীর পক্ষে এই প্রকার সৌধে বাসও হিন্দুর আশ্রম-ধর্মের অননুমোদিত। সন্ন্যাস চতুর্থ আশ্রম। তাহার পূৰ্ব্বে বনে বাস বিহিত হইয়াছে। ধর্শ্বাম্বেষী কিংবা মুক্তিকামী যখন সংসার ত্যাগ করিবে, তখন আর তাহার সৌধে বাস করা শাস্ত্র অনুমোদন করে নাই। বনবাসের এবং সন্ন্যাসের ষে বিধি মঙ্গ-যাজ্ঞবল্ক্য দিয়াছেন, তাহ অনুসরণ করিতে হইলে অনেক সাধুবাবা'র আশ্রমই আর টিকিতে পারে না। বনবাসী গ্রাম হইতে সামান্ত আহাৰ্য্য সংগ্ৰহ করিয়া খাইবে ; আট গ্রাসের বেশী খাইবে না; ফল, মূল, পত্র, শাক, এই সবই তাহার আহাৰ্ষ্য হইবে ; সে তপশু দ্বারা শরীরকে শোষিত করিবে ; বর্ষায় আকাশতলে শয়ন তাহার কৰ্ত্তব্য, আর, হেমন্তে আর্দ্র বস্ত্রে থাকা (বিষ্ণু-সংহিত, ৯৪ ও ১৫ অধ্যায়)। ধৰ্ম্মশাস্ত্রে কোথাও দেখা যায় না, যে, বনবাসী পাকা কোঠ-বাড়িতে থাকিবে, বিশুদ্ধ গব্যস্তৃত এবং ঘন গোদুগ্ধ ব্যবহার করিয়া দেহটিকে পুষ্ট করিবে, কাবুলী মেওয়া এবং বিলাতী ‘রক্ষিত ফল ভক্ষণ করিবে, অস্থখ হইলেই বড় বড় চিকিৎসককে তলব করিবে । সন্ন্যাস বা চতুর্থ আশ্রম সম্বন্ধে শাস্ত্রের নিয়ম আরও কঠোর। এ সময়টা মৃত্যু এবং মোক্ষের প্রতীক্ষার সময়। এ সময়ে যতি ভিক্ষাদ্বারা জীবন যাপন করিবে। সায়াহ্নে অলক্ষিত ভাবে গ্রামে ভিক্ষার জন্ত যাইবে । ভিক্ষা না পাইলে ব্যথিত না হইয়া ফিরিয়া আসিবে। সাত বাড়ির বেশী ভিক্ষার জন্ত গমন করিবে না। মৃন্ময়, দারুময়, কিংবা বংশ ও অলাবুর পাত্র ছাড়া অন্ত কোন প্রকার পাত্র ব্যবহার করিবে না। বৃক্ষমূলে কিংবা শূন্তাগারে কিংবা দেবগৃহে কিংবা গ্রামের প্রাস্তে কোথাও শয়ন করিবে । কোথাও দীর্ঘকাল বাস করিবে না । একলা থাকিবে। সামান্ত আচ্ছাদন মাত্র ব্যবহার করিবে। জীবনে এবং মরণে সমষ্টি হইয় যোগাভ্যাস ও তত্ত্বাভ্যাস করিবে। মৃত্যু আসিয়া দেহের বন্ধন ছিন্ন না-করা পৰ্যন্ত এই ভাবে সময় কাটাইবে। চতুর্থ জাপ্রমের ইহাই বিধি । মঙ্গ, বাজ্ঞবল্ক্য, বিষ্ণু, বশিষ্ট প্রভৃতি সংহিতা আমরা এই বিধিই দেখিতে পাই।
পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২০০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।