পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আগ্রহীরণ সূৰ্য্যন্ত পৌছাইয়া দিয়া বাতি নিবাইয়। তবে বিদায় হইল। মেয়ের যত্নে স্বরেশ্বরের মন একটু নরম হইল বটে, কিন্তু যতটা হইতে পারিত, ততটা হইল না এই ভাবিয়া যে সমস্তটাই যামিনীর শেখান, এবং ইহার তলে তাহার একটা মতলব আছে । পরদিন সকাল-সকাল স্নান করিয়া কাপড় পরিয়া মমতা প্রস্তুত হইয়া বসিয়া রহিল। যামিনী তাহার উৎসাহ দেখিয়া গসিতে লাগিলেন । র্তাহার সকালে অনেক কাজ, সে-সব শেষ না করিয়া তিনি নড়িতে পারিবেন না । বিকালের সব ব্যবস্থাও ভাল করিয়া বিন্দু-ঠাকুরবিকে বুঝাইয়া দিয়া যাইতে হইবে, ন হইলে মুরেশ্বর আর রক্ষা রাখিবেন નૈ । । সভায় ত যাইবেন, কিন্তু সেখানে গিয়া কি দিবেন, কি ভাবে দিবেন ইহাই সারা সকাল যামিনী ভাবিতেছিলেন । কিছু ভালরকম না দিলে মমতা অত্যন্তই মুষড়াইয়া পড়িবে, এবং না দিলে যাইবারই বা প্রয়োজন কি ? যামিনীর গহনাগাটি নিজস্বও অনেক আছে, যাহা তিনি বাপের বাড়ি হইতে বা অন্যত্র হইতে উপহার পাইয়াছিলেন । তাহ দান করিবার অধিকার তাহার যথেষ্টই আছে, কিন্তু মুরেশ্বর তাহা বুঝিবেন না, এবং জানিতে পারিলে মহা কোলাহলের সৃষ্টি করিবেন। গহনা দিলে ধরা পড়িবার সম্ভাবনা বেশী, কারণ তাহ চেনা যায়। টাকা দেওয়া সহজ, কারণ টাকার গায়ে নাম লেখা থাকে না। তবে টাকা দিবার অধিকার তাহার নিজের কতটা আছে, তাহ যামিনী বুঝিতে পারিতেছিলেন না । সাধারণ ভাবে স্বামীর অর্থে স্ত্রীর অধিকার মাছে বটে, কিন্তু তাহার আর সুরেশ্বরের সম্বন্ধ সাধারণ স্বামী-স্ত্রীর মত নয়। টাকা তাহার কাছে থাকে যথেষ্টই, টরেশ্বর হিসাব কিছু বোঝেন না, কাজেই টাকাকড়ি নিজের *াছে রাখিতেও চান না । ভাবিয়া ইহার কিছু কিনারা হইল না। কোন অন্যায়

  • যে ব্যয় করিতেছেন না, ইহাই যথেষ্ট স্থির করিয়া যামিনী -

স্বপশেষে এক তাড়া নোটুই বাহির করিয়া লইয়া হাতব্যাগের ভিতর রাখিলেন, এবং স্নানাদি করিয়া মেয়েকে লইয়া যাত্রা করিলেন। স্বরেশ্বর নিজের গুইবার ঘরে বসিয়া ছিলেন, মমতাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “খোকার নেমস্তৃন্ন নেই ?” وتاسسسست جة জন্মস্বত্ব "Strసి মমতা বুদ্ধি করিয়া বলিল, “আজ খালি মেয়েদের ব্যাপার বাবা, তা ছাড়া খোকাকে মামীম ডাকলেও ও যেতে চায় না।” স্বজিত বাপের পছন্দগুলি অনেকটাই উত্তরাধিকারসূত্রে লাভ করিয়াছে। মা বা মায়ের আত্মীয়স্বজন কাহারও প্রতি তাহার প্রীতি নাই। স্বরেশ্বর ইহাতে ছেলের উপর খুলীই, তবে সে যে পড়াশুনায় একেবারে মন দেয় না, ইহা র্তাহার ভাল লাগে না । সত্য বটে তাহাকে চাকরি করিয়া খাইতে হইবে না, কিন্তু আজকাল শুধু টাকার গুণে মানুষের কাছে খাতির পাওয়া যায় না। তাহারা সামনে খোশামোদ করে বটে, কিন্তু আড়ালে বিদ্রুপ করে। সুরেশ্বরের আগে তাহদের বংশে পড়াশুনার বেশী রেওয়াজ ছিল না, কিন্তু তাহারা দুই ভাইই কলেজের পড়া প্রায় শেষ করিয়াছিলেন। ছেলেট যদি ম্যাটিকও পাস না করিতে পারে, তাহা হইলে তাহার নাম থাকিবে না। যামিনীর ইহাতে যথেষ্টই ক্রটি আছে, তিনি ছেলের পড়াশুনা দেখেন না কেন ? “সবাই আছে নিজের তালে, ছেলেট যে বয়ে যেতে বসেছে সেদিকে খেয়ালই নেই,” বলিয়া তিনি বিরক্তিতে মুখ বিকৃত করিয়া পাশ ফিরিয়া একখানা খবরের কাগজে মন দিলেন । ( ১৬ ) প্রভা বাহির হইয়া আসিল ননদকে অভ্যর্থনা করিতে, লুসি ত ছুটিয়া আসিয়া মমতাকে দুই হাতে জড়াইয়াই ধরিল। বলিল, “বাপরে বাপ, তোমার আর দেখা পাবারই জো নেই, একেবারে ডুমুরের ফুল।" মমতা বলিল, “আর তুমি বুঝি রোজ রোজ আমাকে দেখা দিতে যাও ?” - . . লুসি বলিল, “আমার কি গাড়ী আছে তোমার মত ?” মমতা বলিল, “আহা গাড়ীখানা যা আমার : তা আর বলে কাজ নেই। একবার চড়ে কলেজে যাই, এইমাত্র গাড়ীর সঙ্গে আমার সম্পর্ক।”- 2 . . . . . - প্রভা বলিল, “আচ্ছ, এখন গাজীর তর্ক থামিয়ে জানট