পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

하 সলিয়াই বোধ হয় । বিজনবাবু তাহার উক্ত পুস্তকের ১৪২ পৃষ্ঠায় আরও একটি নূতন কথা লিখিয়াছেন, “ব্রহ্মবাক্ষসের মন্দির (কাম্বোজ ) উল্লেখ বড়ই কৌতুহলোদ্দীপক। ব্ৰহ্মরাক্ষস দেবতা নয়, প্রবাদ অনুসারে একজন ব্রাহ্মণ আত্মহত্যা করিলে তাহার সেই আত্মা ব্ৰহ্মরাক্ষসরূপ ধারণ করে। যতদূর জানা যায় সম্ভবতঃ ভারতের কোন মন্দির এই প্রেতাত্মার প্রতি উৎসর্গ করা হয় নাই কিন্তু ব্ৰহ্মরাক্ষস .কবলমাত্র বাংলার চলিত গল্পে একটি প্রধান ভূমিকা অধিকার করিয়া আছে।” এই ভাবে আমরা আজ দেখিতে পাই দ্বীপময় ভারত ও কন্দোচীন কিরূপভাবে বাংলার সংস্কৃতি দিয়া অনুপ্রাণিত গুইয়াছে। অনেকের মতে এই সংস্কৃতি স্থলপথেও গিয়াছিল এবং ইহা আমরাও বিশ্বাস করি । ডক্টর কুমারস্বামী তাহার Iristory of India and nalonesian Art পুস্তকের ১৬৯ পৃষ্ঠায় ব্রহ্মদেশ সম্বন্ধে লিপিতে গিয়া বলিয়াছেন, “সম্ভবতঃ মৌর্য্যযুগেই ভারতের সৃহিত জলপথে ও স্থলপথে ব্ৰহ্মদেশের যোগাযোগ স্থাপন গুইয়াছিল এবং উক্ত পুস্তকের ১৭২ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে যে গঃ ( Tngaung ) ব্রহ্মদেশের শাসনকৰ্ত্তাদের স্বপ্রাচীন নগর ছিল এবং ইহার ভারতীয় সংস্কৃতি দক্ষিণ হইতে আসে নাচ, মণিপুর এবং আসামের মধ্য দিয়াই এখানে উপনীত গুচয়ছিল ।”

  • {{s}rsia's Solz. History of Indian and Etstern Architecture (GTA °s পৃষ্ঠায় উল্লেখ করিয়াছেন, “ষষ্ঠ শতাব্দীর পূর্বের দক্ষিণ বঙ্গের স্থাপত্য শিল্প সম্বন্ধে আর জানিবার উপায় নাই, এবং এই স্থাপত্য-পদ্ধতিই বহু পূৰ্ব্বেহ পেগু ও প্রোমে উপনীত প্রচয়াছিল ।*

প্রাচীন স্থাপত্যশিল্পে ব্ৰহ্মদেশের মধ্যে পেগানের মন্দিরগুলিষ্ট সমধিক প্রসিদ্ধ। এই সম্বন্ধে ফারওঁসান উক্ত পুস্তকের ৩৬৪ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন, “বঙ্গদেশের বুদ্ধগয়া শরির অনুকরণে ১১৯৮ খ্ৰীষ্টাব্দে নন্দাঙ-মিয়া-মিন্‌ ' Natıdaung Mia Min ) *ýos (Izfanfi বৃহত্তর ভারতে বঙ্গ-সংস্কৃতির প্রভাৰ SSతి ( Mahalaudi ) NfwTH faf...VS FR I NfsgTfG সমচতুভূজাকার এবং ইহার দুই তিনটি শ্রেণীবদ্ধ কুলুল্লীবিশিষ্ট একতলের ভিত্তি খুব উচ্চ। মধ্যে গোলাকৃতি বেদী বাদ রাখিয়া ইহা পিরামিডাকৃতি সমতলবিশিষ্ট মন্দির। এই মন্দিরটির সহিত বুদ্ধগয়া মন্দিরের প্রকৃতিগত সাদৃপ্ত আছে ।” ডক্টর আনন্দ কুমারস্বামীও তাহার IIistory of India and Indonesian Art পুস্তকের ১৭• পৃষ্ঠায় লিথিয়াছেন, “পেগান মন্দিরের স্ফীত ও সমগোলাকার গঠন আমাদের সারনাথ ও পাল-যুগের উৎসর্গীকৃত স্তুপের কথা স্মরণ করাইয় দেয়। নান পায়া ( Nan paya ) ফলকগুলি ও ল্লাং গ্যাং ( Hlaung Gyaung ) মন্দিরে উৎকীর্ণ দশ-অবতারের প্রস্তরমূৰ্ত্তি খাটি ভারতীয় এবং একাদশ শতাব্দীর ব্রোঞ্জ ও বিশেষতঃ প্রস্তর মূর্তিগুলি বঙ্গ অথবা বিহার হইতে আমদানী হইয়াছিল।” আর একটি আশ্চর্য্যের বিষয়, এই সব মন্দিরগাত্রে যে ফ্রেস্কে। চিত্রাঙ্কিত আছে উহার সহিত বাংলার ফ্রেস্কোর একটি সাদৃশ্ব পরিলক্ষিত হয়। ত্রয়োদশ শতাব্দীর পেগানের পদ্মপাণি ও দেবতা ফ্রেস্কো চিত্র আলোচনা করিতে গিয়৷ কুমারস্বামী উক্ত পুস্তকের ১৭২ পৃষ্ঠায় লিথিয়াছেন, “এই ফ্রেস্কে চিত্রাঙ্কণ রীতির সহিত বাংলা ও নেপালের একই প্রকৃতিগত সাদৃশ্ব আছে এবং কেজি বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্ষিত ১৬৪৩ খ্ৰীষ্টাব্দের রঞ্জিত পুথি ( নেপাল ১০১৫ খ্ৰীষ্টাব্দ ), এশিয়াটিক সোসাইটিতে রক্ষিত পুথি ( নেপাল ১৯৭১ খ্ৰীষ্টাব্দ) ১৪৬৪ এবং ১৬৮৮ খ্ৰীষ্টাব্দের কেস্কিজে রক্ষিত পুথি ( বাংলা একাদশ শতাব্দীর বেষ্টিনে রক্ষিত পুথি ) প্রভৃতি বিচার করিলে ইহার প্রমাণ পাওয়া যায়।” ( মন্দিরগাত্রে এইরূপ ধরণে অঙ্কিত ফ্রেস্কো বীরভূমের বহু ভগ্ন মন্দিরে এখনও দেখিতে পাওয়া যায় ) । কিন্তু চতুর্দশ শতাব্দীর প্রারম্ভ হইতেই সমুদ্রযাত্রার বিরুদ্ধে আন্দোলন ও অন্যান্য অনেক রাজনৈতিক বিপ্লবে বাংলার এই বহিঃসংযোগ থামিয়া যাইতে থাকে এবং মুসলমানদের আক্রমণে ইহা সম্পূর্ণরূপে বিপৰ্য্যস্ত হয়।