পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জঞ্জস্থায়ণ खञ्जङद्मन्त्री અરહ ডুবাইয়া ডিষ্ট্রক্ট বোর্ডের রাস্তার উপর দিয়া জলস্রোত একেবারে বাহিরের উঠান অবধি ধাওয়া করিয়াছে। বাধের কোথাও চিহ্নমাত্র নাই, বন্যার জলে সমস্ত একাকার । ক্ষেতে সে বছর এক টিটাও মিলিল না। বছর ঘুরিতে পঞ্চম গোলাটার তলা অবধি নিঃশেষ হইল। জমিদারের তরফ হইতে চেষ্টার ক্রটি নাই। খাল হইতে রশি দুই সরিয়া আসিয়া পর পর দুই সারি নুতন করিয়া বঁধ দেওয় হইল। ফসলও হইয়াছে মন্দ নয়। কিন্তু বর্ষার মাঝামাঝি আবার সেই বিপদ। বাঁধ ভাসিয়া ক্ষেতের মধ্যে নোনাজলের তুফান ওঠে। তার পর জল সরিতে আরম্ভ করে, ধানের চারাও লাল হইয়া মাটিতে পড়িয়া যায়। নায়েব নিশ্বাস ফেলিয়া বলেন সমস্ত কলিকালের ফল রে, বাবা—বামুন কায়েত কৈবৰ্ত্ত সব এক মাদুরে বসে স্থকো টানছে—এক বেঞ্চিতে রেলগাড়ী চেপে কাহ কাহা মুল্লুক ক’রে বেড়াচ্ছে— *বে না? আরও কত হবে— তা বলিয়া খাজনা মাপ হয় না। নায়েব ই ইা করিয়া ওঠেন। ও কথা বলে না বাবার, ও কি একটা কথার মত কথা ? মালেকের মাল খাজনা—বলি, বিঘেয় যখন তিন কাহন ক’রে ফলত, খাজনা কি তখন বেশী দিতে? বরঞ্চ ই-দশ দিনের সময়---কিন্তু তা-ও ত— ঐ কিন্তুটিও বড় সহজ নহে ; কিন্তুর সমস্ত মিটাইতে সিকি বছরের খাজনা চলিয়া যায়। তাই করিয়া কেহ কেহু কিছু সময় লইল। ত্রিলোচনের গোলার তলায় তখনও ধান আছে। রাগে রাগে বাড়ি ফিরিয়া গিয়া ব্যাপারী ডাকিয়া সে গোলার চাবি খুলিয়া দিল । খাজনা শোধ হইল এক রকম । বনবিবিতলা বাঁধের ভিতর দিকে। ভারী জাগ্রত দেবতা। গ্রামন্বন্ধ সকলে মিলিয়া বনবিবির পূজা দিল, ঢাকঢোল বাজিল, অনেক পাঠা পড়িল ।- কিন্তু বনবিবি ঠেকাইতে পারিলেন না। খাল একেবারে ক্ষেপিয়া গিয়াছে। মাচুবে গাঙ বাধিয়া ফেলিয়াছে, ভূধমতী বিশীর্ণ হইয়া ধাইতেছে দিন দিন, ওদিকে পারিল না, খাল এখন সেই আক্ৰোশে ফুল ভাঙিয়, ধানবন ডুবাইয়া প্ৰমত্ত তরঙ্গাঘাতে এই দিক দিয়া প্রতিহিংসা লইতে লাগিয়াছে। পরের কোটালে দেখা গেল, বনবিৰিতলাতেই নৌকা চলিবার মত হইয়াছে, টিলার উপরে হাতখানেক জলের কম নয়, দেবতার স্থান বলিয়াও খাল একটু খাতির রাখে নাই। স্বয়ং বুড়া জমিদার চলিয়া আসিলেন। সঙ্গে সহেরী পোষাক-পরা এক জন লোক। লোকটি গাঙের ধারে ধারে কদিন খুব ঘোরাঘুরি করিল। শেষে ঘাড় নাড়ির রায় দিল, উপায় নাই। পুলে দ্বধমতীর স্রোত আটকাইয়াছে, স্রোত এখন খালের মুখে চলিয়াছে, খাল বড় নদী হইয়া যাইবে । কৰ্ত্ত বলিলেন—কোন উপায় নেই ? সাহেব ভাবিয়া-চিন্তিয়া কহিল—খালের মুখে বাঁধ দিয়ে একদম খাল বন্ধ করে দিতে পারলে হয় । তাহলে ওপারে স্বটকির খালের দিক দিয়ে স্রোত ঘুরে যেতে পারে। —সে কি সহজ কথা ? সাহেব ঘাড় নাড়িয়া কহিল—সহজ মোটেই নয়। কাচা বাঁধ দিয়ে আগে জল আটকাতে হবে । শেষে চাই কি— বিশ-ত্রিশটা জয়েষ্ট বসিয়ে একদম সিমেন্টের গাথনী.তাও এখন নয়, এখন ঠিক করে বলাও যাচ্ছে না কিছু। শীতকালের দিকে জল খুব কমে যাবে, তখনকার কথা— —সে যে লাখ টাকার ফের। প্রজাপাটক নিশ্বাস নিরুদ্ধ করিয়া আলোচনা শুনিতেছিল, তাহাদের দিকে ফিরিয়া হতাশ ভাবে কৰ্ত্তা বলিলেন—শুনলে ত সকলে ? উপায় নেই। সদ্ধা গড়াইয়া গেল। একে একে সকলেই চলিয়া গিয়াছে, আছে এক ত্ৰিলোচন। ত্রিলোচন নাছোড়বান্দ হইয়া বসিল—উপায় আমার একটা ক'রে দিতেই হবে। কৰ্ত্তার পা ধরিতে যায়। মাতব্বর প্রজা বলিয়া সকলেই তাকে জানে, এ অঞ্চলের মধ্যে কত বড় মানী ঘর। কর্তা ব্যস্ত হইয় উঠলেন। ত্রিলোচন বলিতে লাগিল—আপনার এলাকায় আমার তিন পুরুষে স্থ-শ বিধে থামার জমি ; তার উপর নিজে সে-বার আঠাশ-শ দিয়ে আঠাশ বিধে নিয়েছি।-- আপনার জমি আপনার থাকুক কৰ্ত্তা, আর পারছি নে— আমি এবার অব্যাহতি চাই। গোলা খ খ করছে, গাটের পয়লা গুণে কাহাতক খাজনা টেনে বেড়াই ? আট-দশ দিন ঘোরাঘুরি করিয়া সমস্ত জমাজমি ইস্তফা দিয়া ত্রিলোচন নিঝৰ্বাট হুইয়া বসিল । বাড়িতে ইদানীং