卤剑支悖鲷 জলতরঙ্গ $హ్వ পটম্বরী মুখ চূণ করিয়া ঘুরিতে লাগিল ; বাপের হাটু ঝাকাইয়া কহিল—বাবা, দাদুধন অমন ক’রে রইল কেন ? ডাকলাম, তা উত্তর দেয় না । এ দরজা দিয়া হারাণকে বাহির করা হইল, ওদিকে মা-মেয়ে দুজনেই সেই বিছানা লইল । পাড়ার মানুষ-জন উঠানে দাড়াইয়া ত্রিলোচনকে খুব সাহস দিয়া এখন যে যার মত সরিয়া পড়িয়াছে। অাছে একলা হরিপদ । প্রবীণের যাইবার মুখে চোখ ঠারিয়া তাহাকেও সাবধান করিয়া গিয়াছেন, কিন্তু সে গোয়ার-গোবিন্দ মানুষ—ফুলকুমারীর বাপের বাড়ির কি একটা সম্পর্কও যেন ছিল, তাহাকে দিদি বলিয়া ডাকে,—কাহারও হিত কথা না মানিয়া ওলাওঠার মধ্যে সে রহিয়া গেল । পাচ সাত গ্রামের মধ্যে আছে এক হোমিওপ্যাথি ডাক্তার, তিনি একবার দেখিয়া এক ফোটা করিয়া ঔষধ দিয়া গিয়াছেন । দিনসাতেকের মধ্যে আর ঔষধের আবগুক হইবে না, সাত দিনের পর খবর দিতে বলিয়াছেন। মোক্ষদা বাহির হইতে হাতছানি দিয়া ডাকিল, হরিপদ উঠিয়া গেল । মোক্ষদা কহিল—ভাস্করপোর! নাছোড়বান্দা কি করি বল, তাদের সংসার অচল-—আর এ অবস্থায় ত্ৰিলোচনকেই বা বলি কি করে...সব সেরে স্বরে উঠুক, জিজ্ঞাসা করলে ব’লে, আমি চৌগাছায় চলে গেছি--- তিক্ত কণ্ঠে হরিপদ বলিল—যাও দিদি, শিগগির শিগগির চলে যাও-চৌগাছার পথ যম ত চেনে না। বিরক্ত মুখে রোগীর পাশে আসিয়া সে বসিল । জিলোচন দুই হাটুতে মুখ গুজিয়া চুপচাপ বসিয়া থাকে। জুপুরের দিকে খুব মেঘ করিয়া বৃষ্টি নামিল। ফুট চালে ধারকর করিয়া জল পড়িতেছে । ত্ৰিলোচনের যেন সম্বিং নাই, উবু হইয়া এক জায়গায় বসিয়া বসিয়া ভিজিতে লাগিল। আর হরিপদ বিছানাসমেত রোগীদের সমস্ত, ঘর টানিয়া টানিয়া বেড়ায়, যেখানে যায় সেইখানেই জল ; আবার সরাইয়া লইতে হয়। বাহিরে টেকিশালের কাছে শিশুর *ৰ পড়িয়া পড়িয়া ভিজিতেছে, আগলাইবার একটা লোক নাই । কাধে ঝণকি দিয়া ত্রিলোচনকে হরিপদ ডাকিল—ও দাদা, শোন একটা কথা। ওঠে। উঠোনে ওটা পড়ে পড়ে ভিজছে— مع سبع و 9؟ একটা গতি করে আসা যাক—তুমি এদিকে একটু মজর রাখ–আমি আসি গে— - ত্ৰিলোচন হরিপদর হাত আঁটিয়া ধরিয়া বলিল—একটুখানি সবুর কর ভাই। সবস্থদ্ধ এক চিতেয় হয়ে যাবে। বার-বার টানাটানি করতে হবে মা । ঘটিলও তাই। মানুষ-জন ডাকিয়া কাঠফুটার জোগাড় করিয়া তিনটি শব খালের ধারে শ্মশানে লইয়া যাইতে পরদিন বেলা দুপুর হইয়া গেল। ত্রিলোচন শাস্তভাবে শেষ কাজ সারিয়া বাড়ি ফিরিল । খালের জলে জমি ভাসাইয়া একদিন যেমন ঘরে ফিরিয়াছিল, তেমনি । হরিপদর সাধাসাধিতে সন্ধ্যার সময় তার বাড়িতে গিয়া চারিটি ফ্যানসা ভাতও মুখে দিয়া আসিল । মাসখানেক কাটিয়া গেল। আবার ত্রিলোচন ফিরি করিতে স্বরু করিয়াছে –পনি নেবে গো, চিকি গুয়ো । রূপগঞ্জের দিকে যায় বটে, কিন্তু পাড়ার মধ্যে বেশীক্ষণ থাকিতে পারে না। খাল তাহাকে টানিতে থাকে। কোন-গতিকে দু-চার পয়সার বিক্ৰী হইলেই, পাড়া ছাড়িয়া সে খালের ধারে আসে কুলে কুলে জোর গলায় হাকিয়া যায়। জলতরঙ্গ যেন তার খরিদার। নিস্তন্ধ দুপুরে সমস্ত গ্রাম যখন বিমাইয় পড়ে বহু দূরের খালধার হইতে ত্রিলোচনের কণ্ঠ অস্পষ্ট ভাসিয়া আসে—ঘুনসী চাই, আয়না চাই, পুতুল চাই রাঙা রাঙা—আ-আ—- হরিপদ মাঝে মাঝে বলে—দাদ ওখানে স্থাক পেড়ে কাদের শোনাও ? ত্ৰিলোচন হাসিয়া হাসিয়া ব্যাপারটা বুঝাইয়া দেয়। নেীকে ক’রে দেশ-বিদেশের মানুষ যায় জানিস ? পথ চলতি মাতুষ—তাদের কাছে দর-দাম নেই, এক পয়সার মাল চার পয়সা—বডড লাভের কাজ– অবিশ্বাসের ভাবে মাথা নাড়িয়া হরিপদ বলে—কটাই বা যায় নৌকা ! এ্যাদিনে কত বেচেছ, বল ত শুনি। ঞ্জিলোচন বলে—তুই তার জনবি কি! ব্যবসা ধর আগে, তখন বুঝবি কোথায় কি মজা। আর এক কাও হইল। হঠাৎ একদিন দেখা গেল, ত্ৰিলোচন লোকজন ভাকিয় টেকিশালের চাল নামাইয়।
পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৫৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।