পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Հ\ՆՀ প্রবাসী ১৩৪২ ঠিক পাচ্ছি না। পথে ষ্টেশনে ষ্টেশনে গাড়ী থামলে চেরীফল কিনে আমরা খুব খাচ্ছি। অতি স্বন্দর খেতে । পিলেটসের উপর হইতে দৃষ্ঠ জানি, আমার স্ত্রী কিছুই জানে না।” আমরা তাকে বললুম, আমাদের ভারতবর্ষে ইংরেজীটা সকলকেই পাচ রকম কারণে শিখতে হয় । তবে অামি নিজে যে ভাল জানি তা নয়। হোগা যাগ ক'রে হিন্দী কথা কষ্টবার মত কোন রকমে চালাচ্ছি। তিনি বললেন, “তোমাদের দেশের বিখ্যাত কবি টেগোরের গীতাঞ্জলির ইংরেজী অম্বুবাদ আমি পড়েছি।” শুনে খুশী হলুম। ঘণ্টাখানেক পরে আমরা হোটেলে ফিরে এসে, দেনা-পাওনা মিটিয়ে ষ্টেশনে গিয়ে লুসান যাবার গাড়ী ধরলুম। লুসানের পথে চলেছি । আমাদের গাড়ী মাঝে মাঝে টানেলের ভেতর দিয়ে চলছে। তখন গাড়ীর মধ্যে সব আলো জেলে দেওয়া হয় ও সব জানালার কাচ তুলে দেওয়া হয় । এক-একটা টানেল পাচ-সাত মাইল লম্ব, একটি আবার পুরো নয় মাইল, গাড়ী অনেকক্ষণ চলল এর ভেতর দিয়ে। এই টানেলেরই নাম সেণ্ট গথার্ড টানেল । তা ছাড়া ছোট, বড়, মাঝারি কত যে আছে তার ঠিক নেই। ট্রেন সমানেই টানেলের ভেতর দিয়ে চলছে। পথের দৃপ্ত এত চমৎকার যে দেখে শেষ করে উঠতে পারছি না। রাস্তার দু-পাশেই পাহাড়, তার মাথার ওপর বরফ ঝকমক করছে। পাহাড়ের গায়ে ঝরণাতলায় নদী ও নদীর ধারেই জাজুর, চেরী ও অন্যান্য ফলফুলের গাছ ফলফুলে ভৰ্ত্তি। পাহাড়ের রং, ফুলের বাহার, কাকে ফেলে কাকে দেখব আমাদের ট্রেন লুসান এসে পৌছল। আমরা ১১ই জুন কলকাতার বাড়ি ছেড়েছি, আজ ২৬শে জুন হ’ল । এই পনর দিনের মধ্যে কত দূরে কত জায়গায় চলে এলুম। ষ্টেশন থেকে আমরা এখানকার ‘হোটেল ডু লাক নামে হোটেলে এসে উঠলুম। আমাদের হোটেলের পিছন দিকে লুসানের লেক দেখা যাচ্ছিল। সামনে রাস্ত বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। স্বইস গোয়ালা গুটিকতক নপরকান্তি সোজা পিঠওয়ালা গরুবাছুর নিয়ে আমার ঘরের বারান্দার নীচে দিয়ে চলে গেল। আমরা স্নান ক'রে কাপড় ছেড়ে নীচেয় এলুম। ম্যানেজারের অফিস-রুমে আসতেই দেখি আমাদের জাহাজের এক জন পরিচিত লোক তার সঙ্গে কথা বলছেন। শুনলুম তিনি অন্য হোটেলে আছেন, এখানে কি জানবার জন্য ম্যানেজারের কাছে এসেছিলেন । ক’দিন পরে এক জন পরিচিত লোককে দেখে আমরা পুশী হলুম। এই হোটেলটি মন্তবড় সাজসজ্জাওল, আমাদের একটু বেশী খরচ পড়ল। টমাস কুক কোম্পানী আমাদের এই সব হোটেলের ঠিকানা দিয়েছিল । এ সব জায়গায় আবার নিজস্ব বাথরুমওয়াল শোবার ঘর সব হোটেলে থাকে না। যে হেটেলে থাকে সে-সব হোটেলে কাজেই খরচ বেশী পড়ে। যারা শুধু শোবার ঘর নেয় তাদের ঘরে একটি ক'রে ওয়াশ-বেসিন থাকে, ঠাণ্ড ও গরম জল কল খুললেই পাওয়া যাবে, চারখানা করে ছোট তোয়ালেও থাকে। সমস্ত ঘরগুলিতে গরম জলের পাইপের বন্দোবস্ত আছে, বেশী শীতের সময় ঘরগুলি বেশ গরম থাকে। সাবান কণ্টিনেণ্টের কোন হোটেলেই দেয় না। সাবান দিলে এর জন্য আলাদা দাম দিতে হয়। আমরা খাবার ঘরে এসে দেখলুম মাত্র এক জন লোক খেতে বসেছে, আর কেউ কোথাও নেই। ম্যানেজার বললে, এখন হোটেলে আমাদের দু-জন ও সেই লোকটি মোট