পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আগ্রহণক্ষ্মণ cশ্রষ্ঠ মহন্ত ৰাঙ্গালী সম্ভদশস ৰীৰাজী ھٹایٰا جا অধিকার প্রাপ্ত হইলে বিপিন চন্দ্র পাল এবং আমার সঙ্গে নিত্য ঘুরিয়া ঘুরিয়া বিশিষ্ট ব্যক্তিদিগকে অনুরোধ করিয়াছিলেন কপরেশনে প্রবেশ করিবার জন্ত । কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যতীত কেহই রাজী হন নাই। ইদানীং যদিও রাজনীতি সম্বন্ধে নিৰ্ব্বাক ছিলেন, তাহার অন্তর ছিল পুরো স্বদেশী । আমাকে ভালবাসিবার মাত্রা ছিল কিছু বেণী ; কতকটা ঔপন্যাসিক । রেড়ীর তেলের প্রদীপের আলোয় পাঠ করিবার অভ্যাস ছিল । তেল জলের গ্লাস ঢাকা থাকিত কাচের লণ্ঠনে। এক দিন সকলে দেখিল লণ্ঠনের গায়ে যে কালে ভুসো লাগিয়া আছে, তাহাতে হিজিবিজি কাটা, আর এক জায়গায় লেখা ‘স্বন্দরীমোহন । ছাত্রাবাসে হৈ চৈ । তিলোত্তম লিখেছেন—লতা, পাতা, হিজিবিজি, কুমার জগংসিংহ। ভালবাগার ফলেই হউক, আর যে কারণেই হউক, তারাকিশোর উপবীত ত্যাগ করিয়া গ্রহণ করিলেন ব্রাহ্মধৰ্ম্ম । পিতা পাঠা বলির খড়গ লইয়া কাটিতে গেলেন ; ভীত হইলেন না বালক তারাকিশোর । মনোবিজ্ঞানে এম্-এ। তর্কশক্তি অসীম। ব্রান্ধ কেহ কোন বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করিলে, র্তাহাকে পাঠাইয়৷ দেওয়া হইত মীমাংসার জন্য তারাকিশোর চৌধুরীর নিকট। এই জন্য আমার স্ত্রী র্তাহার নাম রাখিয়াছিলেন তর্ককিশোর। কিছুদিন পরে গুস্ক জ্ঞানে হইল অনাস্থা । সেই সময় ব্ৰহ্মসমাজ-প্রাঙ্গণে বহিতেছিল এক প্রবল ভক্তির স্রোত । মজিলপুরের জমিদার vকালীনাথ দত্ত মহাশয় এক গৃহস্থ সাধুর নিকট গ্রহণ করিয়াছিলেন প্রেম-যোগ-মন্ত্র। র্তাহারা গঠন করিলেন এক অসাম্প্রদায়িক সাধকমণ্ডলী। গুরু দীক্ষা দিয়া করেন শক্তি সঞ্চার। মন্ত্র জপের সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছসিত হয় সৰ্ব্বঙ্গে এক আনন্দতড়িৎ স্রোত। তাঁহাদের নাই কোন বাহিক সাম্প্রদায়িক চিহ্ন। তিলক, মালা, শিখ, গৈরিক নিষিদ্ধ। গানের সঙ্গে সঙ্গে চলে সাধনা। গানের অধিকাংশ বৎিরাধাকৃষ্ণ-প্ৰেম-সম্বন্ধীয়, কিন্তু অনেকেই বিশ্বাস করিতেন পরব্রহ্মের অতুলনীয় গভীর প্রেমই ব্রজলীলাকাব্য আকারে বাতি। কেহ যদি ক্ৰষ্ণের ঐতিহাসিক অস্তিৰে অবিশ্বাস করেন তাহাতে কোন ক্ষতি নাই। এই প্রেমের গণhলনা কারবার আছে যাহার, তিনি বেদ-বিধির অতীত।

  • 6-20

তাহার জাত পাত বিচারের প্রয়োজন নাই । তাহার! সৰ্ব্বত্রই দেখেন ঐক্ষেত্র – অস্ত্যবর্ণে হীনবণৈঃ সঙ্করপ্রভবৈরপি । শৃষ্টং জগৎপতেরক্সং ভুক্তং সৰ্ব্বাত্মনাশনম্। আদিস্থান ঘোষপাড়ায় একাদশী দিবসে ব্রাহ্মণ বিধবারা ঘোষ মহাশয়ের প্রসাদ ভক্ষণ করিতেন। নিষেধ এই চারটি —মিথ্যা কথা, ব্যাভিচার, উচ্ছিষ্ট এবং মাংস ডিম । তারাকিশোর একদিন আমাকে গোপনে বলিলেন, এক জায়গায় গেলে ভক্তি পাওয়া যায় । কিন্তু কিঞ্চিৎ কুসংস্কার আছে, যথা উচ্ছিষ্ট ভক্ষণ নিষেধ ইত্যাদি। অামার অনুমতি চাহিলেন। আমি বলিলাম, ঐ একটুক কুসংস্কারমূল্যে যদি এত বড় একটা দুৰ্ল্লভ বস্তু পাওয়া যায়, তাহাতে আপত্তি কি ? তখন স্বগীয় দ্বিজদাস দত্তের বাড়ীতে বসিত পূৰ্ব্বোক্ত সাধকমণ্ডলীর বৈঠক। তারাকিশোর যোগদান করিলেন। মাঝে মাঝে ঘোর তর্ক জুড়িয়া দিতেন। অামার স্ত্রীও সেই মণ্ডলীভুক্ত ছিলেন। সেখানে তিনিই তাহাকে তর্ককিশোর উপাধি দান করিয়াছিলেন। মণ্ডলীর নায়কের বিভূতি প্রকাশ করিতেন না। সময়ে সময়ে অলক্ষিতে বিভূতির প্রকাশ হইত। তারাকিশোর বিভূতির পক্ষপাতী ছিলেন। প্রয়াগে কুম্ভ মেলায় নাকি দেখিয়াছিলেন বৃন্দাবনের কাঠিয়া বাবা খড়ম-পায়ে নদী পার হইতেছেন। সেই সন্ন্যাসীর শরণাপন্ন হইলেন। এই নবীক্ষার ফলে পূৰ্ব্ব সংস্কারের অনেক পরিবর্তন হইল। উপবীত গ্রহণ করিয়া নিম্বার্ক সম্প্রদায়ভুক্ত হইলেন। হাইকোর্টে ওকালতি ব্যবসায়ে উচ্চস্থান যখন অধিকার করিলেন, তখনও পূজার ছুটি উপলক্ষে কম্বল গায়ে নিমকাঠের লাঠি হাতে বৃন্দাবনে যাইতেন । তারাকিশোর ছিলেন পূর্ণ বিশ্বাসী। যখন যে ধর্শ্বে বিশ্বাস, পূর্ণ রূপে সেই বিশ্বাসামুযায়ী নিয়ম পালন করিতেন। র্তাহার বিশ্বাস সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ সম্প্রদায় নিম্বার্ক মণ্ডলী। র্তাহারই সম্প্রদায়ভুক্ত কোন ব্যক্তির একখানা গ্রন্থ আমাকে দিয়াছিলেন। তাহাতে লেখা ছিল কেশব কাশ্মীরী নামক নিদ্বার্ক সম্প্রদায়ের জনৈক নেতা তর্কে ভারতবর্ষের পণ্ডিতমণ্ডলীকে পরাস্ত করিয়া নবদ্বীপে আসিয়াছিলেন। সেই দিগ্বিজয়ীর তর্কে চৈতন্ত পরম্ভ