পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

sa প্রবাসী SNరి8R বসিয়া একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিল—আমিও ত এবার —এসে খাব ৷ ম্যাটিকুলেশন দিতাম । সবিতা আর কিছু বলিল না। চেষ্টারফিল্ডের একটা এতক্ষণে তপোনাথ তাহার দিকে ভাল করিয়া চাহিল । বলিল –দিতে ? দিলে না কেন ? আমি ত পড়াতে চেয়েছিলাম। তুমিই ত বললে, পরীক্ষা হয়ে গেছে, তুমি ফাষ্ট ডিভিসনে পাস করেছ ? তপোনাথের কাছে টুপ করিয়া শুইয়। পড়িয়া সবিতা সলজ্জভাবে বলিল—এখন থেকে পড়ব । পড়াবে ? তাহাকে বুকের কাছে আকর্ষণ করিয়া তপোনাথ বলিল— কেন পড়বে না ? নিশ্চয় পড়াব। তুমি পড়লে ত আমি বঁচি । আনন্দে যেন সবিত গলিয়া পড়িতেছিল। বলিল – দত্তসাহেব কি বলছিলেন, বলবে ? খুব কঠিন কথা নয় ত? আমি বুঝতে পারব ? সবিতার মাথার ঘোমটা খুলিয়া দিয়া তপোনাথ সোৎসাহে বলিল - কেন পারবে না ? কঠিন আবার কি ? জান সবিতা, পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কথা বুঝতেও সহজ বুদ্ধির বেশী আর কিছু দরকার হয় না। শুধু বোঝবার আগ্রহ থাক চাই। থাকবেই না বা কেন ? এ পৃথিবীতে আমরা শুধু চাকরি-বাকুরি আর ঘরকন্ন করতে ত আসি নি। তার চেয়ে ঢের বেশী কাজ আছে । সে কাজে অবহেল করলে.তোমার ঘুম পাচ্ছে সবিতা ? সবিতা একেবারে স্বামীর বুকের মধ্যে ঘেষিয়া আসিয়া অক্ষুট কণ্ঠে বলিল—একটু। —ঘুমোও তা হ'লে । তপোনাথ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া সযত্নে তাহার মাথার বালিশট ঠিক করিয়া দিল । সকালে উঠিয়া তপোনাথ চেষ্টারফিল্ডট গায়ে দিতেছে, সবিত আসিয়া জিজ্ঞাসা করিল—কোথায় চললে ? —ষ্টেশনে । —প্রি-পেড টেলিগ্রাম করে, বুঝলে ? আজ দুপুরের মধ্যেই তাহলে জবাব এসে যাবে। –তাই করব । 彦 —চ খেয়ে যাবে না ? দেরি হবে না। বোতাম উল্টা করিয়া পরানো হইয়াছিল ; সেইটা ঠিক করিয়া দিয়া নিঃশব্দে বাহির হইয়া গেল। টেলিগ্রামটা নিজে দাড়াইয়া থাকিয়া পাঠাইয়া দিয়া তপোনাথ দত্তসাহেবের বাড়ি গেল । দত্তসাহেব তখন একখানা ইজি-চেয়ারে বসিয়া খবরের কাগজ পড়িতেছিলেন। একটু আগে বোধ হয় চা খাওয়া শেষ করিয়াছেন, পাশের টিপয়ে তখনও চায়ের বাটি পড়িয়া আছে। আর আছে একটা সিগারেটের ছাই ফেলিবার পাত্র। থানকয়েক খবরের কাগজের পাতা পায়ের নীচে পড়িয়া । অনুভা একটা অনভিজ্ঞ মালীকে লইয়া বাগান তদারক করিতেছিল ।. ইতিমধ্যেই তাহার স্নান হইয়া গিয়াছে । --ՎԶթi দত্তসাহেব হাতের কাগজগুলা এক পাশে ঠেলিয়া রাখিয়া চশমাট পরিষ্কার করিয়া লইলেন । তপোনাথ একখানা চেয়ার টানিয়া বসিয়া অমুভার দিকে চাহিতেই অনুভ একটুখানি হাসিয়া দূর হইতেই ছোট্ট একটি নমস্কার করিল। বলিল—বড়ড ব্যস্ত । দত্তসাহেব চিন্তিত মুখে বলিলেন–হিটলারের কাগুট পড়ছ ? বড় বড় লোকের সরাসরি বিচার আর মৃত্যুদণ্ড, আইনষ্টাইনের মত লোকেরও নিৰ্ব্বাসন, সংবাদপত্রের মুখ বন্ধ, কি আরম্ভ হয়েছে জাৰ্ম্মেনীতে ? —শুধু জাৰ্ম্মেনী ? তপোনাথের বাকী কথা মনেই রহিয়া গেল,—অমুভ হাত-ইসারায় তাহাকে ডাকিতেছে। দত্তসাহেব সন্তপণে চুরুটের ছাই ঝাড়িয়া বলিলেন-–ওদের দেশের কথা যখন ভাবি অবাক হয়ে যাই। বুঝি, রাজনীতির ভালমন্দ সাধারণ নীতির মাপকাঠিতে বিচার করতে যাওয়া ভুল । ওরা ডিক্টেটার, ওদের সময় সংক্ষেপ । যা করতে চায়, তাড়াতাড়ি করতে হবে। তবু:-- অন্তভার ছাই-রঙের শাড়ীখানি কোমরে বেড় দিয়া জুড়ান। হাতে জলের ঝারি। ঘাড় নাড়িয়া ডাকিতেছে— আমুন না |