পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

сић“, কামরার দরজা জাপলা হতেই খুলছে ও বাপাখ ক’রে বন্ধ হচ্ছে। সকলৰেই এই সামাঙ্ক সময়ের মধ্যে ক্ষিপ্রগতিতে নাম-উঠা করতে হয়। এর ভেতরও ধূমপান ঐক্টলি প্রহিবিটেড' লেখা আছে। এই রকম টিউব ট্রেন মাটির নীচে তিন-চার ধাপে ধাপে চলছে। মাটির নীচে এই ব্যাপার, শত শত ধাত্রীর যাতে নিশ্বাসের কষ্ট না হয়, তার জন্ত প্রত্যেক টিউব ষ্টেশনে বিশুদ্ধ বায়ু সঞ্চালনের বন্দোবস্ত আছে। প্ল্যাটফরমের জায়গা-বিশেষে দাড়ালেই এই হাওয়া অনুভব করতে পারা যায়। মনে হয় ঠিক যেন ঝড়ের ঝাপটা আসছে। আমরা একবার ট্রেনে উঠবার পর দুটি সাত-আট বছরের ছেলে সঙ্গে সঙ্গে উঠতে এল, একটি উঠবার পরই দুম ক'রে দরজা বন্ধ হয়ে গেল। অন্য ছেলেটি প্ল্যাটফরমের উপর দাড়িয়েছিল, সে চীৎকার ক’রে তার সঙ্গীকে ডেকে বলে দিলে তুমি আমার জন্য পরের ষ্টেশনে অপেক্ষা করো। আমাদের দেশে এ রকম হ’লে বোধ হয় ছেলে ভ্যা ক'রে কেঁদে ফেলতো। ওদের বাপ-মা ছোট থেকে ছেড়ে দেয় বলে ওদের এ রকম উপস্থিত-বুদ্ধির অভাব হয় না। টিউবে যাতায়াত করলে গন্তব্য স্থানে খুব চটপট পৌছে যাওয়া ধায়। সেজন্য এতে সব সময় লোকের অত্যধিক ভীড় থাকে। অনেক সময় বসবার জায়গা পাওয়া যায় না, তখন দাড়িয়ে যেতে হয়। ধরবার জন্ত বসবার সীটের ছ-পাশের ছাদের উপর থেকে চামড়ার হাতল ঝুলছে, লোকে তাই ধরে দাড়িয়ে দাড়িয়ে স্বচ্ছদে যেতে পারে। রাস্তার ভিখারী ও ভিখারিণীদের প্রকাশুভাবে ভিক্ষ চাইবার হুকুম নেই। লোকের কাছে হাত পাতবার বদলে একটা কিছু গুনিয়ে, ক'রে বা দেখিয়ে লোকের মনোরঞ্জন করতে হবে। ফুটপাথে চলবার সময় দেখেছি দু-একটি লোক নানান রকম রঙীন খড়ির সাহায্যে রকমারি ফুলপাত বা দৃপ্তাবলীর ছবি ফুটপাথের উপরেই- একে যাচ্ছে। এই ছবি দেখে খুশী হয়ে কেউ-না-কেউ কিছু দিয়ে থাকে। অনেক সময় ভিখারীরা দল ক'রে কনসার্ট-পার্টি করে। এরা এক দল রাস্তার মাঝে নানা রকম বেহাল, বাণী, চাক, ব্যাও ইত্যাদি অতি স্বন্দরভাবে বাজার। এরা একটু উচুরের ভিখারী। প্রথম প্রথম এ রকম বাট-কোট-টাই-ধারী 00աC offssperifrån ভিখারী দেখে আশ্চৰ্য্য বোধ হ’ত । আরও একটি প্রখ আছে । লেটি একটি বড় ভালায় বা ষ্ট্রে’তে ক'রে ওটীকয়েক দেশলাইয়ের বাক্স সাজিয়ে গাছতলায় বা পথের মোড়ে ছু-একটি ভিখারিণীকে দাড়াতে দেখেছি। এদের ভিক্ষা দেবার নিয়ম এই যে, তোমাকে দেশলাই কিনতে সে অনুরোধ করলে, তাকে তোমার যা খুশী দাও এবং সেই সঙ্গে দেশলাইবাজটিও ফেরৎ দাও । এক জন বাঙালী ছেলে একবার একটি বেহাল-বাদক ভিখারীকে জিজ্ঞাসা করেছিল, তুমি এত সুন্দর বাজাও, কোন থিয়েটারে কাজ নিলে ত পার। ভিখারী জানিয়েছিল, সে থিয়েটারে রোজগার করলে যা পেত, এতে তার তিন-ডবল আয় হয়। পথেঘাটে ইণ্ডিয়ান কারি-পাউডারের বিজ্ঞাপনও খুব। ছবিতে দেখতে পেয়েছি, এক বুটিবাধা উড়ে বামুন শিল-নোড়া নিয়ে বসে বসে বাটনা বাটছে। এক দিন অবনীবাবু ও তার স্ত্রীর সহিত টেম্স নদীর স্বভূজ দেখতে গেলুম। রাস্তা থেকেই টিউব বসিয়ে স্থতৃঙ্গ করা হয়েছে। ভেতরটি ইলেক্‌টিক আলোর দ্বারা আলোকিত। এর ভেতর ট্রাম, বাস, গাড়ীঘোড়া, লোকজন সব যাতায়াত করছে। . উপরে যে নদীর জল থৈ খৈ করছে, তা কিছুমাত্র বোঝবার জো নেই। ভেতরটি সমস্ত পাথর দ্বারা বাধানে। আমরা কিছুদূর যাবার পর স্থতৃঙ্গ শেষ হ’ল ও রাস্তার উপরে উঠবার জন্য লোহার ঘোরানো সিড়ি দেখতে পেলুম। উপরে উঠতে স্বরু করার সঙ্গে সঙ্গে সিড়িও গুণতে আরম্ভ করলুম। সব-সমেত সিড়ি বোধ হয় দু-শ পচাত্তরটা হয়েছিল। উপরে এসে এক পাল কুচো ছেলের পাল্লায় পড়লুম। ছেলেগুলো ‘পেনি দাও" ‘পেনি দাও ক'রে অস্থির করে তুললে । তাদের বেশভূষা ও ধরণধারণ দেখে মনে হ’ল তারা নিয়শ্রেণীর বস্তির ছেলেপিলে। রাস্ত দিয়ে চলবার সময় তারাও পেছু নিলে। যত এগোতে থাকি তারাও ক্রমশ দলে ভারী হতে হতে সঙ্গে সঙ্গে আসতে স্বরু করলে, মাঝে মাঝে বিকট চীৎকার “লুক এ্যাট মৃে জন, নে আর ইণ্ডিয়ান।” তাদের বাপ-মা মাঝে মাঝে ধমক দিয়ে থামাতে চেষ্টা করলে, কিন্তু কোথায় কে কার কৰা শোনে, দল কিছুমাত্র কমলে না । দু-একটি ছোট মেয়ে আমাদের শাড়ীতে হাত দিতে দিতে বলতে লাগলো—