পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

مصوbسرb& অন্য সব প্রদেশেও সেইরূপ দাবি হইবে বা হইয়াছে, এবং তাহাও মানিয়া লইতে হইবে। মানিয়া লইলে হিন্দুসমাজের গৌরব, সংহতি ও শক্তি বাড়িবে। অবনত হিন্দুদের ধৰ্ম্মান্তর গ্রহণ সম্ভাবনা হিন্দু সামাজিক প্রথা অনুসারে অবনত শ্রেণীসমূহের হিন্দুরা বহু সামাজিক ও সাধারণ মানবিক অধিকার হইতে দীর্ঘকাল বঞ্চিত থাকিয়া আসিতেছে, অনেক লাঞ্ছনা, অস্ববিধ এবং কখন কখন উৎপীড়নও ভোগ করিয়া আসিতেছে। ভারতবর্ষে মুসলমানের ও খ্ৰীষ্টীয়ানের সংখ্যাবৃদ্ধির তাহাই প্রধান কারণ। হিন্দুর সংখ্যার আপেক্ষিক হ্রাসেরও তাঁহাই কারণ। এই কারণে এখনও হিন্দুসমাজের ক্ষয় এবং অন্য দুই সমাজের বাড়তি চলিতেছে। কিছুকাল হইতে অবনত হিন্দুদের মধ্যে অনেকে আপনাদের সামাজিক অবস্থা সম্বন্ধে সচেতন হইয়া উঠিয়াছেন । র্তাহারা অনেকে বলিতেছেন হিন্দু সমাজে অন্য সব হিন্দু জাতিদের সহিত র্তাহীদের সাম্য স্বীকৃত ও স্থাপিত না হইলে তাহারা ধৰ্ম্মাস্তুর গ্রহণ করিবেন। তাহাঁদের অন্যতম নেতা ডাঃ আম্বেদকর ধৰ্ম্মাস্তরগ্রহণকাঙ্গীদের মধ্যে প্রধান ব্যক্তি। অন্য অনেক নেতা ধৰ্ম্মান্তর গ্রহণ করিতে রাজী নহেন। কিন্তু হিন্দুসমাজে অবনত শ্রেণীর হিন্দুদের মর্য্যাদ। অপর সকল হিন্দুদের সমান ন হইলে কতক অবনত হিন্দুর ধৰ্ম্মাস্তরগ্রহণ অনিবার্ষ্য। হিন্দুসমাজের ক্ষয় নিবারণ ও শক্তিরক্ষার নিমিত্ত অবনত হিন্দুদের ধৰ্ম্মান্তরগ্রহণ অনাবশ্যক করিতে হইবে। তাহা করিতে হইলে সকল হিন্দু জাতির সামাজিক মৰ্য্যাদ সমান করিতে হইবে। কিন্তু হিন্দুসমাজকে সংখ্যাভূয়িষ্ঠ ও সংখ্যার দিক্ দিয়া বলিষ্ঠ রাখিবার জন্যই যে অবনত হিন্দুদের সাম্য আবশ্বক তাহ নহে। হিন্দুধৰ্ম্ম ও হিন্দুসমাজের শ্রেষ্ঠত্ব ও গৌরব রক্ষার নিমিত্ত তাহ আবশ্যক। গোরু মহিষ ছাগল ভেড়া গাধা ঘোড়া ইন্দুর বিড়াল প্রভৃতি প্রাণী অস্পৃত নহে। অথচ কতকগুলি জাতির মানুষ অশুদ্ধ বা অস্পৃহ, ইহা শ্রেষ্ঠ হিন্দু শাস্ত্রের উপদেশ নহে, হইতে পারে না । এই হেতু পরম হিন্দু মহাত্মা গান্ধী শুধু অস্পৃশ্বতার বিরুদ্ধে নহে, জাতিভেদের বিরুদ্ধেও মত প্রকাশ করিয়াছেন— কয়েক সপ্তাহ হইল ইংরেজী সাপ্তাহিক “হরিজন” কাগজে প্রবাসী SNరి8ళ్చి f(f(TER "Caste must go," "FffSCSRCT fTRfH দিতে হইবে” । অবনত শ্রেণীর হিন্দুদের সহিত অন্য হিন্দুদের বিরোধ ক্রমশঃ প্রবল হইতেছে। এই বিরোধের নিম্পত্তির জন্ত গত ২৮শে ডিসেম্বর অবনত হিন্দুদের প্রতিনিধিগণের সহিত পুনায় হিন্দু মহাসভার নেতাদের আলোচনা হইয়াছিল। আলোচনা-সভায় ৫০ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন । অবনত হিন্দুদের নেতারা এই প্রস্তাব করিয়াছিলেন, যে, হিন্দুসমাজ হইতে জাতিভেদ উঠাইয়া দিতে হইবে, এবং অবনত জাতিদের আর্থিক ও সামাজিক উন্নতিবিধানের উপায় নিৰ্দ্ধারণ ও অর্থসংগ্রহের জন্য উভয় শ্রেণীর লোকদিগকে লইয়া এক কমিটি গঠন করিতে হইবে । অবনত জাতিদের অন্যতম নেতা রাজভোজ বলিয়াছিলেন, হিন্দুশাস্ত্রে নিম্নশ্রেণীর লোকদিগকে হীন করিয়া রাখিবার জন্য যে-সমুদয় ব্যবস্থা আছে তাহা শাস্ত্র হইতে উঠাইয়া দিতে হইবে । হিন্দু মহাসভার সভ্যগণ বলিয়াছিলেন —ঐ সকল প্রস্তাব বিষয়নিৰ্ব্বাচনী সভায় আলোচনা করিয়া প্রকাশ্য সভায় উপস্থিত করা হইবে। হিন্দু মহাসভার যে-সকল সভ্য পুনায় উপস্থিত ছিলেন র্তাহারা যদি বলিতে পারিতেন, যে, জাতিভেদ উঠাইয়া দিতে হইবে, যদি শিক্ষাদান প্রভৃতি দ্বারা অবনত শ্রেণীর লোকদের উন্নতিবিধানের জন্য অর্থসংগ্ৰহ-কমিটি নিযুক্ত করিতে পারিতেন, এবং অবনত শ্রেণীর লোকদের সম্বন্ধে শাস্ত্র বলিয়৷ গৃহীত কোন কোন গ্রন্থে যে-সব বচন আছে তাহা হিন্দুধর্মের শ্রেষ্ঠ উপদেশের বিরুদ্ধ যদি বলিতে পারিতেন, তাহা হইলে অবনত শ্রেণীর লোকদের মন আশান্বিত হইত। কোন গ্রন্থে যদি লেখা থাকে, যে, অদ্বিজের বেদমন্ত্র উচ্চারণ করিলে তাহদের জিহব| কাটিয়া ফেলিতে হইবে, তাহ! সেই গ্রন্থের অগৌরবজনক। কিন্তু তদ্দ্বারা বর্তমানে কাৰ্য্যতঃ কাহারও ক্ষতি হয় না। বিস্তর অদ্বিজ হিন্দু ও অহিল: আজকাল বেদ পড়ে, কিন্তু কাহারও জিহা কাটা যায় না। ঐরূপ বচন উঠাইয় দিলাম, কেহ বলিলেই ভারতবর্ষে ইউরোপে আমেরিকায় জাপানে ঐ বচনসংযুক্ত যত বৰ্হি আছে, তাহা হইতে উহা বজ্জিত হইবে না। স্বতরা’ বচনগুলি তুলিয়া দিতে বলার কোন সার্থকতা নাই।