পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कांडिन्क বঞ্চিত 8ሜ উদগত একটা দীর্ঘশ্বাস সে চাপিয়া গেল, মনে মনে ভাবিল—নিম্পাপ, সরলা বালিকা ; মং-বার স্বরূপ সে জানে না । আহ, সাকীর মত তাহার যদি একটি ছোট বোন থাকিত ! এক দিন সাকিনা মং-বার কাছে ধরা পড়িল । সেদিন মং-বা বাহিরে চলিয়া গেলে দাসীকে সঙ্গে লইয়া সকিম। তাহার পড়িবার ঘর সংস্কার করিতে লাগিয়া গেল । গোছান-অগোছান সমস্ত বষ্ট ঝাড়িয়া-পুছিয়া আলমারীর তাকে তাকে সে সাজাইয়া রাখিল । চেয়ার, টেবিল, দেরাজ সমস্ত পরিষ্কার করিয়া ফেলিয়া কোমরে কাপড় বাধিয়া নিজেই ঝাটা হাতে করিয়া ঘরের কোণের ঝুল ঝাড়িতে লাগিল ! দাসী মুখে কাপড় দিয়া হাসিতেছে -এতক্ষণ তাহার কোন কাজ করিতে হয় নাই, সে দাড়াতীয় ছিল—বলিল, “তুমিই যদি সব করবে, দিদিমণি, তবে আমি এলাম কেন, গো ?” উপর হইতে মুখ না নামাইয়াই সাকিনা উত্তর দিল, “তুই ত রোজই করি বাছ, আমিই আজ একটু মনের মত ক’রে দিই না কেন ?” দাসীর হাসি আর থামে না ; বলিল-“তুমি ত বল্‌বেই, গে, তোমার বাড়ি, তোমার ঘর, তুমি করবে না ত করবে কে ? তোমার মনের মত ত সবই হবে।--তবে আমার গতোরে ত আর ঘুণ ধরে নি যে আমি দাড়িয়ে থাকুব, আর তুমি ভালমানষের মেয়ে কালিঝুলি মেপে ভূত সাজবে ?--দাদাবাবু আমায় বলবে কি গো ?” কোন কথা না-মানিয়া নিজের কাজ করিতে করিতেই সকিনা বলিল, “অ-মবু, তোর হয়েছে কি, অত চেচাচ্ছিস্ কেন ?...কোথায় তোর দাদাবাৰু?” দাসী আর হাস্ত সংবরণ করিতে পারিল না, মুখের কাপড় ফলিয়া দিয়া বলিল, “একবার চেয়েই দেখ না, গা?” দ্বারে দাড়াইয়া —মং-বাঁ । হাত শিথিল হইয়া পড়িল—সম্মার্জনী খসিয়া গেল । সাকিনার মুখে, চোখের পাতায়, কপালে স্বেদবিন্দু টলমল করিতেছে—চুর্ণ অলকাম এদিকে ওদিকে বিক্ষিপ্ত হইয়া উড়িতেছে—শ্রমে কপোল রাঙা হইয়া উঠিয়াছে –বুকের পন্নটাও যেন দেখা যায় ! লজ্জায়, সঙ্কোচে, আনন্দে, বেপথুমতী সাকিনা যেন তপঃশ্রাস্ত উমার মতই “ন যযেী, ন তস্থৌ" অবস্থায় আরক্ত নতমুখে দাড়াইয়া রহিল। দাসী অন্তহিত হইল । এদিকৃ-ওদিকৃ চাহিয়া মং-ব বলিল, “আমায় এত লজ্জা কেন, সাকী ?” সাকিনা মুখ তুলিয় তাহার পানে একটু সলাজ হাসিয়া ছুটিয়া পলাইল । মং-বা ভাবিতে লাগিল—সাকিনা তো বেশ, বেশ লাগে তাহাকে । কিন্তু তবুও কি যেন তাহার নাই—সে যেন তাহার কাম্য নয়। সে ত মা-থিন নয় ? আহা, যদি সে তাহার মত হইত ! জোর করিয়া মং-বা মা-থিনকে তাহার মন হইতে তাড়াইতে পারে না । সময়ে অসময়ে তাহার কথা মনে আসে । ম-থিনের আহবান সে রূঢ়ভাষায় প্রত্যাখ্যান করিয়াছে—ম-খিন চিঠি লিখিলে সে তাহাকে কঠোর উত্তর দিয়াছে। নৰ্ত্তকীর অঞ্চলে সে কখনও বাধা পড়িবে না। তবুও থাকিয়া থাকিয়া কেন তাহাকে মনে পড়ে ? সাকিনা ত তার চেয়ে শতগুণে ভাল ? নিষ্কলঙ্ক—গুভ্রা, ফুটনোন্মুখী কলিকা—একান্ত নির্ভরশীল, প্রীতিময়ী ; স্নেহে সরলতায় ভরা—-ইহার কাছে নৃত্যচঞ্চল, চটুলস্বভাব, বিলাসিনী মা-খিন ? তবে কেন সে সাকিনাকে জীবন-সঙ্গিনী করিবে না ? কণ্ঠার বিবাহের কথা স্থির করিয়া মফিজুদিন সাহেব কিছুদিন পরে সাকিনাকে লষ্টয়া চলিয়া গেলেন। মং-বা আবার দৈনন্দিন জীবন-স্রোতে গা ভাসাইয়া দিল । কিন্তু দৈবের গতি কেহ রোধ করিতে পারে না। মং-বারও হইল তাহাই । বড় রকমের একটা ফুটবল ম্যাচ খেলিতে গিয়া সে সাংঘাতিকরূপে আহত হইয়া হাসপাতালে আনীত হইল। পরদিন প্রত্যুষে সংবাদপত্রের শীর্ষস্তম্ভে বড় বড় হরফে বিখ্যাত খেলোয়াড় মং-বার দুর্ঘটনা ও সঙ্কটময় অবস্থার কথা ব্রহ্মের ঘরে ঘরে প্রচারিত হইল । এক দিন, দুই রাত্রি অজ্ঞান অবস্থায় কাটাইয়া যখন সে চক্ষুরুন্মীলন করিল, তখন প্রভাতের অরুণ কিরণ উন্মুক্ত