পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

బ్రతిరి একুশে সেপ্টেম্বর আন্দাজ টিয়েষ্ট থেকে দুপুরের গাড়ীতে রওনা হয়ে সন্ধ্যাবেল ইটালীর ভেনিস শহরে পৌছলুম। : ভেনিস শহরও আড্রিয়াটিকের তীরে। ইটালীর লোকেরা ভেনিসকে ভেনিজিয়া বলে । ভেনিস শহরের রাস্তার জায়গার সমস্ত জল। আড্রিয়াটিক সমুদ্র থেকে খাল কাটা আছে। এটি একটি নদীর মত, এর নাম গ্র্যাও ক্যানাল। গ্র্যাও ক্যানাল থেকে ছোট বড় মাঝারি সরু, চওড়া প্রভৃতি অনেক খাল চারি দিকে চলে গেছে। বড় রাস্ত থেকে যেমন অনেক গলি-ঘুজির ভেতর যাওয়া যায়, এও তেমনি । এ-সব জলের রং নীল । দেখতে বেশ স্বনার । কিন্তু ইটালীয়ানরা বড় নোংরা। যত কিছু আবর্জন— ঘর ঝাট দেওয়া ধুলা, ছেড়া কাগজ ও ন্যাকড়, ন্যাতনিংড়ান জল, থুথু, তরিতরকারীর খোসা-সমস্তই এই জলের উপর, দু-ধারের বাড়ির জানাল থেকে ঝুপঝাপ ক’রে পড়ছে । দু-পাশের বাড়িগুলিতেও কোন রকম সৌধীনতা বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নজরে পড়ে না। বাড়ির বারান্দায় হয়ত ফুলের গাছ লতিয়ে উঠেছে, কিন্তু তার পাশেই মরচেধরা টিন, ভাঙা ঝুড়ি, ছেড়া স্বাকড়া, জামা কাপড় ইত্যাদি ঝুলছে। জলের মধ্যে নেংটি ইছরও সাতরে পার হয়। আমাদের দেশের মতষ্ট রাস্তায় ছেলে বুড়ো সকলেই প্রস্রাব ত্যাগ করতে দ্বিধা করে না। রাস্তায় ছেলেদের লুকোচুরি খেলা, মারপিঠ, লাট্ট, ঘোরান সবই হয়। এ সব অন্ত দেশে নজরে পড়ে নি। আমাদের দেশে যেমন বড় রাস্তায় ট্রাম ও বাস, এবং ছোট রাস্তায় ট্যাক্সি কিংবা ঘোড়ার গাড়ী চলাচলের ব্যবস্থা, এখানেও তেমনি গ্র্যাও ক্যানালের উপর ষ্টীমার ও মোটর-বোট সার্ভিস আছে। এর জন্য দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক টিকিটের বন্দোবস্ত আছে । ছোট খালগুলিতে “গোণ্ডোলা" নামধারী ময়ুরপন্থী নৌকার ব্যবস্থা। এই নৌকাগুলি আড্ডায় ছ্যাকরা গাড়ী বা রিকশ'র মত জলের এক জায়গায় জমায়েং হয়ে থাকে । জলের দু-ধারে বঁাধান রাস্তার উপর লোককে হেঁটে চলতে দেখলেই নৌকার মাঝি বা চালক “গণ্ডোলা গণ্ডোলা” ক’রে চেচিয়ে লোককে চড়বার জন্ত অনুরোধ করে। লোকে এবাড়ি ওবাড়ি কিংবা রাস্তার অপর ফুটপাতে যাবার দরকার হ'লে SN?8ミ. আছে। এর ভেতর রিয়াণ্টো নামধারী ব্রিজটিই সর্বপ্রধান, কবি শেক্সপীয়ারের ‘মাৰ্চেণ্ট অব ভেনিসে এই রিয়ালটে ব্রিজের উল্লেখ আছে। রাস্তার দু-পাশে বাধানে রাস্ত বা ফুটপাথ যা আছে, তার উপর দিয়ে যাতায়াত করলে গন্তব্য স্থানে পৌছতে অনেক সময় লাগে, লোকে সেজন্ত জলপথষ্ট ব্যবহার ক’রে থাকে। এখানকার সবচেয়ে বড় চৌরাস্তার নাম “পিয়াজা সানমার্কে”। স্কোয়ারকে ইটালীয়ান ভাষায় পিয়াজ বলে। বড় বড় দোকান, ডজের প্যালেস, লয়েড টিসটিনো কোম্পানীর আফিস ইত্যাদি, সমস্তই এই সানমার্কোতে অবস্থিত। সঙ্গীতবিদ্যা, চিত্রবিদ্যা, ভাস্কৰ্য্য, শিল্পকলা ইত্যাদিতে ইটালী প্রসিদ্ধ। সানমার্কোতে বড় বড় দোকানের সামনের ফুটপাথের উপর রাস্তার পথিক ও দর্শকদের মনোরঞ্জন করবার জন্য কনসার্ট পার্টি বসে। এই গান-বাজনার জন্য প্রত্যেক দোকানের নিজস্ব স্বতন্ত্র বাদক-দল আছে । দোকানের সামনে চেয়ার-টেবিল পেতে চা, সোডা, আইসক্রিম ইত্যাদি খাওয়ার বন্দোবস্ত আছে। লোকে পানভোজন ও গীতবাদ্য শ্রবণ একসঙ্গেই করতে পারে। এদেশের লোক যে অত্যস্ত সঙ্গীতপ্রিয় সে-কথা এক দিনেই বুঝতে পেরেছিলুম। রাত্রে হোটেলে খেতে বসবার পর রাস্তায় শতাধিক লোকের ছুটে চলে যাওয়ার পায়ের শব পেয়ে হোটেলের চাকরকে জিজ্ঞাস করলুম, রাস্তায় এত ভিড় কিসের ? সে বললে, লোকে বিকেল থেকে এতক্ষণ ধ’রে সানমার্কোতে গানবাজনা শুনছিল, এখন আটটা বাজতে দোকান বন্ধ হওয়ায় সবাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছে । যখন কলকাতা শহরের মির্জাপুর ষ্ট্রীট দিয়ে যাই আর রাস্তার দু-পাশের ফুটপাথের উপর মিষ্টাল্পের দোকানের রেডিও শোনবার জন্য অনেক লোককে দাড়িয়ে থাকতে দেখি, তখন এই সানমার্কোর কথা মনে পড়ে যায়। অবশু সানমার্কোর বাজনা যে খুবই ভাল সে-কথা বলাই বাহুল্য। কাচের নানা রকম পুতির মালা, আলোর রকমারি শেড, সোনালী কাজ-করা টি সেট, ফুলদানি ও অন্যান্ত অনেক রকম জিনিষ এখানে তৈরি হয়ে থাকে। ভেনিসের লেসé অতি স্বন্দর। আড্রিয়াটিকের উপরে মুরানো ও বুরনো নামে ছুটি দ্বীপ আছে, এখানে লেস-তৈরির জন্ত স্কুল ও কাচের