পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আফ্রিকার ভীষণ সৰ্প মাম্বা’ ীিঅশেষচজ বম, বি.এ মাম্ব আফ্রিকার অতি ভয়ঙ্কর বিষধর । এদেশের লোকে যেমন কেউটিয়ার নাম শুনিলে চমকিয়া উঠে আফ্রিকার লোকেরা সেইরূপ মাম্বার নামে ভয়ে শিহরিয়া থাকে। সকল প্রকার বিষধর সৰ্পের মধ্যে সে-দেশের লোকের মাম্বাকেই সৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক ভয় করে। দেখিতে ফশাবিহীন নিরীহ সপের মত হইলেও ইহারা যে কিরূপ ভয়ঙ্কর সৰ্প তাঁহাই এই প্রবন্ধে বিবৃত করিব। মাম্বার বৈজ্ঞানিক নাম ডেনড্রাসপিস (Dendraspis) । আফ্রিকার উত্তর-সীমান্তের কয়েকটি স্থান ব্যতীত ঐ মহাদেশের প্রায় সৰ্ব্বত্রই এই বিষধরকে দেখিতে পাওয়া যায়। যে-সকল স্থানে গুল্ম বা ক্ষুদ্র বৃক্ষের শ্রেণী থাকে সেই সকল স্থানেই নিঃসংশয়ে ইহাদের অবস্থিতি নির্ণয় করা যাইতে পারে। ইহাদের আকৃতি দেখিলে ইহাদিগকে সাধারণতঃ নিৰ্ব্বিষ গেছে সাপ বলিয়াই ভ্রম হইয়া থাকে। “লাউডগা’, ‘বেত আঁচড়া প্রভৃতি সপেরা যেমন সরু ও লম্বা হয় ইহারাও সেইরূপ সরু ও দীর্ঘাকার হইয়া থাকে। এক-একটি মাম্বা ৬৮ ফুট দীর্ঘ হয় এবং এক জাতীয় মাম্বাকে দ্বাদশ ফুট অবধি দীর্ঘ হইতে দেখা যায়। এরূপ দীর্ঘাকার হইলেও ইহাদের দেহ অত্যন্ত সরু । সাত ফুট লম্বা মাম্বার দেহ দেখিতে চাবুকের ছড়ির মত সরু । ইহাদের অত্যুগ্র বিষের কথা চিন্তা করিলে ইহাদিগকে গোঙ্গুরাদি সপের সমপৰ্য্যায়ভুক্ত না করিয়া থাকা যায় না। এই তীব্র বিষের জন্ত আফ্রিকার লোকেরা অনুমান করে যে মাম্বারা এক সময়ে গোফুর-জাতীয় সপই ছিল। বৃক্ষে উঠতে শিখিয়া ও বৃক্ষের উপর ক্রমাগত অবস্থান করিয়া ইহার কালক্রমে “গেছে সাপে পরিবর্তিত হইয় পড়িয়াছে। ইহারা যে কোন কালে গোঙ্গুর-জাতীয় সৰ্প ছিল তাহা ইহাদের আকার দেখিলে আদেী বিশ্বাস করা যায় না। তবে ইহাদের উগ্র বিবের কৰা স্মরণ করিলে -গোস্কুরের সহিত ইহাঙ্গের যে কোন কালে জাতিগত ঐক্যের সম্ভাবনা ছিল তাহা অবিশ্বাস করিয়া একেবারে প্রত্যাখ্যান করিতে ইচ্ছা হয় না। আফ্রিকায় চারি শ্রেণীর মাম্বা দেখিতে পাওয়া যায়। ইহাদের মধ্যে দক্ষিণু-আফ্রিকার মাম্বারাই সমধিক প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছে। মাম্বাদের সাধারণ বর্ণ ফিকে সবুজ। এই রক্ষণশীল বর্ণের সাহায্যে ইহার এদেশের "লাউডগা সপের মত ঝোপ ও ক্ষুদ্র বৃক্ষাদির মধ্যে আত্মগোপন করিয়া অনায়াসে শিকার ধরিয়া থাকে। লাউডগার যেরূপ সরু ও দীর্ঘাকার হয় ইহাদের আকৃতিও অনেকটা সেইরূপ । দৈর্ঘ্যে ইহার ছয় হইতে আট ফুট অবধি হইয়া থাকে। আর এক জাতীয় মাম্বাকে প্রায় দ্বাদশ ফুট অবধি দীর্ঘ হইতে দেখা যায়। এই শেষোক্ত শ্রেণীর বর্ণ কৃষ্ণাভ হরিৎ । দেহের উপর স্বৰ্য্যকিরণ না পড়িলে ইহাদের বর্ণ যে সবুজ তাহা অনুমান করা যায় না। এই কারণে ইহাদিগকে “কৃষ্ণ মাম্বা" বলিয়া উল্লেখ করা হয় । ইহাদের মস্তক সরু ও লম্বী ভাবের এবং চক্ষুর আকার বিশেষ বৃহৎ হইয়া থাকে। মুখের একেবারে পুরোভাগেই নাসারদ্ধের নিয়ে ইহাদের বিষদস্তের উদগম হইয়া থাকে। এই বিষদস্তের আকারও বেশ বৃহৎ হয়। ভয় পাইলে বা তাড়িত হইলে ইহারা মুখব্যাদান করিয়া থাকে। সেই সময়ে ইহাদের বৃহৎ বিষদস্ত দুইটি স্পষ্ট দেখিতে পাওয়া যায়। ইহাদের বিষ যে কিরূপ উগ্র তাহ পূর্বে উল্লেখ করিয়াছি। অনেকের মতে এই বিষ আফ্রিকার সকল বিষধরের বিষ হইতে উগ্র ও মারাত্মক। আফ্রিকার গোকুর ও ভাইপারের বিষ নাকি ইহাদের বিষের মত তীব্র নয়। দংশনকালে ইহারা মস্তক এবং দেহের পুরোভাগ অত্যধিক পরিমাণে পিছন দিকে হেলাইয়া দেয় এবং দংশনে যে বিষ ঢালিয়া দেয় তাহাতে অচিরেই জীবজন্তুর প্রাগনাশ ঘটিয়া থাকে। আফ্রিকায় গোঙ্গুয়ের জংশনে যত লোকের প্রাণনাশ ঘটে, ইহাদের দংশনেও সেই পরিমাণ লোকের স্বত্যু হইয়