পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

مسeالمائ প্রবাসী SNP88. ভাড়ার টাকা কৃষ্ণ শীঘ্র ফেরত পাঠাইবে । আনন্দে রমাপ্রসাদের চোখে জল আসিল । দূরে থাকৃ, তৰু তারা যে ভাল আছে, সচ্ছল আনন্দে আছে, এ কি কম মুখ ? এই মুখের জন্তই ত এত দীর্ঘকাল ধরিয়া তাহার প্রাণপণ চেষ্টা। চোখে তিনি না দেখেন দুঃখ নাই, রাধারাণীও চোখে দেখেন নাই । টাকা একদিন আসিল, কৃষ্ণারই নামে কি ভাবিয়া রমাপ্রসাদ তাহা জমা করিয়া রাখিলেন। কিন্তু কৃষ্ণার চিঠিতে আর কোনও নুতন কথা নাই, কোনও বৈচিত্র্য নাই। বুড়া বাপকে কৃষ্ণ কি একেবারেই ভুলিয়া গিয়াছে, না হইলে নিজেদের স্বখের কথা তাহাকে দুই-চারিটা শুনাইলে তিনি যে কত মুখ পাইতেন তাহা সে বুঝিল না ? জীবনে কৃষ্ণাই ত ছিল তাহার একমাত্র অবলম্বন, পিতাকে ছাড়িয়া যাওয়ার কথা ভাবিয়াই তাহারও চোখে বান আসিত, আজ নিজেদের স্বখ-সৌভাগ্যের দিনে নিঃসঙ্গ শোকাৰ্ত্ত বুদ্ধ পিতাকে নিজেদের আনন্দের এক কণা ভাগও কি সে পরিবেশন করিতে পারিল না ? রবিবারের পর রবিবার একই রকম চিঠি আসিত, “আমরা ভাল আছি, আশা করি তুমি ভাল আছ।" রমাপ্রসাদ দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া চিঠি বন্ধ করিয়া রাখিতেন, এক বারের পর দুইবার আর খুলিয়া দেখিতে ইচ্ছা করিত না। সংসারে কেহ কাহারও নয়, অনর্থক মায়া বাড়াইবার চেষ্টা করিয়া কি লাভ ? তাহার দিন ত ফুরাইয়া আসিয়াছে, অতীতকে ভুলিয়া এখন ভবিষ্যতের আবাসের কথা ভাবাই ভাল । যদি কঙ্কাজামাতার এই নবলব্ধ আনন্দের জালে তিনিও জড়াইয়া পড়িতেন ভাহা হইলে হয়ত শেষ যাত্রাপথের কড়ি সংগ্রহে তাহার ভুল হইয়া যাইতে পারিত। বিধাতা ভালই করিয়াছেন, কৃষ্ণাকেও পিতৃস্নেহের কথা ভুলাইয়া দিয়াছেন। এখন তাহার অখণ্ড অবসর বিধাতার ধ্যানেই কাটিবে। রবিবার সকালবেলা মনটা চঞ্চল হয় বলিয়া রমাপ্রসাদ সেই সময়টা আপনার ঘরে গীতা লইয়া বসেন। অন্তদিনের মত সেদিনও তাহার চিরপুরাতনতৃত্য বৈজু টেবিলের উপর একখানা চিঠি রাখিয়া গেল। মনকে কতখানি জয় করিতে পারিয়াছেন দেখিবার জন্ত রমাপ্রসাদ বইয়ের উপর ঝুঁকিয়া পড়িলেন, চিঠির দিকে তাকাইলেন না। কৰ্ম্মযোগ, জ্ঞানযোগ, ভক্তিযোগ মাথার ভিতর ঘুরিতে লাগিল, কিন্তু শতবার পঠিত গীতার অর্থ কেমন যেন প্রতিবার উচ্চারণের সঙ্গেই মনের সম্মুখে অস্পষ্ট হইয়া আসিতে লাগিল। রমাপ্রসার গীতা বন্ধ করিয়া মাথায় ঠেকাইয়া রেশমের রুমালে বাধিয় তুলিয়া রাখিলেন। চিঠিখান হাতে তুলিয়া খুলিতে কেমন ইতস্তত: করিতে লাগিলেন। খুলিলেই ত রহস্য স্পষ্ট হইয়া যাইবে । হয়ত দুই লাইন কুশল প্রশ্ন ও প্রণামাদি ছাড়া কিছু নাই। বদ্ধ করিয়া তবু ভাবা যায় যে কৃষ্ণার স্বদূরের গৃহস্থালীর সকল হাসিগানের স্বর, সকল পুষ্পস্তবকের সৌরভ ইহার ভিতর বোঝাই হইয়া রহিয়াছে। রমাপ্রসাদ চিঠি খুলিলেন। ছোট্ট চিঠি, বড় নয়, কিন্তু সেই পুরাতন কথার পুনরাবৃত্তি আর ইহাতে নাই। সম্পূর্ণ নূতন সংবাদ, কৃষ্ণ ফিরিয়া আসিতেছে। কিন্তু মিহির লঙ্গে আছে কি নাই, চিঠি হইতে কোন কথাই ত বুঝা গেল না । সে যে একা আসিতেছে এমন কথাও ত স্পষ্ট লেখা নাই, সে যে মিহিরের সঙ্গেই ফিরিতেছে এরূপ ইঙ্গিতও চিঠিতে খুজিয়া পাওয়া যায় না। রমাপ্রসাদ মহা বিপদে পড়িলেন। মিহিরের বাড়ীতে গিয়া খোজ করিবারও তাহার সাহস ছিল না, কারণ বাড়ীর কাহাকেও ঘূণাক্ষরে না জানাইয়া বেীকে সোজা বিলাতে ডাকিয়া লইয়া যাওয়াতে মিহিরের অপেক্ষ তাহার বন্ধুর উপরেই সে বাড়ীর লোকের আক্রোশ বেশী। তাহদের মতে এ সমস্ত ব্যাপারটাই কৃষ্ণার কারসাজি। এখন একথা তাহাদের কাছে তুলিলে বপুর বৃদ্ধ পিতাকে তাহারা কি প্রকার স্বমিষ্ট সম্বৰ্ধনা করিবে কে জানে ? সাত দিন রমাপ্রসাদকে নীরবেই সকল উদ্বেগ সহিতে হইল। একেবারে একলাই তিনি গেলেন কস্তাকে সম আসিতে। কি জানি কোথা হইতে কুটুম্বজনের প্রতি অশ্রদ্ধ প্রকাশ হইয়া পড়ে, তাহার চেয়ে তাহাদের দূরে রাখাই ভাল। * নিরাভরণা মানমুখী কৃষ্ণ নিঃসঙ্গ গাড়ী হইতে নামিয়া পিতার পায়ের উপর মাখা ঠেকাইয়া কাদিয়া ফেলিল । ভয়ে ও বিস্ময়ে রমাপ্রসাদের কণ্ঠ শুকাইয়া আসিল । কৃষ্ণৰে তুলিয়া ধরিয়া অতি অস্পষ্ট ক্ষীণকণ্ঠে তিনি জিজ্ঞান कब्रिह्णन, “जांभाहे कहे मा ?”