“চণ্ডীদাস-চরিত” ( দ্বিতীয় প্রবন্ধ ) শ্ৰীযোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি ( ১ ) পুর্থী-প্রাপ্তি প্রথম প্রবন্ধ আষাঢ়ের “প্রবাসী"তে বেরিয়েছে। গত পূজার পর পুর্থীরও বাকি পাতা পেয়েছি। পুখী-প্রাপ্তির, পুর্থীর ও কবির বিস্তারিত বৃত্তান্ত জানতে পেরেছি। সন ১৩২২ সালে বাঁকুড়া জেলায় দুভিক্ষ হয়েছিল। লোকের অন্ন-কষ্ট দূর করতে নানা দয়ালু সংঘ উদ্যোগী হয়েছিলেন। তন্মধ্যে কলিকাতা-সাধারণ-ব্রাহ্ম-সমাজ হ’তে ডাঃ প্রাণকৃষ্ণআচাৰ্য্য-প্রমুখ কয়েক জন ভিক্ষা দিতে এসেছিলেন। এরা ছাতনার দক্ষিণ-পশ্চিমে দুই ক্রোশ দূরে কেঞ্জাকুড়া গ্রামে বাসা করেছিলেন। মাস খানেক পরে এক ক্রোশ দক্ষিণে লখা(লখা) শোল গ্রামে সেন-দের পাকা দুর্গামেলায় বাসা করেন। সেন-দের একজনের সঙ্গে ভিক্ষাদায়ক শ্ৰীযুত হরিদাস-মল্লিকের তর্কাতকি হয়। মল্লিক বলেন, চণ্ডীদাস বীরভূমের নায়ুর গ্রামে ছিলেন ; সেন বলেন, তারা চিরকাল শুনে আসছেন চণ্ডীদাস ছাতনায় ছিলেন । আর বলেন, আমাদের বাড়ীতে চণ্ডীদাসের পুর্থী আছে। মল্পিক সে পুর্থী দেখেন নি। ১৩৩৪ সালে শ্ৰীযুত মহেন্দ্র-সেন সে পুর্থীর এক নকল বাঁকুড়ার এক ডাক্তারকে, এবং পরে ১৩৩৭ সালে আসল পুর্থী এক হাকিমকে দিয়েছিলেন । হাকিম ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু কে নিলে, কোথাও আছে কি গেছে, সেন কিছুই বলতে পারেন না । সেন-দের অনেক জ্ঞাতি। অনেকে বিদেশে থাকেন, পর্ব পড়লে বাড়ী আসেন। সম্প্রতি নকলই সম্বল। দেখছি, এতে প্রাপ্ত পুর্থীর প্রথম দশ পাত, “জাগহ
- রাঢ়-দেশে পু-থি শুনি, পুরাতন পুর্থীতে এই বানান আছে। আমি পুখী বালাম শুদ্ধ মনে করি। কারণ, (১) স” পুস্তী হতে *পী, এসেছে। স” পুস্ত-ক হতে পে-খা । পোখা শব্দ পূর্ব কালে প্রচলিত ছিল। এখন ওড়িয়াতে আছে। (২) পোখা বড়, পুখী ছোট। বাংলা ভাষায় ৰাখে পী হয়। যেমন, কোর্ণ কুলী, চালনা চালনী।
tూ\9= R জনমভূমি” পৰ্য্যস্ত আছে। আর, রামী-চণ্ডীদাস ও রামী-রোহিণীর উক্তি-প্রত্যুক্তি অতিরিক্ত আছে। কৃষ্ণসেনের পুী ধরে তাতে রামী-চণ্ডীদাসের প্রথম মিলন রসাল করা হয়েছিল । ১৩৪০ সালের মাঘ মাসে ডক্টর শ্ৰীযুত স্থনীতিকুমারচট্টোপাধ্যায় বাকুড়া ভ্রমণে এসেছিলেন। তিনি কলিকাতায় ফিরে যেয়ে মল্লিকের নিকট পুর্থীর অস্তিত্ব গুনেছিলেন। র্তার কাছ হতে ঐযুত রামায়ুজ-কর ও অপর দুই বন্ধু শুনেছিলেন। এরা শুনেছিলেন, মহেন্দ্রনাথ-চক্রবর্তীর বাড়ীতে পুর্থী আছে। কিন্তু লখ্যাশোল গ্রামে কোন চক্রবর্তী নাই। শ্ৰীযুত রামানুজ-কর শ্ৰীযুত মহেন্দ্রনাথ-সেনের বাড়ীতে পুর্থীর সন্ধান পান। তখন সেনের নিকট পুধীর ১১, ১২র পাতা বাদে প্রথম কুড়ি পাতা ছিল । পাটায় বাধা ছিল। তিনি মাঝে মাঝে সে পুর্থী নিয়ে কেঞ্জাকুড়ায় যেয়ে শ্ৰীযুত কর ও অপরকে পড়ে শোনাতেন। কিন্তু পুর্থী হস্তাস্তর করতে চান নি। এক দৈবযোগে আমরা পুখীখানি পেয়েছি। ১৩৪১ সালের বৈশাখ মাসে এখানকার এক বাঙ্গালী বড় হাকিম এই পুর্থী পেতে ইচ্ছা করেছিলেন। সে কথা সেনের কানে দৈবাৎ পহুছে । সেন চিস্তিত হ’লেন। বড় হাকিম ; চাইলে দিতেই হবে, হয়ত দেশাস্তরিতও হবে। আমরা চণ্ডীদাস-সম্বন্ধে অনুসন্ধান ক’রছি, একথা শুনে তিনি কর-কে দিয়ে নিশ্চিম্ভ হন। তখন ১১,১২র পাতা বাদে পুীর ৪৪ পাতা ছিল। আমি সে বৎসর কলিকাতায় ছিলাম। সেখানে শ্ৰীযুত কর আমাকে এই সংবাদ দেন। আমি পূজার দিন কয়েক পূৰ্ব্বে বাঁকুড়া এসে পুর্থী পাই। শ্ৰীযুত স্বনীতিকুমার-চট্টোপাধ্যায়ের নিকট সংবাদ না পেলে পুখী পেতে দেরি হত, কিম্বা পুী হস্তান্তরিত হত। আমরা তার সাধুবাদ করছি। ঐযুত সেন বলেছেন, পুৰীখানার জন্তে তার বাড়ীতে গত পূজার সময় লোক যাতায়াত করেছিল ।