পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

முல்இ প্রবাসী ১৩৪২ একাদশী, ভাস্কর উত্তর গগনে চলেছেন, আর অকারণে জীর্ণ গোপালের মৃত্যু হয়, তাও মিলিয়ে দেখেন নি,তথাপিইতবৃত্তীয় দেহ বহা কেন ?২৭ কালের সহিত ঐক্য আছে। জনশ্রুতি কেমনে মিথ্যা চণ্ডীদাস ॥ তুমি আমার সাধন-সঙ্গিনী ; তুমি কোথায় থাকবে ? রামী ॥ তুমি যথা আমিও তথা । চণ্ডীদাস ॥ তবে আয়োজন কর । আমি কাল স্বৰ্য্যোদয় হতে মৌনী হব। কথা কইব না, অন্ন জল ছুব না । পুরঞ্জনকে বল, দগ্ধ না করএ সব জেন চিতানলে । নামুরের মাঠে রাখে মৃত্তিকার তলে । তারি পাসে তোরে জেন করএে স্থাপন । আছোরাত্র করে জেন হরিসঙ্কিৰ্ত্তন ॥ ( ৫ ) পর্যালোচন “চণ্ডীদাসচরিত” আখ্যান নয়, দৃষ্ট নয়,—ইহা উপাখ্যান, শ্রত। চরিতটি লোকপরম্পরাগত, ইতিহ-মূলক ; অতএব ঐতিহাসিক। ইহার সবই কবি-কল্পিত নয় ; চণ্ডীদাস নয়, বাসলী নয়, রাধাকৃষ্ণ বিষয়ে চণ্ডীদাসের গীত-রচনাও নয় ; অতএব ইহা আখ্যায়িকা। উপাখ্যান ও ঐতিহাসিক আখ্যায়িক হতে ইতবৃত্ত উদ্ধার কঠিন । তথাপি যে কথা মানবপ্রকৃতির বিরোধী নয়, দেশ ও কালের বিরোধী নয়, যে কথা একাধিক লোক বলেছেন, বিশেষত: তার দেশের লোক বলেছেন, সে কথা সত্য মানতে হয়। এই রকমে মহাভারত ইতিহাস । আমরা কুরুপাণ্ডবের যুদ্ধ, ভীষ্ম প্রোণাদির চরিত সত্য মনে করি । ( ১ ) উদয়সেনের পুর্থী হতে চণ্ডীদাসের আবির্ভাব ও তিরোভাবের কাল পাচ্ছি। তিনি ১২৪৬ শকের চৈত্র মালে (ইং ১৩২৫ সালে ) জন্মগ্রহণ করেছিলেন, এবং ১৩২৪ শকের মাঘমাসে (ইং ১৪০৩ সালে ) ছত্রিনার নাম্নর বা নামুরের মাঠে ৭৮ বৎসর বয়সে দেহরক্ষা করেছিলেন । এই বয়স অসম্ভব নয় । উদয়-সেন চণ্ডীদাসের জন্মশক লেখেন নি, কত বয়সে চণ্ডীদাসের অন্তধান, তা হিসাব করেন নি। কোন শকে তিনি পাণ্ডুআ গেছলেন, কোন শকে নিষ্ঠুর রাজা কিসেন ২৭) চণ্ডীদাস একাদশীর দিন প্রাতঃকালে মহানিক্সায় অচেতন ছন। তখন সৌর মাঘ মাস। মাঘ মাসে সোম, বুধ, শুক্ৰ, এই তিন বারে প্রথম ৪ ও অমৃতযোগ । দেখছি, ১৩২s শকে পৌৰ-গুরু-চতুর্দশীতে মাঘ-সংক্রমণ এবং মাঘ মাসের শেষদিকে মাঘগুঞ্জ-একাদশী বুধবারে হয়েছিল। এই ঐক্য আকস্মিক হতে পারে, छुषंiश् िfछेड्बौश्च । বলি । কবি লিখেছেন, কেন্দুলীতে রামী চণ্ডীদাসকে বলেছিল, “ভাঙ্গিতে ভবের খেলা বেশী দেরি নাই।” এতে পাওয়া যায়, চণ্ডীদাস বৃদ্ধ বয়সে কেন্দুলী এসেছিলেন। কিন্তু পাণ্ডুঅ-যাত্রা ৩৪ বৎসর বয়সে হয়েছিল। উদয়-সেন ইচ্ছা করলে এই বিসম্বাদ রাখতেন না। অতএব বুঝছি, তিনি যেখানে যেমন শুনেছিলেন, তেমনই লিখেছিলেন। তিনি পৌরাণিকের • চিরপ্রসিদ্ধ রীতি মেনে চলে’ছিলেন । ( ক ) ১৩২৪ শকে চণ্ডীদাসের অন্তধর্ণন, এইরূপ জনশ্রুতি বহুকাল হ’তে চলে আসছিল । ১৪০৭ শকে চৈতন্যদেব আবিভূত হয়েছিলেন। অতএব চণ্ডীদাস চৈতন্যদেবের আবির্ভাবের ৮৩ বৎসর পূর্বে অস্তহিত হয়েছিলেন। হারাধন-ভক্তিনিধিও এই কথা কোথাও পেয়েছিলেন, সেই মত লিখেছিলেন । (খ ) একটা ছড়ায় আছে, বিধুর নিকটে বসি নেত্রপক্ষবাণ । নবহু নবহু রস গীত পরিমাণ ॥ ইহার অর্থ ১৩২৫ শকে চণ্ডীদাসের গীতসমাপ্তিকাল। অর্থাৎ এই শকে চণ্ডীদাস ইহলোকে ছিলেন না । যখন এই ছড়া রচিত হয়েছিল, তখন লোকে শুনেছিল চণ্ডীদাস ৬৯৯টি গীত বেঁধেছিলেন । (গ) দেবীদাস ও চণ্ডীদাস, নিরঞ্জন-মুখোপাধ্যায়ের পুত্র ছিলেন। উদয়-সেনের পুখীতে পাচ্ছি, দেবীদাসের পুত্রের নাম পুরঞ্জন ছিল। ১৩২৪ শকে পুরঞ্জনের বয়স প্রায় ৪০ বৎসর। সংস্কৃত “বাসলীমাহাক্স্যে” পাচ্ছি, ১৩৮৭ শকে পদ্মলোচন সে পুখী লিখেছিলেন। এখন দেখছি, পদ্মলোচন পুরঞ্জনের পুত্র এবং দেবীদাসের পৌত্র। ১৩২৪ শকে পদ্মলোচনের জন্ম হয় নাই। যদি ১৩২৭ শকে জন্ম হ'য়ে থাকে, তা হ’লে তিনি ৬০ বৎসর বয়সে “বাসলী-মাহাত্ম্য" লিখেছিলেন। ইহাও অসম্ভব নয়। অতএব ১৩২৪ শকে চণ্ডীদাসের দেহরক্ষায় অবিশ্বাসের কোন হেতুই পাচ্ছি না। এই পুখীতে আরও পাচ্ছি, ১৩২৪ শকে ছাতনার রাজ হামীর-উত্তর জীবিত ছিলেন। বোধ হয় তিনি বয়সে