পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Agâ. ফেব্রুয়ারী কিশোরী বাবুর গড়পার রোড গৃহে প্রাতঃকালে র্তাহার চারিটি অবিবাহিত কন্যাদের বেলা ৮০টা পৰ্য্যস্ত নিদ্রা হইতে উঠিতে না দেখিয় তাহদের মাতা দরজা ভাঙিয়া ঢুকিয়া দেখেন, যে, চব্বিশ বৎসর বয়স্ক পারুলবালা, বাইশ বৎসর বয়স্ক দেবী, কুড়ি বৎসর বয়স্ক! গঙ্গা ও আঠার বৎসর বয়স্ক যমুনা অজ্ঞান হইয়া বিছানায় পড়িয়া আছে। ডাক্তার আসিয়া সকলকে হাসপাতালে পাঠাইতে বলেন। একজনের পথে, ও দুই জনের হাসপাতালে, মৃত্যু হয়, এবং পারুলবালা শঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে থাকে। সকলেই আত্মহত্যার জন্য আফিং সেবন করিয়াছিল। তাহাদের বিবাহে পণের জন্য বহু টাকার আবশ্বক হওয়ায় তাহদের পিতাকে সঙ্কট হইতে মুক্তি দিবার জন্য তাহারা আত্মহত্যা করিবার সঙ্কল্প করিয়াছিল । তাহীদের তিন ভগ্নীর ইতিপূৰ্ব্বে বিবাহ হইয়া গিয়াছে। অনেক প্রাপ্তবয়স্ক বালিকার বিবাহ না-হওয়ায় যে এইরূপ মর্শ্বস্তুদ ঘটনা ঘটে তাহার কারণ অনেক । পণ দিয়া জামাই কিনিবার প্রথা এবং বরের কর্তৃপক্ষ ও বরদের দ্বারা পশুর মত বরের দর ইকো ইহার একটি কারণ। যাহাঁদের টাকা কম, তাহারা জামাই কিনিতে পারে না। আর একটি কারণ যুবকদের মধ্যে বেকার সমস্তা। তাহারা উপার্জক না হইয় বিবাহ করিতে চায় না। আর একটি কারণ যুবকদের মধ্যে ব্যয়বহুল জীবনযাত্রা নিৰ্ব্বাহের প্রতি আসক্তি এবং সাদাসিধা চালচলনের প্রতি বিরাগ। আর একটি কারণ বালিকাদের মধ্যে শিক্ষার-বিশেষতঃ অর্থকরী শিক্ষার—অভাব । অর্থকরী শিক্ষা পাইলে তাহারা অবিবাহিত থাকিয়াও কাহারও গলগ্রহ না হইতে পারে। তাহার উপর আছে অবিবাহিতা বালিকাদের প্রতি গঞ্জনবাক্য প্রয়োগ, দুবৃত্ত লোকদের তাহাদিগকে বিপথে লইয়া যাইবার চেষ্টা, তাহাতে বাধা দিবার সমাজের অপ্রবৃত্তি ও অক্ষমতা এবং বালিকাদেরও আত্মরক্ষায় অসামর্থ্য । এই সকল দিকে দৃষ্টি রাখিয়া সমাজকে প্রতিকারচিস্তা করিতে হইবে। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করিবার প্রস্তাব হাবড়া জেলা কীসম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাবগুলির মধ্যে প্রবাসী SNరీg& একটি এই –“বিশ্বসাহিত্য-ভাণ্ডারে বাংলাভাষীর দান স্মরণ করিয়া এই সম্মেলন বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষারূপে গ্রহণ করিতে নিখিল ভারত রাষ্ট্রীয় মহাসভাকে (অর্থাৎ কংগ্রেসকে) অনুরোধ করিতেছে।” বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করা আমরাও উচিত মনে করি। প্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনের বর্তমান বৎসরের অধিবেশনে সভাপতি অধ্যাপক অমূল্যচরণ বিদ্যাভূষণও এই মত প্রকাশ করিয়াছেন। অনেক বৎসর পূৰ্ব্বে অধ্যাপক জিতেন্দ্রলাল বন্দ্যোপাধ্যায় এই মতের অনুকূল যুক্তি মডার্ণ রিভিয়ুতে একটি প্রবন্ধে লিপিবদ্ধ করিয়াছিলেন। আমরা কিন্তু কংগ্রেসকে এ বিষয়ে কোন অনুরোধ করিতে চাই না ; কারণ এরূপ অনুরোধ রক্ষিত হইবার বিন্দুমাত্ৰও সস্তাবনা নাই। বাঙালীরা নিজেদের সাহিত্যসম্পদ বাড়াইয়া চলুন, ংলা ভাষার দুৰ্ব্বলতা ও অসম্পূর্ণতা দূর করুন, এবং তাহ যাহাতে অন্যভাষাভাষীরা সহজে শিখিতে পারেন, তাহার নানা উপায় অবলম্বন করুন । নব শিক্ষাসংঘ আগে এই মাসের বিবিধ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথের যে বক্তৃতাটি হইতে অনেক কথা উদ্ধৃত করিয়াছি, তাহা তিনি নব শিক্ষাসংঘের উদ্যোগে বঙ্গীয় শিক্ষাসপ্তাহের এক দিন পড়িয়াছিলেন । ইহার নাম দেওয়া হইয়াছে “শিক্ষার স্বাঙ্গীকরণ " বিশ্বভারতী ইহা একটি পুস্তিকার আকারে বাহির করিয়াছেন। মূল্য আট আনা । তাহাতে ঐযুক্ত ক্ষিতিমোহন সেনের “শিক্ষার স্বদেশী রূপ” শীর্ষক প্রবন্ধটিও আছে। ইহাও নব শিক্ষাসংঘের অধিবেশনে পঠিত হইয়াছিল। “শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে সঙ্গীতের স্থান" শীর্ষক রবীন্দ্রনাথের যে প্রবন্ধটি আমরা অন্যত্র ছাপিয়াছি, তাহাগু এই সংঘের অধিবেশনে পঠিত হয়, কিন্তু ইতিপূৰ্ব্বে মুদ্রিঃ হয় নাই। এই নব শিক্ষাসংঘের অধিবেশনে আরও অনেক অমুধাবনযোগ্য প্রবন্ধ পঠিত হইয়াছে। এই সংঘের (“New Education Fellowship"o ) Tstofs ào. . রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সম্পাদক ঐযুক্ত ধীরেন্দ্রমোহন সেন ? ঐযুক্ত অনিলকুমার চন, শাস্তিনিকেতন। সম্পাদকদিগ । চিঠি লিখিলে তাহারা সমুদয় সংবাদ দিবেন।