পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

o والاها সহযাত্রীদের মধ্যে দু-চার জন আমেরিকান টুরিষ্টের উৎকট সখ হওয়ায় তারা এই রকম গাইড সঙ্গে নিয়ে দেখে এল । আমাদের ফেরবার সময় হ’ল, আবার সবাই ট্রেনে ক’রে ফিরে এলুম। ফেরবার সময় ভিস্বভিয়ুসের খানিকট নীচেই এক হোটেলে ট্রেন-কোম্পানী আমাদের ট্রেন-সমেত লোকজনকে বৈকালিক চা ও কেক খাইয়ে দিলে। এ-সবের দাম টিকিটের সঙ্গেই ধীরে নেওয়া হয়। আমরা আবার নেপলস্ শহরে ফিরে এলুম। এই আগ্নেয়গিরি যা দেখা হ’ল, সে-কথা বোধ হয় কখনও ভুলব না। ২রা অক্টোবর তারিখে নেপলস ছেড়ে আমরা আবার ফ্লোরেন্সে এসে নামলুম। এখানে আমরা আমাদের আগেকার পরিচিত বোর্ডিং-হাউসে এসে উঠলুম। বোর্ডিঙের কত্রীকে জানালুম আজ রাত্রে আমি নিজে কিছু রান্না করতে চাই। তিনি খুব খুশী হয়ে আমার রায়ার যোগাড় করে দিলেন। অনেক দিন পরে আবার সেদিন রাত্রে দেশী রান্নায় মুখ বদলানো হ’ল। সে-রাতটা ফ্লোরেন্সে বিশ্রাম করে আমরা পরদিন ভেনিসের ট্রেন ধরলুম। আমাদের দেশে ফেরবার জাহাজ ভেনিস থেকেই ছাড়বে। ভেনিসে পৌছে গণ্ডোল চড়ে হোটেল ম্যানিনে এসে উঠলুম ; এখানে যে-ক'দিন ছিলুম, দু-বেলাই পূর্বের দেখা দোকানগুলিকে আবার একবার করে দেখে বেড়াতে লাগলুম। এ-সময় কটা দিন রাস্তায় অনেক ভারতবাসীর সঙ্গে দেখা হয়ে যেত। সকলেই নানা দেশ বেড়িয়ে এখানে হাজির হয়েছে । ৭ই অক্টোবর তারিখে সবাই ‘কণ্টিভার্ডে জাহাজে স্বদেশে ফিরবে। একদিন বিকেলবেলা সানমার্কে স্কোয়ারে বেড়াবার সময় দেখি শ্ৰীযুত অবনীনাথ মিত্র মহাশয় সস্ত্রীক কোথা থেকে এসে পড়েছেন। এরাও ওই জাহাজে ফিরবেন। মিত্ৰ-মহাশয়ের চুল আলুথালু, পরনের কোটে একটাও বোতাম লাগানো নেই। গলা থেকে মফলার খুলে ঝুলে পড়ছে। আমাদের দেখেই মহা উৎসাহে চেচামেচি ক'রে বললেন, “তোমরাও হাজির হয়েছ ?” আমি জিজ্ঞাসা করলুম, “আপনার এমন বেশভূষা কেন ?" আমাকে এক ধমকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, “তুমি চুপ কর ত ; আমি এখন বাড়ি যাচ্ছি, আমার সাজগোজে দরকারটা কি শুনি " শুনলুম তারা হোটেল ইউনিভাসোতে षांघ्नि । প্রবাস" SN98క్చె ৭ই অক্টোবর ভোরবেলা নিজেদের জিনিষপত্র গুছিয়ে ব্রেকফাষ্ট খেয়ে হোটেলের দেনাপাওনা মেটানো হ’ল । আজ মন বড় প্রফুল্ল। দীর্ঘ চার মাস পরে নিজের দেশের দিকে পাড়ি দেওয়া হবে। মন বড় ব্যস্ত, কখন জাহাজে উঠব তাই ভাবছি। বেলা ন’টার সময় আবার গণ্ডোল চড়ে খুনী মনে গ্র্যাগু-কেনালের দিকে চললুম। জাহাজ সেখানে টিয়েষ্ট থেকে এসে অপেক্ষা করছে। ভেনিসের ব্যালাডপীয়ারে এসে নামলুম। জাহাজ তখন সামান্ত দূরে ছিল। সিড়ি লাগাবার অপেক্ষায় দু-জনে দুটি স্বটকেসের উপর বসে রইলুম। ঘণ্টাখানেক পরে সিড়ি লাগান হ'লে সার্জেণ্টকে ছাড়পত্র দেখিয়ে উপরে এসে নিজেদের কেবিন-নম্বর মিলিয়ে খুজে বের করে ঢুকলুম। লণ্ডন থেকে যা ভারী জিনিষ আগে পাঠিয়ে দিয়েছিলুম, সব দেখি কেবিনে এসে হাজির আছে। আমি লাগেজ মেলাতে বসলুম। ১৩ই জুন তারিখে বোম্বাইয়ের ভিক্টোরিয়া জাহাজে বসে এ-রকম সব লাগেজ মিলিয়েছিলুম। আজ ৭ই অক্টোবর তারিখে আবার সেই কাজে বসেছি। সেদিনের মনের অবস্থার সঙ্গে আজকের মনের অবস্থার কত পার্থক্য তা বুঝলুম। মামুষের নিজের জায়গা এমনই জিনিষ । o আমি সারাদিন ধ’রে জাহাজের ডেকের উপর দাড়িয়ে রকমারি যাত্রী ও মালপত্র-উঠা দেখতে লাগলুম। সকলেই এক-এক ক'রে গণ্ডোলা চড়ে আসতে লাগলেন । মিসেস জে এন রায় তার ছেলে ও বোনপোকে সঙ্গে নিয়ে এলেন। অধনীবাবুরা এলেন। স্ববিখ্যাত ডোঙ্গরের বালামৃত ঔষধের অংশীদার মি: ও মিসেস ডোংরে তাদের ছেলেপিলে নিয়ে এলেন। যুক্ত-প্রদেশের শাজাহানপুরের স্বৰ্গীয় জালাপ্রসাদের স্ত্রী ও পুত্রের সঙ্গেও আলাপ হ’ল। এর টিয়েষ্ট থেকে জাহাজে উঠেছেন। সারাদিন পরে রাত্রি আটটার সময় প্রসিদ্ধ নৃত্যকলাবিং ক্রযুক্ত উদয়শঙ্করের জননী ও কলকাতার ইকনমিক জুয়েলারী ওয়ার্কসের স্বত্বাধিকারী ঐযুক্ত অক্ষয়কুমার নন্দী মহাশয়ের কন্যা কুমারী অমলা নন্দীও এসে উঠলেন। গুনলুম জাহাজ সেই গভীর রাত্রি না হলে ছাড়বে না ; আমরা বেলা তিনটার সময় জাহাজ থেকে আবার নেমে “গিয়ে জলের ধার দিয়ে ডাঙ্গায় ভাঙ্গায় চলে এক গীর্জার সামনে এলুম। গীর্জার দরজার সামনে খুব ভিড়। দেখলুম