たち宮 কাগজ, নরেশের খাতা, এলম্যানাক-অন্ধকষার দাপটে সত্যই একত্রে মিলে একটি মোট দাড়িয়ে গিয়েছিল। অন্তের অন্তরালে শশীর চেষ্টার বিরাম ছিল না, কিন্তু মাথায় পুঙ্খানুপুন্থের সদিচ্ছা ঢোকায়, সামলাতে পারছিল না। অতিষ্ঠ হয়ে উঠছিল। শশী “আতা হায়’ বলে বাড়ির মধ্যে যেতে যেতে,— “হারামজাদা আমাকে আবার রোগে না ফেলে ছাড়বে না---” কথাগুলি অমৃচেচ উচ্চারিত হ'লেও বড়বউ শুনতে পেয়ে—“কি গা ঠাকুরপো—কার রোগের কথা ব’লছ ? রোগের কথা শুনলে যে প্রাণ চম্কে ওঠে...” "চমকে ত ওঠে, কিন্তু সেই ব্যবস্থাই ত করা হয়েছে দেখছি । হিসেব ত নয়,—কটিকারির ঝাড় !" “সে বুঝি এখনও”—বলেই বড়বউ থেমে গেলেন। “করে দিন না বড়বাপু !” “ষ্ঠ্য-উীর মুরোদ ভারী ! পারলে তো!" বড়বউ নিজের ভুলটা সামলালেন —“না না, অত কষ্ট করে আবার অমুথে পড়তে হবে নাকি ? ওকে গোটাপাচেক টাকা ফেলে দাও ভাই—পাপ মিটুক। মায়ের রূপায় কত ক’রে তোমাকে---” শুনে শশী খুশী হ’ল বটে, কিন্তু বললে, “তোমরা ওই বড়মামুষিটা ছাড় দিকি ! ওতে যে এ গরিবকে ডোবানো হচ্ছে। ও বেটার যা স্থায্য পাওনা, তার এক পয়সা বেশী দেওয়া হ’তে পারে না। ওদের মাইনে দপ্তরমত সৰ্ব্বত্রই এফ-ও-আর-ই Fore, চার টাকা, তা নেপালেই কি আর ভূপালেই কি,—তা জান ? যাক, ও সব আর চলবে না...” “সেই ত ভাল, তা হলে যে বাচি । ওই নে কি বললে--"এফ-ও-আর-ষ্ট’ (Fole , তাই কর তো ভাই । ইস্—ডিমগুলো চড়িয়ে এসেছি যে" বলতে বলতে তিনি দ্রুত চ'লে গেলেন । শশী হাতমুখ ধুয়ে—“কই হালুয়া কই ?” “এই যে ভাই” বলেই বড়বউ দুটো ডিমসিদ্ধ আর এক প্লেট হালুয়া হাজির করে দিলেন।–“চ-টা খেয়েই যাও ভাই ।” “দাও, ব্রেন্টা বাগিয়ে নেওয়াই ভাল। আজ ফিনিশিং টচ দিতে হবে। ফ্রাকৃপকুলে রিডকসন করলেই খতম।” به حسا-لام ব’লে দশদণর দুরভিসন্ধি ՊԵՏ দাদার কৰ্ত্তব্য, শশী কোনো দিনই ক্ষুঞ্জ করছিল না। 粥 獅 皋 ভাণ্টা সেই হিসাবের তাড় বারান্দায়ু সাজিয়ে হতাশ হ’য়ে বসে ছিল। শশী উপস্থিত হয়ে বললে, “কিরে ভাণ্ট, কি দেখত হায় । এই ইন্সকোই বলে হিসেব। এ যা কর দেত হায়— মোক্ষোম । যা তামাক সাজকে আনি দিকি ৷” ভাণ্টা তামাক সাজতে গেল, শশী চুল ফিরুতে ঘরে ঢুকল । একটা গরু চরে বেড়াচ্ছিল । ফাক পেয়ে হিসেবের তাড়াটা টেনে নিয়ে চৰ্ব্বণে মন দিলে ! ভাণ্টার চীংকার শুনে, সিস্কের চাদরখানায় মুখ মুছতে মুছতে শশী বাইরে এসে, গরুটার অভদ্রতা দেখে, চাদরপানী চট্ ক’রে তার গলায় দু-পাক জড়িয়ে—” আর যাবে কোথায় ? ভাণ্টা, থানামে দিয়ে আয় ত । আমি ছড়িবার পাত্তোর নই।” ভাণ্টাকে দেখে আর তার চীংকারে গরুটা চার পা তুলে ছুটল। শশী গেল পড়ে, চুরি রইল গন্ধর গলায়। ভণ্ট ছুটল তাকে ধরতে । “সগের ফরমাসি জিনিষ—সাত টাকার চাদরখানা ছিড়ে-খুড়ে না আনে। ইস্, হিসাবের খানিক খানিক যে খাবলে নিয়েছে দেখছি। মাথা খেলে,-কি অভদ্ৰাই পড়েছে ! হবে না-বেম্পতি বারের ব্যাপার!—বারোট বাজল ভাণ্টা যে ফেরে না –যাক্ বেটাকে যতক্ষণ না দেখি ততক্ষণই ভাল । কিন্তু চাদরখানা যে••••• ভাণ্টা হিসাব সম্বন্ধে হতাশ হয়ে পড়েছিল। তাই অনেক কষ্টে চাদরখানি গরুর গল থেকে উদ্ধার করে— ঘরে রেখে, বৈকলে মুখ শুকিয়ে, মাথায় পটি বেঁধে, খোড়াতে গোড়াতে এসে হাজির । “কিরে—কি হুয়া ?” সে অতি কষ্টে বুঝিয়ে দিলে—গরুর পিছে দেড় কোশ দৌড়েছে, তিন বার গিরেছে, মাথায় চোটু খেয়েছে, তবুও কুছু করতে পারে নি। গরু রেলপার গায়েব হোয়ে গিয়া। সে নড়তে পারছে না, সৰ্ব্বশরীরমে বড় দরদ –“কুছু দাওয়াই দেন হুজুর।”
পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৪৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।