চৈত্র চিঠিপত্রে সাম্প্রদায়িক ভাষা هنoصعوا করিতে হইবে। কত কত “পৌরাণিক উপাখ্যান" কত “এছলাম-বিরোধী" হিন্দুভাব ও বিশ্বাস ঐ সবগুলির সঙ্গে না জড়িত আছে। এই ধরুন, ‘মাসিক মোহাম্মদী" কাৰ্ত্তিক ১৩৪২ । কাৰ্ত্তিক একটি হিন্দু দেবতার নাম। অনেক “পৌরাণিক উপাখ্যান” ঐ নামের সঙ্গে দুর্ভাগ্যবশতঃ জড়িত। “কাৰ্ত্তিক” থাকিলে, “অগ্রহায়ণ”, “পৌষ,” ”মাঘ” “ফাঙ্কনইত্যাদি কতই না আসিয়া পড়ে । এবং দেবদেবী, নক্ষত্র, চন্দ্র ( আর একটি দেবতা । ) এ সব জঞ্জাল চাপিয়া বসে । শুধু তাহাই নহে। “কলিকাতা’ হইতে অনেক পত্র, পত্রিকা, পুস্তক প্রকাশিত। ঐ নামের সঙ্গে অনেকের মতে, সেই কালী দেবতার সম্পর্ক আছে । ইংরেজেরা নিশ্চয়ই পতিত খ্ৰীষ্টান ; নতুবা ঐ পৌত্তলিক নাম বদলাইয়া দিত। তবে আগামী বঙ্গীয় আইন সভায় ( নূতন সংস্করণের ) একটা চেষ্ট হইতে পারে। হিমালয়, বিন্ধ্য প্রভৃতি পৰ্ব্বত, গৌরীশঙ্কর প্রভৃতি গিরিশৃঙ্গ, ( “দুর্জয়লিঙ্গ” আরও ভয়ানক ! ), গঙ্গা, যমুনা, প্রভৃতি নদী, যশোহর, ময়মনসিংহ, মেদিনীপুর ইত্যাদি বাংলার জেলা, পাটনা, বোম্বাই (মুম্বই ), উদয়পুর, মেবার, রামেশ্বর সেতুবন্ধ ইত্যাদি ইত্যাদি সকলেই লেখক সাহেবের কৃপা ভিক্ষা করিতেছে । “হিন্দুস্থান,” “ভারতবর্ষ" । তোমরাও সাবধান। কাশী, গয়া, বুদ্ধগয়া, পরেশনাথ, মথুরা, বৃন্দাবন, জালামুখী, জালন্ধর, তোমরাও এখন পরলোকগমন কর । কিন্তু লেখক সাহেব ইংরেজীর বেলা কি করিবেন ? o, “Select Readings from English Prose” ( প্রবেশিকার পাঠ্য )। টণ্ড সাহেবের “Study” প্রবন্ধে প্লেটো, সক্রেটিসের প্রশংসাসূচক উক্তি আছে। ইহারা “মুছলমান" ছিলেন না। স্বতরাং এখানেও "এছলামবিরোধী” “মুছলমান” বিদ্বেষ" আছে। “Herculean effort" এই কথায় "পৌরাণিক উপাখ্যানে”র অস্তিত্ব বর্তমান, কিন্তু অতি ভয়ঙ্কর সেই “রিপ, ভ্যান উইঙ্কলের” গল্প। একে ভূতের গল্প, তাহাতে আরভিং লাহেব গল্পের শিরোভাগে কৰি কাটরাইটের ঘোর পৌত্তলিকতাপূর্ণ (নিশ্চয়ই “এছলাম বিদ্বেষ" পূর্ণ) কয়েক পংক্তি তুলিয়া দিয়া cost 3–"By Woden, God of Saxons, From Whence comes Wensday” ŵwrif& I “পৌরাণিক যুগের "পৌত্তলিক” কুসংস্কারাচ্ছন্ন স্তাঙ্কনদিগের দেবতা “ওডেনের" নাম যে পুস্তকে আছে, তাহার কি দশা হওয়া Èfss f og “Select Rendings from English Prose" নহে, কার্টরাইটের ও আরভিং-এর পুস্তক এবং উহার ছোয়া যাহাতে যাহাতে লাগিয়াছে, সব দগ্ধ করা উচিত । বোধ হয়, ইংরেজের কাছে এ আবদার করিলে আজকালকার দিনে মঞ্জুর হইতেও পারে ! ইংরেজী সাহিত্যে ঐরুপ “ফুসংস্কার” আরও যথেষ্ট আছে । কোন পুস্তকে, যদি ম্যামন, কি জুপিটার, কি মিনার্ভা, কি ভিনাসের কথা থাকে, তবে উপায় ? মরিস সাহেবের “Atalanta's Race” নামক কবিতা-পুস্তক বহু মুসলমান ছাত্র পড়িয়া প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়াছেন। উহাতে সেকালের গ্রীকদের ডায়ানা ও ভিনাস দেবীর সম্বন্ধে অনেক কিছু আছে । এখানেও বিচার করা উচিত । গদ্যে ও পদ্যে এরূপ শত শত দৃষ্টাস্ত পাওয়া যাইবে । কিন্তু আরও বিপদ যে আছে । ইংরেজী দিনের নামের প্রত্যেকটির সঙ্গে কোন-না-কোন "পৌত্তলিক” দেবতার সম্বন্ধ আছে। যথা –মন্ডে (Monday )- মুনের অর্থাৎ চন্দ্রের দিন ; সানডে (Sunday) – সান অর্থাৎ স্বর্ধ্যের দিন ; থাস ডে (Thursday)= খর দেবতার দিন ইত্যাদি। ইংরেজী মাসের নামের মধ্যেও "পৌরাণিক” দেবদেবীর গদ্ধ আছে। ইংলণ্ডের বহু স্থানের নামের সঙ্গে ঐক্ষপ অনেক খারাপ ব্যাপার জড়িত আছে । ইংরেজেরা সেইগুলি ভাষায় ব্যবহার করিলেও, ধাৰ্ম্মিকেরা ছাড়িবে কেন ? কিন্তু ইংরেজের ভাষা ও সাহিত্য বদলান অথবা বর্জন, “হিন্দুর* ভাষা ও সাহিত্যকে এরূপ করার চেয়ে কঠিন। শুনিয়াছি, ফার্স ভাষায় “শাহনামা” নামক গ্রন্থ আছে। উহাতে অ-মুসলমান যুগের পারসীক মহাপুরুষগণের অনেক বর্ণনা আছে। পারস্তের মুসলমানের সে-লম্বন্ধে কিছু করিয়াছেন কি না, জানি না । না-করিয়া থাকিলে, অষ্ঠেরা লাগিয়া যাউন ।
পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৭৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।