পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՊՆ ভুবন আসিয়া বাড়ি ঢুকিল । কাখে এক প্রকাও বড় কলসী ! গ্রাম হইতে মাইলথানেক দূরের ঝর্ণার জল আনিতে গিয়াছিল সে । বাড়ি ঢুকিয়াই সে স্বামীকে প্রশ্ন করিল -কে বটিস রে তু-কোথা বাড়ি ? বাপের ফিরিবার কথা ছিল সন্ধ্যায় ; কিন্তু ঘটনাচক্রে তাহারা দ্বিপ্রহরের পূৰ্ব্বেই আসিয়া পড়িয়াছে। ভূবনের স্বামী অবাক হইয়া বিপুলকায়৷ ভূবনের কুংসিত মুখের দিকে চাহিয়া ছিল। ভুবন আবার প্রশ্ন করিল--রা কাড়িস না কেনে রে ছোড়া,—কোথা বাড়ি তোর ? তেলের বোতল হাতে মা ঘরে ঢুকিয়া বলিল –মাথায় কাপড় দে হারামজাদী—জামাই রয়েছে ! দারুণ লজ্জায় সহাস্তে পুরু জিবটা এতখানি বাহির করিয়া ভুবন দ্বম্ ছম্ শব্দে দ্রুতপদে ঘরে ঢুকিয়া পড়িল । মাও তাহার পিছন পিছন ঘরে ঢুকিয়া বলিল—ব’স, চুল বেঁধে দি তোর আগে। ও-বাবা কানাই, হাতমুখ ধোও বাবাশ্বশুর তোমার আইচে বলে । অল্প কিছুক্ষণ পর ভূবনের বাপ মাছ-হাতে বাড়ি ঢুকিয়া বলিল—কই কোথা গেলি গো ? কানাই কোথা গেল ? শাশুড়ী বাহিরে আসিয়া বলিল--এই হেথাই ত-। --কানাই—অ বাবা ! কেহ কোথাও ছিল না—জলের ঘটিটা পৰ্য্যস্ত তেমনি পূর্ণ অবস্থায় সেইখানে পড়িয়া আছে। ধুলী পায়েই কানাই পলাইয়াছে। সে আরআসে নাই, আবার সে বিবাহ করিয়াছে। তাহার পর কত সম্বন্ধ যে ভুবনের বাপ করিল তাহার হিসাব নাই। কিন্তু ভূবনকে দেখিয়া সকলেই একরূপ পলাইয়া গেল । ভুবনকে দেখিলেই পাড়ার ছেলেরা ফিক্‌ করিয়া হাসিত। ভুবন সে ব্যঙ্গ হাসির জালায় জলিয়া উঠিত। একদিন সে ক্রোধে আপনার কপালে নোড়ার ঘা মারিয়া রক্তে মুখ ভাসাইয়া ফেলিল । মামার অস্বখের সংবাদ পাইয়া মতিলাল সেদিন এই গ্রামে আসিয়াছিল। তখন তাহার তিনটি বিবাহ হইয়া গেছে—কিন্তু গৃহ গৃহিণীশূন্ত ! গ্রামে ঢুকিবার পথেই প্রবাসী SN98కాల ভুবনের সহিত তাহার দেখা হইয়া গেল। তাহার রূপের কারুকার্য্য দেখিয়া মতিলাল না হাসিয়া পারিল না । ভুবন ঘৃণার সহিত বলিল—ওই ছিরিতে আর দাত বার করে হাসিস্ না বাপু ! অ’ হ হ ! মতিলাল হি হি করিয়া হাসিয়া উঠিল । তাহার কয়েক দিন পরই ভুবনের সহিত মতিলালের বিবাহ হইয় গেল। মতিলাল ভূবনকে লইয়৷ ধুমধামের সহিত আপনার ভিটায়ু গিয়া সংসার পাতাইয়া বসিল । প্রথম দিনই সন্ধ্যায় সে ভূবনকে ডাকিয়া বলিল—শোন, একটা কথা বলি। সে আসিয়া বলিল—কি ? —ব’স, একটা জিনিষ এনেছি দেখ। তোকে কেমন সোন্দর ক'রে দি দেখ ! মতিলাল থানিকট খড়ির মত সাদা গুড়া জলে গুলিতে বসিল । ভুবন আশ্চৰ্য্য হইয়া প্রশ্ন করিল–উ-কি ? মতিলাল অহঙ্কারভরে বলিল—যাত্রায় সব মুখে মাথে দেখিস নাই ? কাল-কুচ্ছিতও এতে সোন্দর হয় ! বলিয়া সে ভূবনকে রং মাখাইতে বসিল। তার পর আয়না মুখের সম্মুখে ধরিয়া বলিল—দেখ, ! ভুবন তাহার হাত হইতে আয়নাথান টানিয়া লইয়া নিবিষ্ট চিত্তে নিজের প্রতিবিম্ব দেখিতে বসিল । তার পর সহস আয়নাথান রাখিয়া দিয়া বলিল—আয় তোকে মাথিয়ে দি আমি । গম্ভীর ভাবে মতিলাল বলিল-–উ-হু—তু পারবি না। ই সব ভাগমাপ শিখতে হয় । দে আমি মাখি ।—বলিয়া সে নিজেই রং মাখিতে বসিল । ভুবন কিন্তু অভিমান করিল। সেটুকু আবিষ্কার করিয়া মতিলাল বলিল—তোকে শিখিয়ে দোব -তু একদিন মাথিয়ে দিস্! ভুবন বলিল—তু কোথা শিখেছি, শুনি ? মতিলাল হাসিয়া বলিল—যাত্রার দলে শিখেছি। তা ছাড়া আমি কত রকম সাজতে পারি বলে ! দেখবি ? সে তাহার একটা ঝাপি খুলিয়া বাহির করিল—বস্তার তৈয়ারী ভালুকের খোলস,—পেত্নী সাজিবার ছেড়া কাথা, আরও কত কি ! - তাহার পর ক্রমশঃ ভূবন আবিষ্কার করিল—মতিলালের