পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

टेन्सasोर्थ खीचन्मांझन्र SS বালকদের দলে তাহার স্থান নাই, বয়স্করাও তাহাকে বয়সে বড় হইয়াছে বলিয়া মানে না । তাহার ইচ্ছা করে, সে খুব শীঘ্ৰ বয়স্কদের সমান হইয়া ওঠে। এই গৃঢ় ইচ্ছা নানা রূপে প্রকাশিত হয় । দাড়ি না থাকিলেও সে দাড়ি কামাইতে আরম্ভ করে, লুকাইয়া সিগারেট থাইতে শেখে, রূপকথা ছেলেদের গল্পের বই ছাড়িয়া বয়স্কদের পাঠ্য উপন্যাস লুকাইয়া পড়ে । তাহার মনে নানা বাসনা জাগে । রূপরসগন্ধভর পৃথিবী সে ভোগ করিতে চায়। অনুভূতির শক্তি স্বল্প তীব্র হইয়া ওঠে । ব্যক্তিত্ব, স্বাতন্ত্র্য বোধ জাগে । অথচ স্বাধীনভাবে চলিবার কাজ করিবার পথ খুজিয়া পায় না । অত্যন্ত বেদনাপ্রবণ, আত্মাভিমানী হইম্বা ওঠে । সামান্ত অবিচারে সে অবমানিত, তুচ্ছ কারণে সে বিমর্ষ । বয়স্কদের শাসনে অবহেলায় সে সহজে বিদ্রোহ করে না বটে, কিন্তু অস্তরে রোষ সঞ্চিত হয় । বয়স্কদের ব্যবহার, জীবনপ্রণালীর বিচার করে । মনে মনে সঙ্কল্প করে, এই অত্যাচার, অপমান অধিক দিন সহ করিবে না । এ-ক্রোধও বৈশাখের ঝড়ের মত ক্ষণস্থায়ী । একটু প্রেম, স্নেহ পাইলেই মনে করে তাহার জীবনের দুঃখ দূর হইয়া গেল । অরুণের জীবনে প্রথম যৌবনারম্ভ হইল বসন্ত-প্ৰভাতের পুষ্পগন্ধোচ্ছ্বাস বর্ণোৎসবে নয়, শিশিরসিক্ত শরৎ-রাত্রির স্বপ্নময় কৰুণতায় । অরুণ অনুভব করিল, কোন নিগঢ় প্রাণশক্তি তাহার দেহে অপরূপ ভাবে বিকশিত হইয়া উঠিতে চায়, কিন্তু কোথায় যেন বাধা পাইতেছে, তাহার অপরিণত দেহ এই অপূৰ্ব্ব প্রাণের উপযুক্ত বাহক নয় । সে অনুভব করিল, কোন চিৎশক্তি তাহার চৈতন্তে আপন মহিমা প্রকাশিত করিতে চায়, কিন্তু ক্ষুদ্র জ্ঞান ক্ষুদ্র বুদ্ধি দিয়া সে তাহার কতটুকু প্রকাশ করিতে সমর্থ। সে বুঝি ব্যর্থ হইল। এই উপলব্ধির ক্ষণগুলি দুঃখময় । কোন প্রভাতে স্কুলের বই পড়িতে পড়িতে তাহার মনে হয়, তুচ্ছ এ পাঠ, সে কোন বৃহৎ কৰ্ম্মের জন্ত এ-পৃথিবীতে জন্মাইয়াছে, তাহার সাধনা, তাহার আয়োজন কই ? পাঠে ধৈর্য্য থাকে না । প্রভাত উদাস হইয়া ওঠে । ক্লাসে পাঠ শুনিতে শুনিতে সে আনুমন হইয়া যায়। সে যে বী। এ স্থলে সে কয়েদী, তাহার জীবনে কোন মহান উদেখা সফল হইবে, তাহার জন্ত সে কি সাধনা করিতেছে ? সন্ধ্যায় সে বাগানে এক ঘুরিয়া বেড়ায় । কত অমূলক অtশা অজানা স্বপ্ন জাগে । নিজ মনের এই সব অভিনব চিন্তায় নিজেই অবাক হইয়া যায়। এই সব অসম্ভব কল্পনা কোথায় কুপ্ত ছিল, আজি সুন্দরী বারুণীকস্তাদের মত অন্তরসমুদ্রের অতলতা হইতে উঠিয় তাহাকে ভুলাইতে আসিল । কেবল সৎচিন্তা নয়, কুৎসিত সরীস্বপের মত কত অদ্ভুত কামনা অন্ধকার অস্তরগুহা হইতে বাহির হইয়া আসে, নিজেকে অশুচি মনে হয় । - সে ভাবে জীবন মহা দায়িত্বময় ; মানবজন্ম সার্থক করিতে হইবে । স্কুলে যে-সকল উপদেশ শোনে, পুস্তকে যে-সকল নীতিকথা পড়ে, সেগুলি মহানৃ সত্য বলিয়া বিশ্বাস করে । বয়স্কদের জীবনযাত্রাহীন বলিয়া মনে হয় । পৃথিবীতে কত দুঃখ, কত পাপ । সে-সব দূর করিতে তাহারা কি করিতেছে ? মাঝে মাঝে অরুণের মনে সন্দেহ জাগে । হয়ত সে সব ভূল বুঝিতেছে। “শাস্তিনিকেতন” “কৰ্ম্ম-যোগ” নানা বই অধিক পড়িয়া হয়ত তাহার মাথা খারাপ হুইয়া গিয়াছে । এই সকল নুতন চিস্তা সে নিজমনে গোপন রাখে, কোন বন্ধুর সহিত আলোচনা করিতে পারে না । রাত্রে তাছার প্রায়ই ঘুম ভাঙিয়া যায়। গ্রীষ্মের অগাধ রাত্রি ; চারিদিকে গভীর নিস্তব্ধতা ; গাছের পাতা নড়ে নী ; খোলা জানালা দিয়া দেখা যায় পাণ্ডুর আকাশে বৃহৎ শীতল চঞ্জ, নারিকেল তালগাছের পাতাগুলি নীলাকাশে কালো ছোপের মত ; জনহীন অন্ধকার গলিতে গ্যাসের আলো জলে, কদমগাছের শাখায় রহস্তময় অন্ধকায় । অরুণের মনে হয়, কে যেন ওই গাছের অন্ধকারে দ্বাড়াইয়া আছে, তাঁহাকে ডাকিতেছে, কোন গোপন দুর্গম দুঃখময় পথে তাহাকে লইয়া যাইতে চায় । অরুণের ভয় হয় । চারিদিক বড় নির্জন । সে বড় একা। গা ছমূছমূ করে । চুপ করিয়া বিছানাতে শুইয়া থাকে। এক নিশাচর পাখী উড়িয়া शेख्न । ধীরে শীতল বাতাস বয়। কদম্ববৃক্ষ মৰ্ম্মরিত হইয়