পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

مواوة اج SN28。 প্রকাশ করাতে ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয় আমাকে মহর্ষির নিকট লইয়া গিয়া আমার পরিচয় দিলেন । আমি তাহাকে প্ৰণামপুৰ্ব্বক পদধূলি লইয়া উপবেশন করিলাম, কিন্তু মহfষর সহিত কোন কথাবার্তা হইল না, কারণ সে-সময় র্তাহার দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি ছিল না বলিলেই হয় । ভট্টাচাৰ্য্য-মহাশয় উচ্চৈঃস্বরে দুই-একটি কপায় তাহার প্রশ্নের উত্তর দিবীর পর আমাকে লইয়া চলিয়া আসিলেন । সুতরাং মহর্ষিকে মাত্র “চোথের দেখা” দেখিয়াছি, তাহার সহিত কোন কথাবাৰ্ত্তার হযোগ আমি পাই নাই । এই ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা'তে প্রবন্ধ লিখিবার সময়েই কবিবর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শ্ৰীযুক্ত ক্ষিতীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ ঠাকুরপরিবারের কয়েক জনের সহিত আমার প্রথম পরিচয় হয় । ইহার কিছু পরে, যখন অffম ‘ভারতী’ পত্রিকায় ছোটগল্প ও প্রবন্ধাদি লিখিতfম সেই সময় একদিন আমি চন্দননগর পুস্তকাগারের জন্ত পুস্তক সংগ্ৰহ করিবার উদ্দেশ্যে বালীগঞ্জে ক্রমতী সরলা দেবীর সহিত সাক্ষাৎ করিতে গিয়াছিলাম । সরলা দেবীর সহিত তাহার পূর্কেও আমার আলাপ পরিচয় ছিল । সেদিন আমি সরলা দেবীর জননী স্বগীয়া স্বর্ণকুমারী দেবীর পুস্তক সংগ্রহের জন্ত গিয়াছিলাম । আমি তখন একটা সওদাগরী অাপিসে কেরাণীগিরি করিতাম । আপিস হইতে মধ্যাহাকালে বাহির হইয়া বtলীগঞ্জে গিয়াছিলাম। আমি শ্ৰীমতী সরলা দেবীকে আমার আগমনের কারণ বলিলে তিনি উঠিয়া কক্ষাত্তরে গমন করিলেন এবং ক্ষণকাল পরে অtসিয়া বলিলেন, “আপনি বহন, মা আসছেন।” সে-সময় ‘ভারতী’তে সরলা দেবীর অনুদিত ওমর খৈয়ামের কবিতা প্রকাশিত হুইতেছিল । সেই সকল কবিতা সম্বন্ধে র্তাহার সহিত আমার কথাবাৰ্ত্ত হইতেছিল, এমন সময় স্বর্ণকুমারী দেবী সেই কক্ষ মধ্যে প্রবেশ করিলেন । আমি তাহাকে দেখিবামাত্র উঠিয়া গিয়া প্রণাম করিলে তিনি অতি মধুর কণ্ঠে হাসিমুখে বলিলেন, “ব’ল বাবা ব’স” এই বলিষ্ঠা তিনি উপবেশন করিলেন । আমিও উপবেশন করিলে তিনি আমার নাম, ধাম, বিষয় কাৰ্য্য সম্বন্ধে অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিলেন । কথায় কথায় যখন তিনি জানিতে পরিলেন যে, vদ্বারকানাথ ঠাকুরের ভগিনীপতি প্রভোলানাথ চট্টোপাধ্যায় আমার প্রপিতামহুর সহোদর, ভোলানাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রপৌত্র এটর্নী অমরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় আমার জ্ঞাতিভ্রাতা, তখন তিনি সস্নেহে বলিলেন, “ওঃ তুমি ত আমাদের ঘরের ছেলে ।” এই বলিয়া তিনি আমীদের সাংসারিক অনেক বিষয় জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন । আমি চন্দননগর হইতে প্রত্যহ প্রাতঃকালে কখন কলিকাতায় আসি, সকালে কয়টার সময় আহার করিতে হয়, আপিসে কখন জলযোগ করি, বাটতে প্রত্যাবর্তন করিবার সময় সন্ধা হয় কিনা, আমার বাটতে কে কে আছেন প্রেভৃতি অনেক কথাই জানিয়া লইলেন । আমরা যে-সময় কথাবাষ্টা কহিতেছিলাম, সেই সময় একবার সরলা দেবী দুই তিন মিনিটের জন্ত কক্ষাস্তরে গমন করিয়া পুনরায় আসিয়া আমাদের বাক্যালাপে যোগদান করিলেন । বেলা আড়াইটার সময় এক জন ভৃত্য কিছু ফল ও মিষ্টান্ন আনিয়া আমার সম্মুখস্থ টেবিলে রাখিয়া দিলে স্বর্ণকুমারী দেবী বলিলেন, “বাবা, মুথে হাতে জল দিয়ে একটু খাবার খাও।” আমি প্রথমে একটু আপত্তি করিলে তিনি বলিলেন, “না বাবা, তোমার আপত্তি শুনিব না। রোজ আড়াইটরি সময় তোমার জল খাওয়া অভ্যাস, না খাইলে পিত্ত পড়িয়া অসুখ হইবে।” আমি অগত্যা সেই সকল ফল ও মিষ্টাক্সের সদ্ব্যবহারে প্রবৃত্ত হইলাম । আমি বুঝিতে পারিলাম যে, আমি আপিসে কথন জলযোগ করি এই প্রশ্নের উত্তরে আমি বলিয়াছিলাম যে, আড়াইটার সময়, তখন সরলা দেবীকে আমার অঙ্গীতসারে ইঙ্গিত করিয়া দিলেন এবং সরলা দেবীও আমাদের নিকট হইতে উঠিয়া গিয়া ভূত্যকে ঠিক আড়াইটার সময় জলখাবার অনিতে অদেশ করিয়া আসিয়াছিলেন । লাইব্রেরীর জন্ত পুস্তক প্রার্থনা করিলে স্বর্ণকুমারী দেবী বলিলেন, “সব বই ত আমার কাছে নাই, যে কয়খানা আছে, দিব।” আমার উঠিবার কিছু পূৰ্ব্বে তিনি তাহার রচিত ছয়-সাত খানি পুস্তক আমাকে আনিয়া দিলেন। আমি তাহাকে প্রণাম করিয়া বিদায় গ্রহণ করিলাম। এই ঘটনার কয়েক মাস পরে আমি