পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮২ দেখিয়া চমৎকৃত হইতে হয় এবং সিন্ধুদেশের মহেন-জোদাড়োর চিত্র মানসপটে উদ্ভাসিত হয় । এই প্রদেশটি সম্রাট অশোকের কলিঙ্গ-বিজয়ের পূৰ্ব্ব হইতেই প্রাচীন গৌরবময় জনপদৰূপে পরিচিত ছিল । এই প্রদেশটির দক্ষিণ, পুৰ্ব্ব ও পশ্চিম দিকে পঞ্চ খরস্রোত নদীমাতৃকা-যথা, মহানদী, দয়া, প্রাচী ও চন্দ্রভাগা— দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিল । উত্তর দিকে বিন্ধ্যাচলের শাখা পৰ্ব্বতমালা দ্বারা সুরক্ষিত ছিল। এক দিন এই প্রদেশটি শৌর্য্যবীৰ্য্য, ব্যবসাবাণিজ্য ও শিক্ষাদীক্ষার শীর্ষস্থান অধিকার করিয়াছিল । এখনও প্রাচী ও চন্দ্রভাগ নদীর তীরে ংখ্য পুরাতন ভগ্নাবশেষ অতীত কালের গৌরবগাথার সাক্ষীস্বরূপ দাড়াইয়া রহিয়াছে । সম্রাট অশোকের কলিঙ্গ-বিজয়ের পর এই মনোরম মহানগরীর যশোগাথা দেশ-বিদেশে বিশেষ খ্যাতি লাভ করিয়াছিল—চীন-পরিব্রাজকদিগের বর্ণনায় তাহ দেখিতে পাওয়া যায় । সম্রাট অশোকের এই নগরটি এত প্রিয় ছিল যে, তোসলী নগরে এক জন রাজকুমার তাহার প্রেতিনিধি প্তপ্রবামী ডট SS BS স্বরূপ বসবাস করিতেন—তাহ ধৌলীর প্রস্তরলিপির অনুশাসন-পাঠে অবগত হওয়া যায় । দেবানং প্রিয়স বচনেন তোসলিয়ামূ কুমারে মহামত চ বতবিয় : — ধৌলীর দ্বিতীর অসুশাসন-লিপি । মহাকালের উত্থান-পতনে চক্রের সংঘর্ষণ এই সমৃদ্ধি শালী নগরীর অস্তিত্ব আজি অজ্ঞাত ও অবিদিত । ইতিহাসের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রেণুকণার উপাদান-সংগ্রহে তাঁহাই নিৰ্দ্ধারণ করিবার জন্ত আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র । আশা করি ভবিষ্যতে সে{গ্যতর ব্যক্তি এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করিয়া কুন্দরভাবে গবেষণা করিবার সঙ্গে সঙ্গে এবং বিদ্বন্মণ্ডলীর সমবেত চেষ্টায় এই শহরটির স্ববন্দোবস্ত ভাবে খননকাৰ্য্য পরিচালনা করিলে উড়িষ্যার ইতিহাসের অতীত অন্ধকারযবনিক অপসারিত হইবে এবং সঙ্গে সঙ্গে ভারতের ইতিহাসের একটি স্মরণীয় যুগের উজ্জ্বল অধ্যায়ের দ্বার উদঘাটিত হইয়া জগতের প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাসে যুগান্তর অনিয়ন করিবে । মণিপুরের কোম ও চিরু জাতি শ্রীপরেশচন্দ্র দাশগুপ্ত ও শ্রীমীনেন্দ্রনাথ বসু ভারতবর্ষের উত্তর-পূৰ্ব্ব সীমান্ত প্রদেশে মণিপুর-রাজ্যে অনেক অসভ্য জাতির বাস। সে-সব জাতির মধ্যে আধুনিক পাশ্চাত্য সভ্যতা এখনও প্রবেশ করিতে পfরে নাই । শুধু পাশ্চাত্য সভ্যতাই নহে, বস্তুতঃ পক্ষে কোন প্রকার সভ্যতাই ইহাদের ভিতর লক্ষিত হয় না । এই সকল জাতি মণিপুরের “লোগ তাগ” হুদের চারি পাশে বনে জঙ্গলে ছোট ছোট দল বাধিয়া অতি সাধারণ ভাবে জীবনযাপন করে । এই সকল জাতির জীবনযাপন-প্ৰণালী ও তাহাদের সাংসারিক ও সামাজিক রীতিনীতি লক্ষ্য করিলে আমরা বুঝিতে পারি অতি প্রাচীন কালে মানব-সভ্যতার আদিতে মানুষের সামাজিক অবস্থা কিরূপ ছিল । মণিপুরে নাগা, কুকি প্রভৃতি অনেক আদিম জাতি বসবাস করে । এই সকল জাতির মধ্যে “কোম” ” ও “চিরু” এই দুইটি প্রধান। মণিপুর-রাজ্যে বিষ্ণুপুর এলাকায় অনেক কোম ও চিরু জাতির বাস। কোম ও চিরু দুইটি ভিন্ন জাতি, উভয়ের শারীরিক গঠন এবং সামাজিক রীতিনীতি বিভিন্ন । কোম জাতি।—আকৃতি ও গঠনের দিক দিয়া দেখিতে গেলে কোম জাতি ভারতবর্ষের অন্তান্ত জাতি অপেক্ষ বিভিন্ন । অবশ্য বর্ণসঙ্কর হওয়ার দরুণ