পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২১৮ ছিলেন । তিনি উপযুপিরি চার-পাচ বার স্থানীয় মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যানূ নিৰ্ব্বাচিত হইয়াছিলেন এবং শহরের উন্নতিকল্পে আপন শক্তি ও অর্থ অকুষ্ঠিত-চিত্তে দান করিয়াছিলেন । তিনি বিস্তর অর্থব্যয় করিয়া বরফের একটি বিশাল কারখানা স্থাপন করিয়াছিলেন । সেই কারখানায় এত সুঞ্জ প্রস্তুত হইতে পারিত, পাহা সমস্ত নিয়-ব্রহ্মদেশের প্রয়োজনপন্থটাইয়াও উদ্ধৃত্ত হইত। চাহিদার তুলনায় উৎপত্তি বেণী হইলে যে ফল হয়, চৌধুরী মহাশয়েরও তাহাই হইল। এই ব্যবসায়ে এবং অপরাপর নানাবিধ ব্যবসায়ে তিনি বহু অর্থ লোকসান দেন এবং পরিণামে দেউলিয়া পরিগণিত হইয়া অত্যন্ত মনঃকষ্টে এবং দারিদ্র্যের সহিত সংগ্রাম করিয়া তাহার শেযজীবনের অবসান হয় । ব্যবসায়ে অকৃতকাৰ্য্য হইলেও তাহার সঙ্কল্প সাধু ছিল। আইন-বাবলায়েও তাহার অসাধারণ জ্ঞান ছিল । শ্রদ্ধেয় শ্ৰীযুক্ত ভূপেন্দ্রনাথ দাস মহাশয় আনুমানিক ১৯০৬ সালে এখানে আসেন ও স্থানীয় সরকারী স্কুলে শিক্ষকতা গ্রহণ করেন। তিনি শিক্ষকতা-কাৰ্য্যে ব্যাপৃত থাকিয়াও নিজ উন্নতিকল্পে আইন অধ্যয়ন করেন এবং ১৯১৩ সাল হইতে আইন-ব্যবসায় আরম্ভ করেন । তিনি এখন ব্রহ্মদেশের ব্যবস্থাপক সভার এক জন সভ্য । ব্ৰহ্মদেশের বাঙালীদের উন্নতি এবং সুবিধার দিকে তাহার বিশেষ দৃষ্টি আছে । এই কয়েক জন মাত্র বিশিষ্ট লোকের নাম উল্লেখ করিলেও আরও অনেক বাঙালী আছেন, র্যাহীদের ব্যক্তিগত পরিচয় প্রবন্ধের আকারে দেওয়া সম্ভব নয়, কিন্তু অনেকে নানা কল্যাণকর কার্য্যে আত্মনিয়োগ করিয়াছেন । আইনজীবী বাঙালী সংখ্যায় বার জনের কম নয় । চিকিৎসা-ব্যবসায়েও জন চার-পাঁচ বাঙালী আছেন । এক জন স্থানীয় হাসপাতালের য়্যাসিষ্টাণ্ট সার্জন এবং অন্ত কয়েক জন স্বাধীন ব্যবসা করেন । স্থানীয় জেলের প্রধান ‘জেলার ও এক জন্ম:াঙালী । মিউনিসিপ্যাল আপিলে, পি ডবৃলিউ ডি আপিসে, সরকারী ইস্কুলে, পোষ্ট আপিলে, স্বাধীন ব্যবসাক্ষেত্রে, ঠিকাদারের কাজে ও অন্তান্ত নানা ক্ষেত্রে নানা কৰ্ম্ম লইয়া বাঙালী অনেক আছেন । দোকানদার, দুধওয়ালা, ধোপা, নাপিত, গৃহভৃত্য, সামপান, লঞ্চ, ও SN98R ষ্ঠামার চালক, সকল কাজেই বাঙালীর সংখ্যা এখানে খুব বেশ দেথা যায় । বাঙালী প্রতিষ্ঠানও কয়েকটি আছে । ( ১ ) বেঙ্গল স্যোখ্যাল ক্লাব, (২) বেসিন চট্টল সমিতি, (৩) বেঙ্গল ইউনিয়ন ক্লাব । এই তিনটিই বাঙালীদের প্রধান প্রতিষ্ঠান । ইহা ব্যতীত কালীবাড়ি, জগন্নাথবাড়ি, শিবমন্দিরও আছে। প্রতি-বৎসর দুর্গাপূজা-উপলক্ষে ক্লাবগুলির উদ্যোগে খুব ধুমধাম করিয়া পুজা, অভিনয়, যাত্রাগন এবং প্রতিভোজন হয়। ষ্টীমলঞ্চ এবং প্রকাও ফ্র্যাট ভাড়া করিয়া তাহার উপর প্রতিমা সাজাইয়া লইয়া অসংখ্য নরনারী কীৰ্ত্তন, গান প্রভৃতি করিতে করিতে নদীবক্ষে ঘুরিয়া বেড়ান এবং শেষে প্রতিমা বিসর্জন দেন, এ দৃশ্য অতি মনোহর । আরও একটি ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান বিশেষ উল্লেখযোগ্য। বেঙ্গল সোঙ্গাল ক্লাবের সম্পর্কে বালক-বালিকাদিগের জন্ত একটি বাল্য-সমিতি চলিতেছে । শ্রীযুক্ত সুহৃদকুমার মুখোপাধ্যায় ( স্থানীয় সরকারী স্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষক ) এবং তাহার পত্নী মুহাসিনী দেবী প্রতি-রবিবার সকালে বালক-বালিকাদিগকে লইয়া গল্প, গান, নিৰ্দ্দেযি আমোদপ্রমোদ প্রভৃতির দ্বারা মুশিক্ষা দেন। মুদুর ব্রহ্মদেশে যে-সকল বালক-বালিকার জন্ম হইয়াছে এবং এদেশেই যাহারা শিক্ষালাভ করিয়া বড় হইতেছে তাহার। বাংলা ভাষা ভাল করিয়া শিখিবার সুযোগ পায় না । বাংলা দেশের আবহাওয়া হইতে বঞ্চিত হইয় তাহারা দেশীয় পৌরাণিকীর সুমিষ্ট গল্প, ইতিহাস ইত্যাদিতেও সম্পূর্ণ অজ্ঞ । সুহৃদবাৰু এই অভাব নিজ সস্তানদের মধ্যে লক্ষ্য করিয়া তাহীদের শিক্ষার জন্ত চিন্তিত হন । পরিশেষে স্বামী-স্ত্রী মিলিয়া সকল বাঙালী সস্তানদের লুইয়া এই শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানটি গড়িয়া তুলিয়াছেন। চার-পাচ বৎসর ধরিয়া কাজটি চলিতেছে। বৎসরে দুই-তিনবার এই বালক-বালিকাদিগকে দিয়া গান, আবৃত্তি, অভিনয় ইত্যাদি করাইয়া ক্লাবের সভ্যদিগকে আনন্দান করেন। সৰ্ব্বশেষে একটি নূতন প্রতিষ্ঠানের কথা বলিব। প্রায় ত্রিশ-পয়ত্রিশ বৎসর হইতে এ-শহরে শিক্ষিত ভদ্র বাঙালীদের বাস I সকলেই প্রায় সপরিবারে বাস