পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ করলে। অখিল তার দিকে ফিরেও চাইলে না । একটা ঠেলা দিয়ে বললে—কি বলছিস্ ? স্বহৃৎ তথাপি জবাব দিতে পারলে না । জিজ্ঞাসা করলে –কি খবর ?

  • —অজ্ঞে বাবু একবার তলব দিয়েছেন।

--তলব ? নিখিল নিজে আসতে পারে নি, পেয়দা দিয়ে তলব পাঠিয়েছে ? রাগে তার শরীর থর-থর ক’রে কেপে উঠল । মনে হ’ল, এই মূহূর্বে তার ভগ্নীপতির দেওয়া চাকরি ছেড়ে দিয়ে এই বিড়ম্বনীর শিকল থেকে মুক্ত হ’তে পারলে সে বাচে । কিন্তু অসীম তার সহাশক্তি। নিজেকে প্রাণপণে সংসত ক’রে শস্তিকণ্ঠে বললে—এখন ত যেতে পারব না হারাধন । নিখিল কে বলগে, যদি সময় পাই সন্ধ্যের পর বরং বাব । হারাধন মাটিতে লাঠি ঠুকে বললে—আজ্ঞে আপনাকে সঙ্গে ক’রে নিয়ে যেতে বলেছেন । হারাধন সুহৃৎকে ভয় দেপাইবার জন্ত মাটিতে লাঠি ঠেকে নি, অভ্যাস বশে ইকেছে। কিন্তু হেং আর মুহাৎকে হারাধনকে ললিত ও লীলা ২৩৭ নিজেকে সংবরণ করতে পারলে না। লাফিয়ে উঠে বললে – হারামজাদা, যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা ! আমি কি তোর বাবুর চাকর ? যা বলগে যা বাবুকে আমি যেতে পারব না । তার দরকার থাকে সে এসে দেখা করতে পারে । অম্পিদ্ধা ! তার রাগ দেখে হারাধন ভরে পাললি। - অখিল তাড়াতাড়ি তার হাত ধ’রে বসাল । কিন্তু সুহৃদের রাগ যেন আর কিছুতে যায় না । কঁপিতে কঁপিতে বললে—সাক্ষী দেওয়ার কথা বলছিলে, দেব আমি সাক্ষী। তুমি নির্ভাবনায় থাক । অখিল অবাকু হয়ে গিয়েছিল। কিছুতে বিশ্বাস করতে পারছিল না । সন্দিগ্ধভাবে বললে—সত্যি বলছ ত ভাই ? সুইং বার-বার মাথা নেড়ে বলতে লাগল—হ্য, হ্যা সত্যি । আমি যখন কথা দিলাম, তখন তার আর নড়চড় হবে না। কিছুতে না । আমার এক কথা । আনন্দে আত্মহারা হয়ে অথিল হাতখানা বাড়িয়ে দিলে । ললিত, ও লীলা শ্ৰীনরেন্দ্রনাথ চক্ৰবৰ্ত্তী 2 ছ{ট সংসার –স্বামী আর স্ত্রী । চাকর-দাসী আছে কিন্তু অস্ত্রীয় বলুতে কেউ নেই। তা না থাক, এতে ওরা ভ}লই আছে । এমন কি ছেলেমেয়েদের অভাবও ওদের মনকে ক্ষুন্ন করতে পারে নি। সস্তান-মেহের বিলাসিত ধেমন নেই সস্তান-পালনের গুরু দায়িত্বও তেমনই নেই । ললিত ও লীলা পরস্পরকে পেয়েই সন্তুষ্ট । অন্ত হথের তাদের অবসর নেই, অর্ণকাজক্ষারও অভাব । ললিভের আয় খুব বেশ নয় কিন্তু ব্যয়ই বা তাদের এমন কি ? আর্থিক অসচ্ছলতা তাদের কোনো কালেই কষ্ট দিতে পfরে নি, স্বরং প্রায়ই কিছু কিছু সঞ্চয় হ’ত। প্রতিবাসীরা বলত, 3:দর স্বামী-স্ত্রীর এতটা মিলের কারণ আসলে হচ্ছে এইটাই। অবশু এটা নিরপেক্ষ বিচার বলা চলে না, কারণ এরা সকলেই লীলা-ললিতের ঈর্ষা করত। মধ্যে মধ্যে যেমন মান-অভিমান ও দাম্পত্যের কপট কলহ হয়ে থাকে সেদিনও তেমনই ললিত ও লীলার মধ্যে প্রবল তর্ক চলছিল—পরস্পরের মধ্যে কার ভালবাসা বেশী এই নিয়ে। তর্কের মীমাংসা চিরকাল যেমনভাবে হয়ে থাকে তেমনই ভাবে শেষ হ’ল। যুক্তি ক্রমশঃ ব্লাগ, অভিমান এমন কি আশ্রজলে পৰ্য্যস্ত গিয়ে পৌছল। অবশেষে সাব্যস্ত হ’ল এই যে দু-জনেই দু-জনকে খুব ভালবাসে । ললিত আপিস খাবার সময় বলে গেল— আমার ভালবাসার কিছু প্রমাণ ওবেলা আপিস থেকে এসে তোমায় দেব । লীলা কোন কথা বললে না, শুধু একটু হেসে তাকে বিদায় দিলে। ভাবলে—বোধ হয় নিত্যকারের বরাদ্দ অদরটা আজি মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। আসল কথা সে কিন্তু কিছুই আন্দাজ করতে পারে নি । কথাটা হচ্ছে এই—একটা পুরস্কার-প্রতিযোগিতায় লঙ্গিত