Nbro \ পুলিন বলিল—সময় ক’রে উঠতে পারি নে। রবিবারে একটা দিন ছুটি, সংসারে কাজও যেন অফুরন্ত । দু-দও ব’সে গল্প করার সময় মেলে না । রবীন হাসিয়া বলিল –সংসার এমনিই বটে। সংসারের চাবুক আছে বলেই আমরা চলি, নইলে বেতো ঘোড়ার মত এক জায়গায় গুয়েই পড়তাম। তোমরা তৰু চাকরি কর, মাস গেলে বাধা মাইনে, আর আমীদের ? —ন রবীন, তোরাই বরং সুর্থী—কারও তাবেদারী করতে হয় না, অস্বধ হ’লে কৈফিয়ৎ দিতে হয় না । —বেশ—বেশ । কিন্তু আমার সম্বন্ধে কি রকম সুনাম পাড়ায় পাড়ায় গুনছ ? পুলিন বলিল—তোমাকে যারা জানে না তারাই অনেক কিছুই ব’লবে, যারা জানে তারা শুনে মনে মনে হাসবে । —তুমি দেখছি আমার বেজায় ভক্ত। এ ভক্তির হ্রাস বোধ করি কোনো কালে হবে না ! —আশা ভ করি । বলিয়া পুলিন উঠিল । উঠিয়া বলিল—ভাল কথা, একটা গরু কিনতে হবে, একটু সন্ধান রেথ ত । ছেলেদের দুধ কিনে আর পার! शां★ नाँ ! বাড়ির মধ্যে আসিয়া রবীন বলিল—একটা উপায় যেন হবে মনে হচ্ছে। আমার এখনও কিছু মুলধন পুজি আছে দেখলুম। বউ অনিন্দিত হইয়া বলিল—পোষ্টাপিসে রেখেছ বুঝি ? কত টাকা ? —সে পুজি নয়। গঙ্কটা অনেক দিন থেকে বেচবে মনে করছি, কিন্তু খদের হয় না । খদের যদি হয় দাম ७ó ना । বউ বলিল—ওই পুজি ! পোড়াকপাল ! কার মরণ যে ওই ভাগড়ি পয়সা দিয়ে কিনবে ? —কেন যার ভক্তি আছে । মনে করছি পুলিনকে বেচবো । তার একটি গরুর দরকার । বাজে কথা মনে করিয়া বউ আর সেখানে দাড়াইল না । বৈকালে পুলিনকে ডাকিয়। রবীন বলিল –গরু কিনবে ? আমারই বাড়িতে আছে । প্রবাসনা ; SNరీ8R পুলিন বলিল—তোমার ছেলেরা দুধ খাবে না ? রবীন বলিল—পয়সা হ’লে বাঘের দুধ কিনতে মেলে, গরুর দুধ ত ছার । কিন্তু ভাই, কুড়ি টাকা দিতে হবে। একটানে কু-লের দুধ দেয় গরুটা । পুলিন বলিল—টাকার কথা পরে, কিন্তু তোমায় বঞ্চিত ক’রে ও-গঙ্ক আমি কিনবে না । রবীন বলিল—নাই যদি কেন—অন্ত জায়গায় নেচতে হবে । টাকা আমার চাই। হয়ত টাকা-পাচেক কমই হবে । ” পুলিন তীক্ষ দৃষ্টিতে রবীনের পানে চাহিল। না, রহস্ত সে করিতেছে না । বয়স রবীনের কতই বা, তবু মুখে অনেকগুলি রেখা পড়িয়াছে। মাথার চুলও যেন দুই-এক গাছি পাকিয়াছে। কৌতুকপ্রিয়তায় চোখের দৃষ্টি মোটেই চঞ্চল নহে, কেমন যেন অবসন্নতার স্তিমিত জ্যোতি । একটু থামিয়া সে বলিল—বেশ, ওই দরই ঠিক রইল । আসছে রবিবার— রবীন তাড়াতাড়ি বলিল-আজই আমার টাকা চাই, গরুও তুমি আজ নিয়ে যাও । পুলিন বলিল—টীকা আর লোক নিয়ে আমি আসছি । খানিক পরে পুলিন ফিরিয়া আসিল । রবীনের হাতে নোট দুখানি দিয়া বলিল—এই দুখেকে দেখিয়ে দাও ভাই—গরুটা নিয়ে যাক । পুলিন বাড়ির বাহিরে কাঠালতলায় দাড়াইল, থেকে লইয়া রবীন বাড়ির মধ্যে ঢুকিল । খানিক পরে গরু লইয়া দুখে চলিয়া গেল । পুলিন রবীনের সঙ্গে দেখা করিবার জন্ত সেইখানেই দাড়াইয়া ब्रहिल । এমন সময় বাড়ির ভিতর হইতে স্বামী-স্ত্রীর কথোপ কথন শোনা গেল । বউ বলিতেছে—ওমা, সত্যিই ও ভাগাড় নিয়ে গেল ! আট বিয়েনের গাই দুধ দেবে, না ছাই । রবীনের কণ্ঠস্বর—বলেছিলাম না, কিছু মুলধন পুজি আছে এখনও ? দেখলে ত । ও বিশ্বাসই ক’রতে চায় না যে, আমি কাউকে ঠকাতে পারি।
পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।