৩৭২ বহুসংখ্যক পুথির সংগ্রহ থাকিত এবং এখনও কোনকোন স্থানে আছে । মুসলমানের ভারত-বিজয়ের পর ভারতের অনেক মঠ ও মন্দির ও তৎসংলগ্ন গ্রন্থাগার বিনষ্ট হইয়াছে । সম্প্রতি নিজামের রাজ্যে ওয়াডির নিকট নাগই গ্রামে খ্ৰীষ্টীয় একাদশ শতাব্দীর দুই খানা শিলালিপি উদ্ধার হইয়াছে । তাহা হইতে জানা যার যে সেখানে একটি ঘটকীশালা বা বিদ্যালয় ( "কলেজ’ ) ছিল এৰং তৎসংলগ্ন যে গ্রন্থাগারটি ছিল তাহ এত প্রকাও যে তার জন্ত ছয় জন গ্রন্থাগারাধ্যক্ষ নিযুক্ত ছিল । আর এই গ্রন্থাগারকে ঐ শিলালিপিতে “সরস্বতী-ভাও'র” ও উহার অধ্যক্ষদিগকে “সরস্বতী-ভাণ্ডারিকা” বলা হইয়াছে। রাজপুতানার জয়সলমীর, ভাটনের প্রভৃতি স্থানে, ও গুজরাটের আহমেদাবাদ, হরাট, কাম্বে প্রভৃতি স্থানের বৰ্ত্তমান জৈন-উপাশ্রয়গুলির সংলগ্ন যে পুস্তকাগার আছে তাহাদিগকে “ভারতী-ভাণ্ডার” নাম দেওয়া হয় । ইহাদের মধ্যে কোন-কোন ভারতী-ভাণ্ডারে দশ হাজারেরও অধিক পুথি আছে। কেবল প্রাচীন ভারতে নয়, প্রাচীন আসিরিয়া, বাবিলোনিয়া, মিশর ( ইজিপ্ট ) প্রভৃতি দেশের পুৱাযুগের গ্রন্থাগারগুলি অধিকাংশই ধৰ্ম্ম-মন্দিরের অঙ্গীভূত বা সংশ্লিষ্ট ছিল । তবে ভারতে গ্রন্থাগার ও গ্রন্থ এতই পবিত্র গণ্য হইত যে এদেশে মিশরদেশের প্যাপিরাস তৃণের ন্যায়, ভূৰ্জপত্র বা তালপত্র এবং পরে তুল-নিৰ্ম্মিত তুলট কাগজ পুথির জন্ত ব্যবহৃত হইত। গ্ৰীক প্রভূতি পাশ্চাত্য দেশের ন্তীয় চৰ্ম্মে প্রস্তুত কাগজ, বা পার্চমেণ্ট বা ভেল্লম ( velium ) প্রভূতির প্রচলন ছিল না । সাধারণ পশু-চৰ্ম্ম ধৰ্ম্মসংক্রান্ত অনুষ্ঠানে অশুচিজ্ঞানে হিন্দুর পক্ষে পরিত্যাজ্য ছিল ও এখনও আছে । যদিও চীনদেশে হান-বংশীয় রাজাদের সময়, অর্থাৎ খ্ৰীষ্টপূৰ্ব্ব ২৭২ সন হইতে খ্ৰীষ্টাব্দ ২২১এর মধ্যে কষ্ঠের ofb3 stforfą (block printing sa ) eței Ggffs হয় এবং তিব্বত দেশেও তাহ প্রচলিত হয়, ভারতবর্ষে ষোড়শ খ্ৰীষ্টাব্দের পূর্কে পুস্তক-মুদ্রণ আরম্ভ হয় নাই । পোর্ত বীজের গোয়া-নগরীতে ভারতের প্রথম ছাপাখানা স্থাপিত করে । কিন্তু ১৭৭৮ খ্ৰীষ্টাব্দে বাংলা অক্ষরে সর্বপ্রথম স্ট্র প্রবাসীস্ট SNరీశ్రీశ్నీ পুস্তক হুগলীতে (চু চুড়ায় ) মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয়। ঐ পুস্তক ইংরেজ গ্রন্থকার নাথেনিয়েল ব্রাসে হালহেডের “oforswil stafá Asiodo" (Grammar of the Bengali Language ) I foi stăos aca-F "R পৰ্য্যস্ত সংস্কৃত ও বাঙ্গীলা ভাষায় হস্তাক্ষরে অনেক পুথি লিখিত হইত। এখনও হস্ত-লিখিত পুথি প্রস্তুত করা একেবারে স্থগিত হয় নাই । প্রাচীন ভারতে সাহিত্য, ইতিহাস, বিজ্ঞান, দর্শন সকলই ধৰ্ম্মের পরিধানে সজ্জিত হইত, সৰ্ব্ববিধ জ্ঞান ধৰ্ম্মের অঙ্গীভূত ছিল । কেবল, যেঞ্জন ক্ষণিকের উত্তেজন বা কৌতুহল চরিতার্থ করে, হিন্দু ঋষিগণ তাহার কোন মূল্য দিতেন না । বস্তুতঃ গ্রন্থাগার-প্রতিষ্ঠা, বৃক্ষ বা জলাশয় প্রতিষ্ঠা অপেক্ষা কোনও অংশে কম পুণ্য কৰ্ম্ম নয়। জলাশয় কিংবা ফলবান বৃক্ষ আমাদের শারীরিক ক্ষুৎ-পিপাসা মোচন করে ও বৃক্ষচ্ছায়া ক্লাস্ত দেহের শ্রীস্তি দূর করে। কিন্তু গ্রন্থাগার দেবালয়ের ন্তায় আমাদের হৃদয়ের ও আত্মার ক্ষুৎ-পিপাসা মোচনে সাহায্য করে ও শোকতাপান্বিত হৃদয়ে সাস্তুনা আনয়ন করে | সাহিত্যচর্চা যে নীরস জীবনকে সরস করে এ-কথার যাথার্থ অবস্থা অনেকেই স্ব-স্ব জীবনে অনুভব করিয়াছেন । ইংরেজ সাহিত্যিক ফ্রেডরিক হ্যারিসন যথার্থ কথাই বলিয়াছেন যে সাহিত্যের ভিতর যে কবিত্ব ও ভাবরসের অংশ আছে তাঁহা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে নিত্য ব্যবহারের জন্ত বিশেষ প্রয়োজনীয় । “ I put the poetic and emotional side of literature as the most needed for daily use.” বাঙালীর গৌরবস্থল কবিশিরোমণি মাইকেল মধুসূদনও বলিয়াছেন,— * "এ ধরার কৰ্ম্মভার মন-বেদনিলে, কাল্প কল্পপদ্মম্পশে ঘুচে সে বেদন বরদার দয়া সম ? হাত বুলাইলে জননী, ব্যথিত দেহে सृ]क्ष gकोक्ष क्षएक ?' এ কেবল দার্শনিক, সাহিত্যিক বা কবির উক্তি নয়। এই মৰ্ম্ম স্বপ্রসিদ্ধ বৈজ্ঞানিক পণ্ডিত স্তর জন হারসেলও বলিয়াছেন,—
পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪১২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।