পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

అఏళి রাগাইবার, অপদস্থ করিবার নিত্যনুতন ফী বাহির করিত। ঝগড়া হইলে অরুণকে মধ্যস্থ হইয়া মিটমাট করিয়া দিত হইত। জয়স্তের সহিত অরুণের যোগ শিথিল হইয়া আসিতেছিল ৷ জয়ন্তু কেমন বদলাইয়া গিয়াছে । তাহার সহজ ভাব, সরল বেশভূষা নাই। তাহার অত্যুগ্র কবিয়ানা অরুণের ভাল লাগিত না । জয়স্তের কয়েকটি কবিতা একটি খ্যাতনামা মাসিক পত্রিকায় প্রত্যাখ্যাত: হইয়া এক অখ্যাতনামা পত্রিকায় প্রকাশিত হইয়াছে। ইহাতে জয়ন্ত যেমন ক্ষুব্ধ তেমনই গৰ্ব্বিত। সে বাস্তবের কবি, ভবিষ্যৎ যুগের অগ্রদূত, সেজন্ত আজ সে প্রত্যাখ্যাত হইয়াছে । অরুণ বলিয়াছিল, তোমার কবিতায় বাস্তব কোথায় ? তুমি যত খুশী কবিতা লেখ, কিন্তু এখন ছাপিও না । অরুণের মত শুনিয়া জয়ন্ত শিশিরের উপর ক্রুদ্ধ হইয়া উঠিল। সে স্থির করিল শিশির সেনের সহিত মিশিয়াই অরুণের এরূপ ভাবাস্তর হইয়াছ ; অরুণের মত শিশিরের মতেরই প্রতিধ্বনি । জয়স্তের কবিতাগুলি অধিকাংশই নারী-প্রেমের কবিতা ; তরুণ প্রেমিক-অস্তরের তপ্তবাষ্পভরা বুদ্ধ,দরাশি, তাহাতে আবেগের ফেনিলতা ও অলস কল্পনার প্রাধান্ত আছে কিন্তু রসাত্মক সৌন্দৰ্য্য-রূপ নাই। মধ্যে মধ্যে নারীদেহের রূপবর্ণনা আছে। জয়স্তের ধারণ, এই দৈহিক সৌনর্য্য বর্ণনাই বাস্তব, আধুনিক । জয়স্তের ইচ্ছা, অরুণ কবিতাগুলির প্রশংসা করিয়া তাহার কবি-যশ চারিদিকে প্রচার করে । শিশিরের ঘরে অঙ্কণ ‘সবুজপত্র’ হইতে "ঘরে বাহিরে’ পড়িতেছিল, কতকগুলি মাসিক পত্রিকা ও একটি মোটা খাতা হাতে করিয়া জয়ন্ত অগিল, যেন যোদ্ধার বেশ । - উচ্চস্বরে সে বলিল—অঙ্কণ, আমার নতুন কবিতাগুলো পড়েছিল, সবাই খুব প্রশংসা করছে। দেখ, ওই ফুলের চাষ, ভাবের রঙীন ফানুষ-ওড়ান আর চলবে না ; এটা বস্তুতন্ত্রর যুগ, সন্দ্বীপ হচ্ছে এ যুগের হোতা । শিশির, তোমার কি মনে হয় ? শিশির গম্ভীর ভাবে বলিঙ্গ—তোমার কবিতা আমি প্রবাসী S©8२ ভাল ক’রে পড়েছি । আমার মনে হয় ও বাস্তব বা নবযুগের কবিতা নয়। তুমি রোমাটিক ডেকাডেণ্ট, । হজয়ের তাপ ও আক্ষে:পর সঙ্গে নারীর দেহরূপ বর্ণনা করলেই বাস্তব ड्श्व न1 ।। —আমি ডেকাডেণ্ট, হাসালে । আমার প্রতি কবিতা বাস্তব জীবনের গভীর অভিজ্ঞতা হ’তে— অরুণ মৃদুস্বরে বলিল—অভিজ্ঞতা নয়, বল কাল্পনিক অনুভূতি। আমি জানি, নারী ও প্রেম সম্বন্ধে তোমার কি অভিজ্ঞতা আছে । . জয়ন্ত রাগিয়া উঠিল। অরুণ তাহাকে পরিহাস করিতেছে! ব্যঙ্গস্বরে সে বলিল—না, তুমি ভাব শুধু, তোমারই আছে—অজয়ের বোনের সঙ্গে প্লেটোনিক প্রেম ক’রে, যদি ভাব— অরুণের মুক্তি দেখিয়া জয়ন্ত চুপ করিল। লজ্জায় অরুণের মুখ আরক্ত হইয় উঠিয়াছে। ক্রোধে কঁাপিতে কঁাপিতে সে দাড়াইয়া উঠিল । সজোরে জয়স্তের গণ্ডে করাঘাত করিতে ইচ্ছা হইল। আপনাকে দমন করিয়া অরুণ স্থির হক্টয়া বসিল, তিৰ স্বরে বলিল—দেখ জয়ন্ত, তোমার ওই রাবিশ কবিতার আলোচনা করবার আমার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই ; তুমি তোমার স্তাবক-দলের নিকট *N9 | একটি সিগারেট ধরাইয়া অরুণ জোরে টানিতে লাগিল । --রাবিশ কবিতা ! এ শিশির সেন তোমার মাথা খেয়েছে । আচ্ছা ! কবিতার খাতা ও পত্রিকাগুলি বগলে পুরিয়া জয়স্ত হন হন করিয়া চলিয়া গেল। - রাত্রে জয়ন্ত অরুণের বাড়িতে আসিয়াছিল । ব্যথিত স্বরে তাহার নিকট ক্ষমাভিক্ষণ করিয়াছে, তাহার হাত ধরিয়া কাদিয়া ফেলিয়াছে। দুই বন্ধুর আবার মিলন হইয়াছে । শরৎ-প্রভাতের দিকে চাৰিয়া অরুণ গত সন্ধ্যার ঘটনাটি ভাবিতেছিল । বন্ধুত্বের স্বত্র অতি স্বল্প তত্ত্ব দিয়া রচিত একবার কোথাও ছি*ড়িয়া গেলে, তাহাকে মোট তারি দিয়া জোড়া যায় না । জয়স্তের সহিত হয়ত সে আর পূর্কের মত সহজ সর