পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Woo শ্ৰীচন্দ্রমাধবের কথা বলিলাম । ১৩৪২ এইবার ইছাপুর গোস্বামী-বাড়িতে আর যে দুইটি মূৰ্ত্তি আছে, তাহার কথা বলিব। একটি মূৰ্ত্তি বালগোপালের । নিকল কালে কষ্টিপাথরে নিৰ্ম্মিত । এইরূপ মূৰ্ত্তি অসাধারণ নহে। বাংল দেশের নাম স্থানেই এইরূপ মূৰ্ত্তি দেখিতে পাওয়া যায়। ইহাকে বংশীধারী শ্ৰীগোপাল মৃষ্টি বলা যাচতে পারে। মূৰ্ছিটির বয়স দেড় শত হইতে দুষ্ট শত বৎসরের মধ্যে, এইরূপ অল্পমান করা যায় । অপর মূর্তিটির সম্বন্ধে নিঃসন্দেহরূপে কোন কথা বলা কঠিন । এই মূর্তিটির ন্যায় আরও অনেকগুলি মূৰ্ত্তি একটি প্রাচীন ইষ্টকনিৰ্ম্মিত মন্দিরের সহিত সংলগ্ন ছিল । ইছাপুর গ্রামনিবাসী শ্ৰীমান পবিত্ৰকুমার গোস্বামী আমাকে বলিয়াছেন যে, মন্দিরটি ভাঙিয়া ফেলিবার সময় অনেক মূৰ্ত্তি নষ্ট করিয়া ফেলা হইয়াছে। এতদ্ব্যতীত সেই মন্দিরটির গায়ে আরও অনেক পৌরাণিক চিত্র খোদিত ছিল । এইবার মূর্তিটির দিকে লক্ষ্য করুন । আমরা দেখিতেছি—একজন শাসন করিতেছেন । কে এই শিশু ? সম্ভবতঃ ম-যশোদা বালক শ্ৰীকৃষ্ণকে তাহার দুষ্টামির জন্য শাসন করিতে ব্যাকুল হইয়া কাপড় দিয়া বাধিতে চলিয়াছেন । তিনি এক হাতে বস্ত্রাঞ্চল ধারণ করিয়াছেন, অপর হাত দিয়া শিশুর হাতটি চাপিয় ধরিয়াছেন । মা-যশোদার অলঙ্কার, সাজসজ্জা, কাপড় পরিবার ভঙ্গী সকলই একাদশ শতাব্দীর অন্যান্ত শ্ৰমূৰ্ত্তির সহিত সাদৃশ্বব্যঞ্জক। শিশুর মাথায় ঝুটি বঁধি, ডান হাতে খেলার গদা । মা-যশোদার কর্ণভূষণ, কেশবিন্যাস এবং মাথার অলঙ্কারের প্রতি লক্ষ্য করুন। আর লক্ষ্য করুন তাহার কাপড়খানার প্রতি । কাপড় পরিবার রীতি, বাঙালী মেয়েদেরই মত। গলার হার, হাতের বাজু ও চুড়ি, কটিদেশের ভূষণ"-এ যুগেও অচল নয়। এই মূৰ্ত্তির চক্ষু, নাসিক, গণ্ডদেশ, চিবুক প্রভৃতি তক্ষণ-শিল্পের মহিলা একটি শিশুকে লোহারপুকুর- ইছাপুর অনুপম নিদর্শন । মুখের ভিতর লাবণ্যত্র ঢল ঢল করিতেছে, মাতৃস্নেহের অপূৰ্ব্ব দীপ্তি প্রকাশিত হইয়াছে। শ্ৰীচন্দ্রমাধব মূৰ্ত্তি ও বালগোপাল মূর্তিটি পুকুরের জলে ভাসিয়া উঠিয়াছিল বলিয়া গ্রামবাসীরা বলেন এবং একট। কিছু অলৌকিকত্বের আরোপ করিতে যাইতেছেন। আমি তাঙ্গর বিরোধী । পুরাতন কাগজপত্র ও দলিল ইত্যাদি হইতে জানিতে পারা যায় যে, একবার বিক্রমপুরে কাজীর হাঙ্গামা নামে একটি হাঙ্গাম হয় । সে-সময়ে অনেকেই নিজ নিজ বাড়ির বিগ্রহ পুষ্করিণী, দীঘি প্রভৃতি জলাশয়ে কিংবা গ্রামাস্তরে লইয়। রাখিয়া দিয়াছিলেন, হাঙ্গামা মিটিয়৷ গেলে পর পুনরায় মূৰ্ত্তি তুলিয়া আনিয়া পূজা করেন । এই সমুদয় মূৰ্ত্তির অধিকার লইয়া সময় সময় গোলযোগ হইত। এইরূপ একটি গোলযোগের প্রমাণ-স্বরূপ আমি মৎপ্রণীত “বিক্রমপুরের ইতিহাসে” দুই জন সাক্ষীর লিখিত সাক্ষ্যের প্রতিলিপি প্রকাশ করিয়াছিলাম। এই স্থানে তাহার একটির প্রতিলিপি পুনরায় প্রকাশ করিলাম, তাহা পড়িলেই আমার অনুমানের যথার্থ উপলব্ধ হইবে। “এহি মত দেখছি রুক্লিকান্ত ঠাকুর ও জয়দেব ঠাকুর ও মণি ঠাকুর এই তিন জন তিন হিসা করিয়া ঈশ্বর সেবা করিছেন * * * বাসইল গ্রামে সেবাতে অর্ণত্র থাকিয়া