পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

9אמר* মনে মনে বলিলাম ঃ ভাগ্যিস এমন অঙ্কমনস্ক হইয় চলিতেছিলাম। সেই এক দিন, আর এই এক দিন । এমন করিয়া না-পড়িলে তো রাখুদির দেখা পাইতাম না। গাড়ী চলিতেছে ; কতদিন কাদিতে কঁাদিতে রাণুদিকে ভাকিয়াছি, অথচ এমন পাশে বসিয়াও রাণুদি'র মুখের দিকে চাহিতে পারিতেছি না-কত কথা বলিব বলিয়া ঠিক করিয়া রাখিয়াছিলাম—কিন্তু এখন কথা ফুটিতেছে না কেন ? রাশুদি কত কথা জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল, ই. ই| করিয়া উত্তর দিতে লাগিলাম । রাগুদি বলিল—বাড়িতে বাজার রেখে চল তুষ্ট, আমার সঙ্গে যাবি, আমার বাড়ি -- গলির মোড়ের মাথায় মটর দাড়াইল। আমি এক ছুটে বাড়িতে বাজার ফেলিয়া দিয়া আবার আসিয়া গাড়ীতে উঠিলাম। একদিনে যেন আমার অনেক পরিবর্তন হষ্টয় গিয়াছে ; গাড়ী ছুটিতে ছুটিতে চলিয়াছে। রাস্তার পর রাস্ত--রাস্তার লোকজন সবাই সসম্বমে রাণুদি'র গাড়ীকে পথ করিয়া দিতেছে। নিজের গৰ্ব্ব হইতে লাগিল, রাণুদি'র পাশে বসিয়া রাণুদি'র মোটরে চড়িয়া রাণুদি'র বাড়িতে চলিয়াছি—আমার সমান কে ? প্রকাণ্ড এক বাড়ির সম্মুখে আসিয়া গাড়ী দাড়াইল । লোকজন যে যেখানে ছিল সান্ত হইয়া পড়িল ; চাকর-বাকর দরোয়ান সবাই রাণুদিকে দেখিয়া মাথা নীচ করিয়া সেলাম করিল। সেদিকে না চাহিয়া রাখুদি আমার হাত ধরিয়া বলিল –আয়— কত ঘর পার হইয়া শেষে এক জায়গায় গিয়া থামিতে হইল । , রাগুদি বলিল—বোস্– চক্চক্ করিতেছে গদি-মাটা চেয়ার, তাহাতে বসিয়াছি। বিদিত দৃষ্টিতে চাহিয়া দেখি : বিচিত্র • জিনিষপত্রের সমারোহ ; মাথার উপরে পাখা, আলো দেয়ালের ছবি, আলমারীর পুতুল, টেবিলের ফুল-—সবষ্ট বিচিত্র। বিস্ময়ে আমার দু-চোখ ভরিয়া উঠিল । , রাগুদি সাজ-পোষাক বদলাইয়া আসিয়াছে। বলিল— হাত-পা ধুৰি চক্ৰ- ... হাত-পা ধুইয়া আসিলামশ তার পর জালিল থাবার। প্ৰৰণসী ১৯oডছ রাখুদি'র সামনে বসিয়া খাৰার মুখে তুলিতে কেমন লঙ্ক করে । রাগুদি বুঝিতে পারিয়াছে। বলিল—দিদির সামনে লঙ্গ কিসের?--মুখে তোল— পাইতে থাইতে রাখুদি কত কথা বলিতে লাগিল : —চেহারা তোর ভারি রোগী হ’য়ে গেছে, যে-বাড়িতে আছিস্ ওরা বুঝি খুব খাটায় ? ওদের বাড়িতে যদি তোর থাকতে কষ্ট হয়, তবে আমার এখানে চলে আসবি, এখানে থাকবি খাবি-দাবি–বেশ তো বুঝলি ?...হুঁ্য, তুই আবার বুঝবি, তুই যা বোকা-এক পা চলতে গেলে দু-বার হোচচ্‌ খাস্ ! আর দেখ লেখাপড়া করবি ভাল ক'রে ; লেপাপড় না শিখলে কেউ ভালবাসবে না, সবাই মুখ্য বলবে—মন দিয়ে লেখাপড়া করবি,--আর ভাল কথা, তুই ভগবানকে ডাকিস্ তো ? ডাকিস্ না ? কি বোকা ছেলে রে! ডাকবি— রোজ ভগবানকে একবার করে ডাকৃবি ; বলবি ; হে ভগবান, আমায় ভাল কর, আমি যেন সৎপথে থাকি, সত্যি কথা বলি !..বলবি এই সব কথা, বুঝলি ? এই দেথনা টাকাই বল, কড়িষ্ট বল, এই সব, ইচ্ছে করলে একদিনে ভগবান কেড়ে নিতে পারে—পারে না ? আরও কি কি কথা রাণুদি বলিয় গেল, সব মনে নাই ! কি একটা কাজে রাণুদি ঘর হইতে বাহির হইয়া গিয়াছে। আমি এটা-ওট। দেপিতে দেখিতে ঘরের বাহিরে আসিলাম । অফুরন্ত ঐশ্বৰ্য্য চারি দিকে—একবার দেখিলে কৌতুহল মিটে না ! প্রকাণ্ড বাড়ি কোনদিকে চলিতেছি ঠিক নাই ! এ-সিড়ি দিয়া নামিয়, ও সিঁড়ি দিয়া উঠিলাম। ঘুরিতে ঘুরিতে কত ঘর পার হইয়া আসিয়াছি। বারান্দা দিয়া বেড়াইতেছি-সামনে বাগান। ফুল তুলিতে যাইতেছিলাম— উপরে চাহিয়া দেখি ; একটা পাখী খাঁচার ভিতর বসিয়া আছে। চমৎকার পার্থীটি—লাল দেহের রং—পার্থীর রঞ্জীন্‌ লেজটি খাচার বাহিরে পর্য্যন্ত আসিয়া পৌছিয়াছে ! কি যে কৌতুহল হইল, আস্তে আস্তে অতি সপ্তপণে লেজ ধরিয়া টান দিয়াছি। টানিতেই পার্থীটি কর্কশ স্কুরে ক্যাঃ-ক্যাঃ করিয়া ডাকিতে স্থরু করিয়াছে। বেঙ্গ মজা লাগিল। কিন্তু হঠাৎ পিছন হইতে কে ছুটিা আসি৷ থপ, করিয়া আমার হাত ধরিয়া ফেলিল । -